ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ২ ১৪৩১

সীমান্ত হত্যার প্রতিবাদে জাবিতে মশাল মিছিল

জাবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:০৩, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪  
সীমান্ত হত্যার প্রতিবাদে জাবিতে মশাল মিছিল

সীমান্তে বাংলাদেশী স্কুলছাত্রী স্বর্ণা দাস হত্যা ও ভারতীয় আধিপত্যবাদের প্রতিবাদের মশাল মিছিল করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ‘আধিপত্যবাদ বিরোধী মঞ্চ’র ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনার এলাকা থেকে মশাল মিছিলটি শুরু হয়। মিছিলটি ট্রান্সপোর্ট চত্ত্বর হয়ে শহিদ সালাম-বরকত হল হয়ে জাবির বটতলায় এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়।

এ সময় মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘জাহাঙ্গীরনগরে চলবে না, ভারতীয় প্রকল্প’, ‘মোদির দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে’, ‘সীমান্তে যদি মানুষ মরে, সেভেন সিস্টার্স থাকবে না রে’, ‘সীমান্তে যদি মানুষ মরে, চিকেন নেক থাকবে না রে’, ‘মোদীর গদীতে, আগুন জ্বালো একসাথে’, ‘আরএসএসের বিরূদ্ধে, আগুন জ্বালো একসাথে’, ‘ভারতীয় প্রকল্প, চলবে না চলবে না’, ‘বিজেপির আগ্রাসন, চলবে না চলবে না’, ‘সাংস্কৃতিক আগ্রাসন, চলবে না চলবে না’সহ নানা স্লোগান দেন।

সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী নজরুল ইসলাম নাইমের সঞ্চালনায় বক্তারা ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখেন। তাদের বক্তব্যে ভারতীয় আগ্রাসন, আধিপত্যবাদ, সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক আগ্রাসন উঠে আসে। এ ছাড়া দু’দেশের মধ্যে যে সব দ্বিপাক্ষিক চুক্তি রয়েছে সেগুলো যেন দু’পক্ষের সমন্বয়ে হয় এবং ভারত যেন আধিপত্য বিস্তার করতে না পারে সেগুলো তুলে ধরা হয়।

নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শোয়াইব হাসান বলেন, যদি ন্যূনতম কোন বন্ধুত্বের আকাঙ্ক্ষা থাকে, তাহলে সীমান্তে হত্যা বন্ধ করতে হবে। যে সব বিএসএফ এ সীমান্ত হত্যার সঙ্গে জড়িত তাদের শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে হবে। সীমান্তে হত্যার বিষয়ে বাংলাদেশকে শক্ত অবস্থান নিতে হবে।

আহসান লাবীব বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের বিষফোঁড়া ইসরায়েল। তারা মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি বিনষ্ট করেছে। তেমনি উপমহাদেশের একটি বিষফোঁড়া রাষ্ট্র হলো ভারত। আমাদের দেশে ১৫ বছর যে আওয়ামী সরকার ক্ষমতায় ছিল, তারা কখনো সীমান্ত হত্যার বিচার চায়নি। ভারতের তাবেদার হাসিনা সরকার সীমান্ত হত্যার বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। অন্তর্বতীকালীন সরকারের কাছে আমাদের আবেদন, আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে এ সীমান্ত হত্যা বন্ধ করতে হবে। 

তিনি আরও বলেন, ভারত আমাদেরকে যে রাজনৈতিক আগ্রাসন করার চেষ্টা করে, সেগুলো বন্ধ করতে হবে। বিজেপির আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আমাদের আওয়াজ বন্ধ হবে না। এছাড়া ভারত ছাড়াও অন্য যে কোনো দেশ আমাদের উপর আধিপত্য বিরাজ করতে চাইলে আমরা মেনে নিব না।

আধিপত্যবাদ বিরোধী মঞ্চের আহ্বায়ক আনজুম শাহরিয়ার বলেন, গত ২০২১ সালে ১৮ জন, ২০২২ সালে ২৩ জন, ২০২৩ সালে ৩১ জনকে হত্যা করা হয়েছে সীমান্তে। ২০০৯ সাল থেকে প্রায় ৬০০ এর অধিক মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা দেখেছি কিছুদিন আগেই আমাদের দেশের ২০টি জেলাকে বন্যার মাধ্যমে ডুবিয়ে দেয়া হয়েছে। এর কিছুদিন পরেই আমরা দেখেছি সীমান্তে স্বর্ণা দাসকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা আওয়ামী সরকারের সময়ের কোনো হত্যার বিচার পাইনি। এ ধরনের আগ্রাসন আমাদের দেশে চলতে থাকলে আমরা বসে থাকবো না। এগুলো সুষ্ঠু বিচার দাবির করছি।

উল্লেখ্য, গত রোববার (১ সেপ্টেম্বর) মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায় বিএসএফ স্কুলছাত্রী স্বর্ণা দাসকে হত্যার ৪৫ ঘণ্টা পর মরদেহ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করে।

নিহত স্বর্ণা দাস (১৬) মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়নের কালনীগড় গ্রামের পরেন্দ্র দাসের মেয়ে। সে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ছিল।

/আহসান/মেহেদী/


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়