ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ১ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

ব্যাংক খাতে মন্দ ঋণ ৩ লাখ ৪২ হাজার কোটি টাকা 

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:৫৮, ১৬ জুন ২০২৫   আপডেট: ১৯:০৮, ১৬ জুন ২০২৫
ব্যাংক খাতে মন্দ ঋণ ৩ লাখ ৪২ হাজার কোটি টাকা 

প্রতীকী ছবি

দেশের ব্যাংকিং খাত দীর্ঘদিন ধরে অব্যবস্থাপনা, রাজনৈতিক প্রভাব, দুর্বল তদারকি ও নানা আইনি জটিলতার কারণে সংকটে আছে। সরকার পরিবর্তনের পর ব্যাংকিং খাত সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। একীভূত করা হবে পাঁচটি ইসলামী ব্যাংক। এর মধ্যে আগের সংকটের রেশ ধরেই ঋণ খেলাপি হওয়ার পাশাপাশি উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে মন্দ ঋণ। শুধু মন্দ ঋণের পরিমাণ বাড়ছে, তা নয়; এসব মন্দ ঋণ আদায়ের সম্ভাবনাও খুবই কম।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের মার্চ মাস শেষে দেশের ব্যাংকগুলোর মন্দ ঋণ দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৪২ হাজার ৬৪ কোটি টাকা, যা মোট ঋণ খেলাপির ৮১ দশমিক ৩৮ শতাংশ। এ সময়ে ঋণ খেলাপির পরিমাণ ৪ লাখ ২০ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা ঋণের ২৪ দশমিক ১৩ শতাংশ। উল্লিখিত সময়ে ঋণ বিতরণের পরিমাণ ১৭ লাখ ৪১ হাজার ৯৯২ কোটি টাকা।

পর্যালোচনায় দেখা গেছে, মার্চ মাস শেষে সরকারি ব্যাংকগুলোর মন্দ ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ৩১ হাজার ৮৭০ কোটি টাকা, যা সরকারি ব্যাংকগুলোর ঋণ খেলাপির ৯০ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। এ সময়ে সরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপির পরিমাণ ১ লাখ ৪৬ হাজার ৪০৬ কোটি টাকা। সরকারি ব্যাংকগুলোর মোট ঋণ বিতরণের পরিমাণ ৩ লাখ ১৯ হাজার ৭০৮ কোটি টাকা।

মার্চ শেষে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মন্দ ঋণ দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ২ হাজার ৫৩১ কোটি টাকা, যা এসব ব্যাংকের ঋণ খেলাপির ৭৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ। মার্চ শেষে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর ঋণ খেলাপি ২ লাখ ৬৪ হাজার ১৯৫ কোটি টাকা। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর ঋণ বিতরণের পরিমাণ ১৩ লাখ ১০ হাজার ৩৮৪ কোটি টাকা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মন্দ ঋণ ব্যাংকের আর্থিক ভিত্তি নষ্ট করে দেয়। শুধু তা-ই নয়, মন্দ ঋণ সামগ্রিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি। ব্যাংকগুলো রাজনৈতিক প্রভাবে যোগ্যতা, সক্ষমতা যাচাই না করেই ঋণ দিয়েছে, যা আদায়ের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এসব মন্দ ঋণ আদায়ে ব্যাংকগুলো পদক্ষেপ নিলেও আদায় হয় খুবই কম। বেশিরভাগ মন্দ ঋণ আদায়ের সম্ভাবনা নেই।

তারা বলছেন, ঋণ অনুমোদনের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও কঠোর যাচাই-বাছাই নিশ্চিত করতে হবে। যারা ঋণ খেলাপি, তাদের তালিকা প্রকাশ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। একই সঙ্গে আইন সংস্কার করে মন্দ ঋণ আদায়ের ব্যবস্থা করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নজরদারি ও তদারকি জোরদার করাও জরুরি। অন্যথায়, ব্যাংকিং খাতের আর্থিক ভিত্তি আরো দুর্বল হয়ে পড়বে, দেশের অর্থনীতি চাপে পড়বে।

ঢাকা/এনএফ/রফিক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়