সাম্য হত্যায় জড়িতদের বিশেষ ট্রাইব্যুনালে দ্রুত বিচারের সিদ্ধান্ত
ঢাবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

ঢাবি প্রশাসনের সঙ্গে ডিএমপি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিশেষ বৈঠক
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মেধাবী শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার সঙ্গে জড়িতদের বিশেষ ট্রাইব্যুনালে দ্রুত বিচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়া আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে হত্যার রহস্য উদঘাটিত হবে বলে জানানো হয়েছে।
শনিবার (১৭ মে) ঢাবি উপাচার্যের সভাকক্ষে হত্যার তদন্তের অগ্রগতি ও বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের এক বিশেষ বৈঠকে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
বৈঠকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশা, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মামুন আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক এম জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, কলা অনুষদের ডিন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটির প্রধান অধ্যাপক ছিদ্দিকুর রহমান খান, প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমদ, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী (এনডিসি), ডিএমপির রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার মো. মাসুদ আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান বলেন, “অপরাধীদের চিহ্নিত করে দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যৌথভাবে কাজ করছে। রবিবার (১৮ মে) বিকেল ৩টায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার সঙ্গে এ সংক্রান্ত এক বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হবে। নিহত মেধাবী শিক্ষার্থী সাম্যর পরিবারের সঙ্গে আমরা সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করছি।”
ডিএমপির কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী (এনডিসি) বলেন, “অপরাধীদের আগামীকাল থেকে রিমান্ড শুরু হবে। দ্রুত তদন্ত কাজ শেষ করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হবে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে হত্যার ঘটনা উদঘাটিত হবে। বিশেষ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে এ হত্যার বিচার কাজ দ্রুততম সময়ে সম্পন্ন হবে বলে আশা করছি।”
ডিএমপির রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার মো. মাসুদ আলম বলেন, “ঘটনার পরপরই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তাৎক্ষণিকভাবে অপরাধীদের ধরতে আমরা ঢাকা শহরের বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে তল্লাশি অভিযান শুরু করি। পরে শমরিতা হাসপাতাল থেকে একজন ও বিআরবি হাসপাতাল থেকে আরেকজনকে গ্রেপ্তার করি। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী মোবাইল ট্র্যাকিং করে তৃতীয়জনকে ফার্মগেটের রাজাবাজার থেকে গ্রেপ্তার করে ডিবি অফিসে নেওয়া হয়।”
তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি ও দোয়েল চত্বরের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ নিয়ে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। আগামীকাল আসামিদের ছয়দিনের রিমান্ড শুরু হবে। প্রাপ্ত তথ্য ও আসামীদের বক্তব্য নিবিড়ভাবে পর্যালোচনা করা হবে। আমরা বিভিন্ন আঙ্গিক থেকে ঘটনা বিশ্লেষণ করছি। অনেক তথ্য পেয়েছি। তদন্তের স্বার্থে সেগুলো এখনই প্রকাশ করছি না। আশা করি, আসামিদের রিমান্ড শেষ হওয়ার পর পুরো ঘটনা আমরা উদঘাটন করতে সক্ষম হব।”
গত মঙ্গলবার (১৩ মে) দিবাগত রাতে বাংলা একাডেমির বিপরীতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে আহত হন। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
সাম্য হত্যার সুষ্ঠু বিচার এবং ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঢাবি প্রশাসন বিভিন্ন ধরনের ধারাবাহিক পদক্ষেপ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে কিছু বাস্তবায়ন হয়েছে এবং বাকিগুলো প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছে ঢাবি প্রশাসন।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী