ঢাকা     সোমবার   ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ৩০ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

তুমি কি জাদু জানো, ছাত্রীকে ইবি শিক্ষক

ইবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:২৫, ২ জুলাই ২০২৫  
তুমি কি জাদু জানো, ছাত্রীকে ইবি শিক্ষক

অভিযুক্ত বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ার বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আজিজুল ইসলাম।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ার বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আজিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে মৌখিক পরীক্ষায় নেকাব নিয়ে কটাক্ষসহ বিভিন্নভাবে হেনস্তার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগী একই বিভাগের ২০১৯-২০ বর্ষের শিক্ষার্থী।

গত ২২ জুন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. নাজমুল হুদা বরাবর লিখিতভাবে এসব অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী।

আরো পড়ুন:

ভুক্তভোগী ছাত্রী অভিযোগপত্রে লেখেন, “আমাকে ও আমার বান্ধবীকে শিক্ষক আজিজুল বলেন, ‘তোমরা সবসময় একসঙ্গে থাক, রাতেও কি একসঙ্গে একই কম্বলের নিচে ঘুমাও। মার্কের প্রলোভন দেখিয়ে তিনি বলেন, ‘তোমার কোনো পরিবর্তন নেই। কিভাবে মার্কস নিতে হয় জানো না; আন্তরিকতা বাড়াতে হয়।’”

এছাড়া তিনি অভিযোগে লেখেন, “প্রথম বর্ষে থাকাকালে টিউটোরিয়াল পরীক্ষার পরদিন ফোন দিয়ে কম মার্কসের বাহানায় তিনি আমাকে রুমে ডাকেন। আমি না যাওয়ায় তারপর থেকে ক্লাসে আমার উপর প্রচণ্ড রাগ দেখানো শুরু করেন এবং বিভিন্ন রকম কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করা শুরু করেন। ক্লাসে আমাকে বলেন, ‘তুমি কি জাদু জানো, কবিরাজি করো?’”

আরো পড়ুন: ইবিতে ফের শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রী হেনস্তাসহ নানা অভিযোগ

এছাড়া, একইদিন (২২ জুন) যৌন হয়রানি, ছাত্রীদের ইমোতে ভিডিও কল দেওয়া, কুরুচিপূর্ণ মেসেজ প্রদান, নম্বর কম দেওয়া, রুমে ডাকা, বাজে ইঙ্গিত, কটূক্তি, বডি শেমিং ও বিবাহিত ছাত্রীদের বিয়ে বহির্ভূত সম্পর্কের উপকারিতা বোঝানোসহ নানা অভিযোগ উল্লেখ করে বিভাগটির অন্তত ডজনখানেক ছাত্রী বিভাগের সভাপতি বরাবর লিখিত দেন। একইসঙ্গে তারা তদন্ত সাপেক্ষে ওই শিক্ষকের স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি জানান।

অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ২৮ জুন পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বিভাগের সব কার্যক্রম থেকে তাকে বিরত থাকার নির্দেশ দেয় বিভাগটি।

শিক্ষার্থীদের এসব অভিযোগ অসত্য দাবি করে অভিযুক্ত শিক্ষক আজিজুল ইসলাম বলেন, “আমি তাদের সঙ্গে যে দৃষ্টিভঙ্গিতে কথা বলেছি তারা সেটাকে ইতিবাচকভাবে নেয়নি। আমি কোনো শিক্ষার্থীকে হেনস্তা করিনি। বরং তারা আমার কথা ও কাজকে ভুলভাবে নিয়েছে। আমি মনে করি পরিকল্পিত ও ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমার উপর ক্ষুব্ধ হয়ে অসত্য অভিযোগ দিয়েছে। আর কখন কোন পরিস্থিতিতে কি বলেছি, তা আমি এই মুহূর্তে বলতে পারছি না।”

এ বিষয়ে বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. নাজমুল হুদা বলেন, “অভিযোগ পাওয়ার পরে আমরা নিয়মানুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। প্রাথমিকভাবে আমরা তার বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি। আপাতত পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তিনি বিভাগের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকবেন।”

২০২৩ সালের ১৩ ডিসেম্বর নেকাব না খোলায় হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০২১-২২ বর্ষের এক ছাত্রীর সেমিস্টার ফাইনালের মৌখিক পরীক্ষা নেননি বোর্ডের শিক্ষকরা। এদিন মৌখিক পরীক্ষার দায়িত্বে ছিলেন হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগে অধ্যাপক ড. কাজী আখতার হোসেন, হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সভাপতি শিমুল রায়, পরীক্ষা কমিটির সভাপতি উম্মে সালমা লুনা ও বিভাগের শিক্ষক শহিদুল ইসলাম।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে ক্যাম্পাসে দুই দফায় প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে শিক্ষার্থীরা। পরে দেড় মাস আটকে থাকার পর গত বছরের ২৭ জানুয়ারি উপাচার্যের নির্দেশে সেই ছাত্রীর মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়।

ঢাকা/তানিম/মেহেদী

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়