ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৪ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

ভাষা ব্যবহারে ইবির উদারতা দেশের জন্য আদর্শ হওয়া উচিত: ড. সলিমুল্লাহ

ইবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:৫৯, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫   আপডেট: ১৯:০৯, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ভাষা ব্যবহারে ইবির উদারতা দেশের জন্য আদর্শ হওয়া উচিত: ড. সলিমুল্লাহ

শিক্ষাবিদ ও লেখক অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ খান বলেছেন, “ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশ পথে যে নাম দেখলাম আগে বাংলায়, পরে আরবিতে ও শেষে ইংরেজিতে। ভাষা ব্যবহারে বিশ্ববিদ্যালয়ের এ উদারতা সারাদেশের জন্য আদর্শ হওয়া উচিত। পত্র-পত্রিকা থেকে শুরু করে সর্বত্র লেখার ক্ষেত্রে কোন ভাষায় আগে লিখবেন, তা আপনার চরিত্র নির্ধারণ করে।”

তিনি বলেন, “বাংলা ভাষার যে দুর্দশা চলছে, তার দায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সদস্য হিসেবে আমরা এড়াতে পারি না। দেশের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ইংরেজি ভাষায় লেখা। বাংলাকে বাদ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে যে দৈন্যতা তৈরি হয়েছে, তা আমাদের বোঝা দরকার।”

আরো পড়ুন:

রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে ২০২৪-২৫ বর্ষের তিন অনুষদের শিক্ষার্থীদের নিয়ে দ্বিতীয় দিনের নবীনবরণ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।  শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) ছয় অনুষদের নবীনবরণ অনুষ্ঠিত হয়।

সলিমুল্লাহ বলেন, “আমি বাংলায় কথা বলছি। আমি তো জানি, আমি বাংলা ভাষাকে নতুন করে প্রাণ দেওয়ার জন্য কিছু বলছি না। পৃথিবীর সব দেশের ভাষায় শিক্ষা এবং জ্ঞান বিস্তারের মাধ্যম হয়ে গেলে সব মানুষের শিক্ষিত হবার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। আমাদের দেশে যে এখনো শত শত মানুষ শিক্ষিত হতে পারেনি, তাদের জ্ঞানের আলো আমরা মানুষের কাছে নিয়ে যেতে পারিনি লিখিত রূপে, সেটার কারণ হচ্ছে আমাদের অর্থ জ্ঞানের অভাব, আমাদের বিদ্যা শিক্ষার জন্য বইপত্রের অভাব।”

তিনি বলেন, “আমাদের দেশে এখনো তো মৌলিক শিক্ষা মানে নিরক্ষরতা দূর হয়নি। কিন্তু আমরা বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করার জন্য লড়াই করি, তাদের সঙ্গে মারামারি করি, অনেকের রক্তের বিনিময়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হয়। কিন্তু প্রাইমারি স্কুল প্রতিষ্ঠা হয়নি সরকারের হাতে। এখনো সরকারি হিসেবেই আমাদের দেশের শতকরা ২৬ জন লোক নাম স্বাক্ষর করতে পারে না, যদিও স্বাক্ষরতা আর শিক্ষার মধ্যে পার্থক্য আছে। কিন্তু কই? এদেশের প্রাইমারি শিক্ষা এবং সেকেন্ডারি শিক্ষা তার বিস্তার হয়নি। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রতিযোগিতায় আমরা কিন্তু লেগেছি।”

অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহর সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম। 

এ সময় থিওলজি অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আ ব ম ছিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফী, কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এমতাজ হোসেন, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরীন, প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

চারুকলা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড.  কামরুল হাসান ও সমাজকল্যাণ বিভাগের প্রভাষক হাবিবুর রহমান অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।

ধর্মীয়গ্রন্থ পাঠের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি শুরু হয়ে জাতীয় সংগীত পরিবেশনা ও জুলাই শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। এরপর আলোচনা ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিথি ও নবীনদের ফুল ও ব্যতিক্রম সাংস্কৃতিক জোটের পরিবেশনায় বরণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাথমিক তথ্য সম্বলিত ডকুমেন্টারি প্রদর্শন এবং মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

ঢাকা/তানিম/মেহেদী

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়