নম্বর জালিয়াতির অভিযোগ: এখনও বহাল তবিয়তে বেরোবির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক
বেরোবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম
অভিযুক্ত বেরোবি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. তানজিউল ইসলাম জীবন
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মো. তানজিউল ইসলাম জীবনের বিরুদ্ধে পরীক্ষার নম্বর জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। তবে অভিযোগের সত্যতা মিললেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যবস্থা গ্রহণে গড়িমসি করছে বলে জানা গেছে। ফলে এখনও বহাল তবিয়তেই রয়ে গেছেন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তানজিউল।
গত ১৩ এপ্রিল রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মো. তানজিউল ইসলাম জীবন এবং একই বিভাগের এক ছাত্রীর কণ্ঠ সদৃশ কথোপকথনের তিনটি অডিও ক্লিপ ফাঁস ছড়িয়ে পড়ে। ফাঁস হওয়া অডিওতে ব্যক্তিগত সম্পর্কের জেরে ওই ছাত্রীকে নম্বর বাড়িয়ে্ দেওয়ার কথা বলেন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক।
ফাঁস হওয়া অডিও ক্লিপে শোনা যায়, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ওই ছাত্রীকে বলেন, তাকে ৩.১৬ রেজাল্ট থেকে ৩.৭০ করে দিয়েছেন এবং শিখিয়ে দিচ্ছেন কেউ জিজ্ঞাসা করলে কি বলতে হবে। তিনি ওই ছাত্রীকে বলেন, “তুমি প্রথমে চাইছিলা ‘স্যার আমাকে ফার্স্ট করে দেন।’ আমি দিতে পারতাম। আজকে কি জবাবটা দিতাম?” তিনি আরো বলেন, “একদম সাইলেন্ট।” জবাবে ওই ছাত্রী বলেন, “আমি চুপচাপ আছি।”
ব্যক্তিগত সম্পর্কের জেরে ছাত্রীর নম্বর বাড়িয়ে দেওয়ার অডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে-বাইরে ব্যাপক সমালোচনা তৈরি হয়।
তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে বলে অভিযোগ করছেন সংশ্লিষ্টরা। কেউ কেউ মনে করছেন বিষয়টিকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার জন্যই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তদন্ত করতে চাচ্ছে না।
ছড়িয়ে পড়া অডিও ক্লিপে সাজিয়া করিম নামে এক শিক্ষার্থী মন্তব্য করেছেন, “ঘাড়ত্যাড়া টিচার মানা যায়, কিন্তু চরিত্রহীন মানা যায় না। এই ব্যাটা যদি টিচার থেকে যায়, তাহলে তো এরকম ঘটনা আরো ঘটবে।”
জাহিরুল ইসলাম নামে এক শিক্ষার্থী মন্তব্য করেন, “রক্ষকই যদি হয় ভক্ষক, তাহলে কিছু বলার অপেক্ষা রাখে না। দ্রুত তদন্ত কমিটি গঠন করে সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।”
অভিযুক্ত বেরোবি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মো. তানজিউল ইসলাম জীবনকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, “এটি নিয়ে বিভাগে সব শিক্ষার্থীসহ বসা হবে। সে পযন্ত অপেক্ষা করেন।”
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক শওকাত আলী বলেন, “এসব বিষয়ে আমার জিরো টলারেন্স। এটি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কোনো দপ্তরে এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/সাজ্জাদ/মেহেদী