ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

উদ্বোধন আর সাইনবোর্ডেই সীমাবদ্ধ জবির উন্নয়ন

আশরাফুল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৪৪, ৯ এপ্রিল ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
উদ্বোধন আর সাইনবোর্ডেই সীমাবদ্ধ জবির উন্নয়ন

আশরাফুল ইসলাম : জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়ে ক্রমশ ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছেন শিক্ষার্থীরা। ছাত্র-ছাত্রীদের অভিযোগ, উদ্বোধন আর সাইনবোর্ডেই সীমাবদ্ধ জবির উন্নয়ন।

 

১০ এপ্রিল নতুন কারাগার উদ্বোধন উপলক্ষে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে আসবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে গত বৃহস্পতিবার ‘ক্রয়কৃত সম্পত্তি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়’ ও ‘নির্ধারিত স্থান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়’ লেখা সম্বলিত দুটি সাইনবোর্ড টাঙিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সেই সাইনবোর্ডে লিখে প্রতিবাদ জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

 

সাইনবোর্ডে শিক্ষার্থীরা লিখেছেন, ‘হলের নামে প্রতারণা আইওয়াশ বন্ধ কর’ ‘জবি ভিসি কূটকৌশল বন্ধ কর’ ‘হল চাই, দিতে হবে’। এ ছাড়া বেদখল হওয়া হল উদ্ধারে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে সাইনবোর্ডে লিখেছেন তারা।

 

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বেদখল হল উদ্ধার, নতুন হল নির্মাণ, একাডেমিক ভবন সম্প্রসারণ, ক্যান্টিনের খাবারের মান উন্নয়ন, পরিবহণ সংকটসহ বেশ কয়েকটি বিষয়ে উন্নয়নের নামে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদেরকে বরাবরই আশ্বস্ত করেছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তেমন উন্নয়ন হয়নি বলে  মনে করছেন শিক্ষার্থীরা।

 

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বরাদ্দ থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদাসীনতার কারণে কোনো উন্নয়ন কাজ হচ্ছে না। শুধুমাত্র আশ্বাস আর উদ্বোধনের মাঝেই সীমাবদ্ধ রয়েছে সকল উন্নয়ন কাজ। বিশ্ববিদ্যালয়ের দশম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে শিক্ষামন্ত্রী জানান, ১৩০ কোটি টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বরাদ্দ হয়েছে। সেটা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসে ২০ তলা বিশিষ্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল এবং একটি একাডেমিক ভবন নির্মাণ করা হবে। কিন্তু তার কোনো কিছুই দেখা যাচ্ছে না। উন্নয়ন কাজ না করেই সাইনবোর্ড টাঙিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছে প্রশাসন।

 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, চার বছর হলো বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছি, এ সময়ের কোনো উন্নয়ন দেখিনি। শুধু আশ্বাস, উদ্বোধন আর সাইনবোর্ডের মধ্যেই উন্নয়ন সীমাবদ্ধ রয়েছে।

 

অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০১৫ সালেরে ১২ জানুয়ারি দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জের বাঘৈর গ্রামে ৩৪৯.৫ শতাংশ জমির ওপর বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস উদ্বোধন করা হয়। সেখানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে ২০ তলা বিশিষ্ট একটি অত্যাধুনিক হল এবং একটি একাডেমিক ভবন নির্মাণ করা কথা। দ্বিতীয় ক্যাম্পাস উদ্বোধনের পর বছর পেরিয়ে গেলেও প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য দুটি সাইনবোর্ড টাঙানো ছাড়া আর কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখা যায়নি।

 

এদিকে ছাত্রলীগের উদ্ধার করা জায়গায় ২০১৩ সালের ২২ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র ছাত্রীহলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। এর পর থেকে অত্যন্ত ধীর গতিতে নির্মাণ কাজ চলছে। প্রায় তিন বছরে শুধু বেসমেন্ট তৈরি হয়েছে মাত্র। কবে নাগাদ শেষ হবে, তা নিয়ে সন্দিহান শিক্ষার্থীরা।

 

এ বিষয়ে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের জবি শাখার সভাপতি মেহরাব আজদ বলেন, জবি ভিসির মিষ্টি মিষ্টি কথা এবং উদ্বোধনের মাঝেই উন্নয়ন কাজ সীমাবদ্ধ। বাস্তবে এর কোনো ফলাফল আমরা পাই না। অথচ ঢাবিতে মাত্র দুই-তিন বছরেই হল নির্মাণের কাজ শেষ হয়।

 

জবি ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি আল আমিন বলেন, শুধু ব্যানারবাজি করেই উন্নয়ন কাজ চালাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বাস্তবে কোনো কাজই হয়নি। সবই আইওয়াশ।

 

এ বিষয়ে জবি উপাচার্য বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য এ সাইনবোর্ড টাঙানো হয়েছে। হলের জন্য প্রকল্প যাতে পাশ হয়, এজন্যই এই সাইনবোর্ডের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

 

 

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/৯ এপ্রিল ২০১৬/আশরাফুল/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়