২৩ কলেজে বিএড: যা বলছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়
নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম
কলেজ শিক্ষায় স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পাঠ্যক্রম ও পাঠ্যসূচির আধুনিকীকরণ, উন্নতিসাধন, শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়ন এবং শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ও যোগ্যতা বৃদ্ধিসহ টিচার্স ট্রেনিং কলেজের সকল বিষয় ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। ২০২০ শিক্ষাবর্ষে ওয়েব সাইটে প্রচারিত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএড পরীক্ষার কেন্দ্র তালিকা মতে, বাংলাদেশে ১৪টি সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ।
এ ছাড়া অনেকগুলো বেসরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ রয়েছে। তবে বেসরকারি কলেজের মধ্যে কোনগুলোতে বিএড করলে উচ্চতর স্কেল পাওয়া যাবে এটি নিয়ে অনেকেই দ্বিধায় থাকেন।
রোববার (১৪ নভেম্বর) এ বিষয়ে জানতে চাইলে কলেজগুলোর নিয়ন্ত্রক সংস্থা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মশিউর রহমান রাইজিংবিডিকে বলেন, যেসব কলেজে বিএড করলে সনদ বৈধ হবে আমরা ভর্তির বিজ্ঞপ্তিতে সেগুলোর নাম উল্লেখ করে দিই। যারা আমাদের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কেবল তাদের নামই আমরা নোটিশে উল্লেখ করি। সুতরাং এটি নিয়ে কোন দ্বিধাদ্বন্দ্বের কারণ নেই।
এদিকে গত ২৭ অক্টোবর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সারাদেশে বেসরকারি বিএড কলেজগুলোর পরিচালনা সংক্রান্ত বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হতে ২০০৮ সালের ১৫ মে একটি পরিপত্র জারি করা হয়। উক্ত পরিপত্রের কার্যকারিতার উপর হাইকোর্টের রিট পিটিশন দায়ের করা হয়। হাইকোর্ট বিভাগ উক্ত পরিপত্র বাতিল করে রায় প্রদান করেন। রায়ের বিরুদ্ধে আপিল এবং পরবর্তীতে কনটেম্পট পিটিশন দায়ের করে ২৩টি কলেজ।
মামলার রায় ও আদেশের প্রেক্ষিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আইন কর্মকর্তা (যুগ্মসচিব) ডা. মোহাম্মদ ফারুক হোসেন স্বাক্ষরিত ২০১৬ সালের ২৮ জানুয়ারি রিট পিটিশনারদের পক্ষের ২৩টি বেসরকারি কলেজের বিএড সনদ সংক্রান্ত বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়।
সে মোতাবেক এই ২৩টি বিএড কলেজ হতে পাশকৃত শিক্ষার্থীদের সনদের বিপরীতে বিএড স্কেল প্রদান করা হচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের আদেশ এবং কনটেম্পট পিটিশন বহালের পরিপ্রেক্ষিতে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনার মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের আপীলের রায়ের পূর্বে পিটিশনারদের ২৩টি বেসরকারি বিএড কলেজ হতে ডিগ্রী অর্জনকারী শিক্ষার্থীদের বিএড স্কেল প্রদান করে আসছে।
সুপ্রিম কোর্টের আপীল মামলা নং-৯৯/২০১৪ নিষ্পত্তির আদেশের প্রেক্ষিতে এবং কনটেম্পট পিটিশন নং-১৫৩/২০১৪ বহালের পরিপ্রেক্ষিতে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনার মাধ্যমে ২৩টি কলেজের নামের তালিকা প্রকাশপূর্বক পূর্বের ন্যায় পত্র জারি করা প্রয়োজন।
অন্যথায় ২০১৮ সালের ১৫ মে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারি করা পত্রের প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের আপীল মামলা নং-৯৯/২০১৪ আদেশ উপেক্ষা করে বেসরকারি ২৩টি বিএড কলেজ ছাড়াও বেসরকারি অন্যান্য কলেজের সনদের বৈধতা নিয়ে বিল প্রদান করে সরকারি কোষাগারের অর্থ তছরুপ করা হচ্ছে। ফলে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতে গিয়ে জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে।
এ অবস্থায়, হাইকোর্টের রিট পিটিশন হতে উদ্ভূত আপীল এবং কনটেম্পট পিটিশনের রায়ের নির্দেশনার প্রেক্ষিতে সরকার কর্তৃক অনুমোদিত বেসরকারি ২৩টি বিএড কলেজের অর্জিত সনদধারী শিক্ষকগণের বিএড স্কেল প্রদানের বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের গত ২০১৬ সালের ২৮ জানুয়ারি জারিকৃত পত্রটি বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মশিউর রহমান বলেন, যারা বৈধ প্রক্রিয়ায় কার্যক্রম চালাচ্ছে এবং সরকার যেটার অনুমোদন দিয়েছে সেগুলোর সনদ অবশ্যই বৈধ হবে। এটি নিয়ে কোন জটিলতা নেই, দ্বিধারও কিছু নেই। কিন্তু যারা আমাদের অধিভুক্ত নয় তাদের কলেজ থেকে কেউ বিএড করলে এবং উচ্চতর স্কেল না পেলে সেটার দায়ভার আমরা নেব না। এটি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আছে, তারা বিষয়টি দেখবেন।
ইয়ামিন/এনএইচ