ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

শেষ মুহূর্তে জমজমাট ফুটপাতের ঈদবাজার

নুরুজ্জামান তানিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:০৯, ১২ মে ২০২১  
শেষ মুহূর্তে জমজমাট ফুটপাতের ঈদবাজার

দরজায় কড়া নাড়ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদকে ঘিরে এখন চলছে কেনা-কাটার ধুম।  ফুটপাত থেকে শুরু করে অভিজাত মার্কেটগুলোতে চলছে শেষ মুহূর্তের কেনা-কাটা।

সারা দেশে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ বিরাজ করলেও ঈদের কেনাকাটায় ফুটপাতেও সব বয়সের মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

এবারের ঈদকে কেন্দ্র করে অভিজাত মার্কেটের মতোই জমে উঠেছে রাজধানীর ফুটপাতগুলো। কেনা-কাটায় ব্যস্তার কারণে পথচারীতে ফুটপাত ছেড়ে হাঁটতে হচ্ছে সড়ক ধরে।  ঈদের দিন যত এগোচ্ছে ততই জমে উঠছে ফুটপাতে ব্যবসায়ীদের কেনা-বেচা।

বুধবার (১২ মে) রাজধানীর ফকিরেরপুল, দৈনিক বাংলা, বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর-পশ্চিম গেটের সামনে, পল্টন, গুলিস্তান, মতিঝিল, দিলকুশা এলাকা সরেজমিন ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।

বিক্রেতাদের হাকডাক আর ক্রেতাদের পদচারণায় মুখরিত রাজধানীর ফুটপাত। বিক্রেতারা ‘একদাম একশ’ একদাম দুইশ-এভাবে হাকডাক দিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন ক্রেতাদের।

এদিকে, সব বয়সী নারী-পুরুষসহ বাচ্চাদের জন্য রঙ-বেরঙের বিভিন্ন ডিজাইনের জামা-কাপড় কিনতে ব্যস্ত ক্রেতারা। বিক্রেতাও খুব ব্যস্ত সময় পার করছেন। এবারের ঈদে ছেলেদের পঞ্জাবি, পায়জামা, মেয়েদের থ্রি-পিচ ও বাচ্চাদাদের জামা-কাপড়ের চাহিদা সবচেয়ে বেশি রয়েছে।

ফুটপাতের দোকানগুলোতে মান ভেদে বিভিন্ন দামে বিভিন্ন ধরনের পণ্য বিক্রি করতে দেখা গেছে।  এর মধ্যে বড়দের পাঞ্জাবি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ৮০০ টাকায়।  পায়জামা বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৫০০ টাকায়। বাচ্চাদের পাঞ্জাবি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ৫০০ টাকায়।  বড়দের শার্ট ও টি-শার্ট বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ৫০০ টাকায়।  বাচ্চাদের শার্ট ও টি-শার্ট বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ২৫০ টাকায়। বড়দের প্যান্ট বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৭০০ টাকায়।  বেল্ট বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ৫০০ টাকায়। একজোড়া মোজা ২০ থেকে ৫০ টাকায়।  লুঙ্গি ২০০ থেকে ৫০০ টাকায়।  টুপি ৫০ থেকে ৩০০ টাকায়।  আতরের শিশি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫০ টাকায়।

এছাড়া মেয়েদের শাড়ি ৪০০ থেকে ২০০০ টাকায়।  থ্রি-পিস ৩৫০ থেকে ২০০০ টাকায়। বাচ্চাদের থ্রি-পিস, ফ্রক, স্কার্ট ৩০০ থেকে ৬০০ টাকায়।

আর ইমিটেশন জুয়েলারি, কসমেটিকস, জুতা, স্যান্ডেল, চশমাসহ আরও অনেক ধরনের জিনিসপত্র মান ভেদে বিভিন্ন দামে পাওয়া যাচ্ছে।

বিক্রেতারা বলছেন, এবার বেচাকেনা গত বছরের তুলনায় কম হচ্ছে। করোনার কারণে ঈদের আগে সেভাবে ব্যবসা জমে উঠছে না। তারপরেও করোনার মধ্যে সরকার ফুটপাতে দোকান খোলার সুযোগ দেওয়ার কারণে কোনো মতে টিকে আছি।  চাঁদরাত পর্যন্ত যা বেচা-কেনা হবে সেটা দিয়ে ঈদ খরচ মেটাতে হবে।  তবে করোনার কারণে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর মানুষের কেনাকাটায় আগ্রহ কম।

বায়তুল মোকাররম মসজিদের সামনে পাঞ্জাবি বিক্রেতা আলতাফ হোসেন বলেন, দুই-তিন দিন ধরে বিক্রি তুলনামুলক ভালো হচ্ছে।  সামনে যে কয়দিন আছে, আশা করছি বিক্রি বাড়বে। এবার পাঞ্জাবি কেনার প্রতি আগ্রহ বেশি রয়েছে। তবে সমস্যা একটা আছে। বৃষ্টি পড়লে আর কোনো উপায় থাকে না।  বৃষ্টি হলে খুব বিপদে পড়ব, চালান উঠবে না।

বায়তুল মোকাররম মসজিদের সামনের ফুটপাতে কাপড় কিনতে আসা নাসিমা বেগম বলেন, ফুটপাতে ভালো ভালো মানের কাপড় পাওয়া যায়।  দামও তুলনামূলক কম থাকে।  তাই প্রায় সময় ফুটপাত থেকে কেনাকাটা করা হয়। এবার ঈদের জন্য খেতে এসেছি ভালো কালেকশন এসেছে কি-না। ভালো কিছু পেলে ছেলের জন্য কিনব।

ফকিরেরপুল মোড়ে জুতা বিক্রেতা রহমত আলী বলেন, বেচা-কেনা হচ্ছে মোটামুটি। গত বছরে তুলনায় কম। এখন দু-এক দিন হাতে রয়েছে। বেচা-বিক্রি বাড়তেও পারে।

গুলিস্তানে ইমিটেশন জুয়েলারি বিক্রেতা ফরিদ মোল্লা বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার ব্যবসা ভালো যাচ্ছে না।  ঈদবাজার হিসেবে ক্রেতা কম।

মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলের সামনে থ্রিপিচ কিনতে আসা আমেনা খাতুন বলেন, আমি একটি পোশাক কারখানায় কাজ করি। ফুটপাতে তুলনামূলক কম দামে সবকিছু কেনা যায়। তাই এখানে এসেছি।  ফুটপাতেও কালেকশন কম থাকে না, এখানেও অনেক ভালো ভালো জিনিস পাওয়া যায়।

এনটি/এসবি

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়