ঢাকা     সোমবার   ১৬ জুন ২০২৫ ||  আষাঢ় ২ ১৪৩২

ঢাবি শিক্ষার্থী সাম্য হত্যার বিচার দাবিতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ

ক্যাম্পাস ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:২৯, ১৪ মে ২০২৫   আপডেট: ২১:১৭, ১৪ মে ২০২৫
ঢাবি শিক্ষার্থী সাম্য হত্যার বিচার দাবিতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ছাত্রদল

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী ও স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার প্রতিবাদ ও খুনীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন ছাত্রদলের নেতাকর্মী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (১৪ মে) বিভিন্ন সময়ে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মী ও শিক্ষার্থীরা পৃথকভাবে প্রতিবাদী কর্মসূচি পালন করেন। রাইজিংবিডির সংবাদদাতাদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত-

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি)

আরো পড়ুন:

বুধবার (১৪ মে) দুপুর ১টার দিকে শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার প্রতিবাদ ও খুনীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্রদল। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ ভবন থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক ও একাডেমিক ভবন প্রদক্ষিণ করে প্রশাসন ভবন চত্বরে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়।

মিছিলে ‘আমার ভাই কবরে, খুনী কেন বাইরে’, ‘আমার ভাই মরলো কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘খুন হয়েছে আমার ভাই, ঘরে থাকার সময় নাই’, ‘আমাদের সংগ্রাম, চলছেই চলবে’, ‘ছাত্রদলের সংগ্রাম, চলছেই চলবে’ ইত্যাদি শ্লোগান দেন নেতাকর্মীরা।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম, যুগ্ম-আহ্বায়ক আনোয়ার পারভেজ, আবু দাউদ, আহসান হাবীব, আনারুল ইসলাম, রোকন উদ্দিন, মনিরুল ইসলাম, সদস্য সাব্বির হোসেন, রাফিজ উদ্দিন, নুর উদ্দিন,সাক্ষর , উল্লাস হোসেন, রুকনুজ্জামান, আসাদ তৌফিক, আলামিন, রিফাত, তৌহিদুল, উৎস, আলী, রিয়াজ, মামুন, রায়হান, লিখন, তাপস প্রমুখ ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, জুলাই আগস্টের আন্দোলনে হাজার হাজার ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা আন্দোলন করেছেন। অনেক নেতাকর্মী শহীদ হয়েছেন। ৫ আগস্টের পর সব জায়গায় ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা খুনের শিকার হচ্ছেন। কিন্তু অন্য কোনো দলের নেতাকর্মীরা তো খুন হচ্ছে না। ছাত্রদলের রক্ত খুনীদের কাছে এত মজা কেন।

তারা বলেন, এত হত্যার পরও বর্তমান সরকার দৃষ্টান্তমূলক কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। প্রশাসন কেনো এসব জায়গায় চুপ থাকে। আমাদের ভাই সাম্য হত্যার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই। অতিদ্রুত এই হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করতে হবে। সরকার যদি এর বিচার করতে না পারে, তাহলে তাদের পদত্যাগ করা উচিত। নিরাপত্তার ব্যর্থতার দায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রক্টরকেও পদত্যাগ করা উচিত।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি)

বুধবার (১৪ মে) বিকাল সাড়ে ৫টায় ঢাবি শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার প্রতিবাদে এবং ঢাবি উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে রাবি শাখা ছাত্রদল।

দলীয় টেন্ট থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি নিয়ে ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলা প্রদক্ষিণ করে জোহা চত্বরে এসে সমাবেশ করে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।

মিছিলে তারা ‘বিচার বিচার বিচার চাই, সাম্য হত্যার বিচার চাই’, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’, ‘আমার ভাই মরলো কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘ছাত্রদলের অঙ্গীকার, নিরাপদ ক্যাম্পাস চাই’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।

অন্যদিকে, সাম্য হত্যার প্রতিবাদে ও নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে রাবির সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বিকেল সাড়ে ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবন সংলগ্ন প্যারিস রোডে এ বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তারা।

বিক্ষোভ সমাবেশে রাবি সাবেক সমন্বয়ক ফাহিম রেজা, মেহেদী সজিব প্রমুখ বক্তব্য দেন।

গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (গোবিপ্রবি)

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে সাম্য হত্যার দ্রুত বিচার কর্যকর করার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন গোবিপ্রবি শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না হয়, সেজন্য দেশের প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান। 
মানববন্ধনে গোবিপ্রবি ছাত্রদলের সভাপতি দুর্জয় শুভ বলেন, “আমরা এখানে এসেছি সাম্য হত্যার বিচার চাইতে। এক মাসে আগেও আমরা পারভেজ হত্যার বিচার চাইতে এসেছিলাম। কেন ছাত্রলকে টার্গেট করা হচ্ছে? ইন্টেরিম সরকারকে বলতে চাই আপনারা ছাত্রদলকে প্রতিপক্ষ বানাবেন না।”

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি)

সাম্য হত্যার প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন কুবি শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদিক্ষণ করে গোলচত্বরে এসে সমাবেশে মিলিত হয়।

মিছিলে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ‘আমার ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেবো না’, ‘সাম্য ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেবো না’, ‘ঢাবিতে লাশ পড়ে, ইন্টেরিম কি করে’, ‘ছাত্রদলের রক্ত বৃথা যেতে দেব না’ ইত্যাদি স্লোগানে সাম্য হত্যার ন্যায্য বিচার এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নিরাপত্তাহীনতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

বিক্ষোভ মিছিল শেষে কুবি শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব মোস্তাফিজুর রহমান শুভ বলেন, “সাম্য হত্যাসহ গত ১৭ বছরে দেশের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আমাদের অনেক ভাই ও বোন নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। আমরা এসব হত্যার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি। শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নয়- দেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে যেভাবে ‘মব জাস্টিস’ বা জনতার হাতে বিচার চলছে, তা আমরা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি। এ ধরনের মোবোক্রেসি যদি আবারও ঘটে, তাহলে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রশাসনকে তার দায়ভার নিতে হবে।”

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি)

বুধবার (১৪ মে) দুপুরে সাম্য হত্যার বিচার দাবিতে শাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। দলীয় ব্যানারে আয়োজিত মিছিল শেষে আয়োজিত সমাবেশে তারা সাম্য হত্যায় জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন।

মঙ্গলবার (১৩ মে) রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় শাহরিয়ার আলম সাম্যকে ছুরিকাঘাত করে একদল দুর্বৃত্ত। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় রাত ১২টার দিকে সহপাঠীরা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সাম্যকে মৃত ঘোষণা করেন।

সাম্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ও এফ রহমান হল ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের এফ রহমান হলের ২২২ নম্বর কক্ষে থাকতেন তিনি।

ঢাকা/মেহেদী


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়