ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৪ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

আমার মা-ই সেরা এবং শ্রেষ্ঠ

অন্তরা সরকার || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৩১, ১১ মে ২০২৫  
আমার মা-ই সেরা এবং শ্রেষ্ঠ

প্রত্যেক সন্তানের কাছেই তার মা শ্রেষ্ঠ, আমার ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম নয়। তবে আমার মা শ্রেষ্ঠ হওয়ার জন্য বিশেষত্ব রয়েছে, ছোটবেলা থেকেই মা সবসময় ভালোটা দিয়ে গেছেন। তার শখের জিনিসগুলো কোনো ‘যদি-কিন্তু’ ছাড়াই দিয়ে দিয়েছেন।

যখন বাসায় ছিলাম, কলেজে যাওয়ার সময় মা মুখে খাবার তুলে দিতেন। কলেজ থেকে এসে পেতাম মুখের সামনে গরম খাবার। এখন বাসার বাইরে থাকি, নিজেকেই রান্না করে খেতে হয়। তীব্র ক্ষুধা নিয়ে ভার্সিটি থেকে ফিরে রান্না বসাই আর ভাবি, মা কত কষ্ট করেন; সারাদিন তার কেটে যায় চুলার পাশে। স্বামী-সন্তান যা ভালো খায়, সেসব খাবারের প্রত্যেকটা তিনি রান্না করেন, তীব্র গরমেও তার ক্লান্তি নেই।

আরো পড়ুন:

আমি যখন প্রথমবার বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে ব্যর্থ হলাম, তখন মা-ই আমার ঢাল হয়ে পাশে ছিলেন। কত মানুষের কত কথা, কত হাসি-তামাশা! সেসব আমার কানে আসলে কষ্ট পাব, তাই মা সেসব কথা সেখানেই রেখে এসেছেন।

মায়ের অনুপ্রেরণা থেকেই দ্বিতীয়বার পরীক্ষায় বসলাম। লজ্জা, হতাশা এবং অনুশোচনা থেকে কাউকে জানাইনি দ্বিতীয়বার পরীক্ষায় বসার কথা। একই কারণে বাবার থেকে ফরম পূরণের টাকা নিতেও লজ্জা লাগত। ভর্তি পরীক্ষার প্রত্যেকটা ফরমের টাকা মা দিয়েছেন, বাসায় বিক্রি করা এক কেজি মিষ্টি অথবা ছানা বিক্রি করে সেই টাকা জমিয়ে তিনি আমাকে দিয়েছেন।

এরপর যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছি, মায়ের চোখে মুখে ফুটে উঠেছে হাসি। মা-ই তো আমার প্রথম শিক্ষক। তাই আমার চেয়েও মায়ের অর্জন বেশি। আমি যেকোনো সমস্যায়, প্রয়োজনে মাকে আগে কল দেই, যদিও আর্থিক ব্যাপারটা বাবা দেখেন। মাকে কল দিয়ে আমি আমার সব দুঃখ-কষ্ট নির্দ্বিধায় বলতে পারি। আমার জীবনে যত ঝড়-তুফান আসে, সব সামলে নেন মা।

মাকে ছাড়া আমার বিশ্ববিদ্যালয় জীবন অনেক পানসে মনে হয়। আমি আমার ভালোলাগা-মন্দলাগাগুলো কারো সঙ্গে ভাগ করতে পারি না। মা সারাজীবন কষ্ট করে যাচ্ছেন আমাদের জন্য, আমাদের পরিবারের জন্য।

কতকিছু ত্যাগ স্বীকার করেও তিনি ঠাঁয় দাঁড়িয়ে আছেন স্বামী-সন্তানের জন্য। আমার মা একজন সেরা শিক্ষক, সেরা ডাক্তার এবং সেরা ফ্যাশন ডিজাইনার। ছোট থেকে আমাকে শিক্ষাদান করেছেন, অসুস্থ হলে সারিয়ে তুলেছেন এবং সব জামাকাপড় মা নিজের চিন্তাভাবনায় নকশা করে বানিয়েছেন। তাই আমার মা-ই সেরা এবং শ্রেষ্ঠ। 

লেখক: শিক্ষার্থী, প্রথম বর্ষ, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

ঢাকা/মেহেদী

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়