হাবিপ্রবিতে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে সংর্ঘষ, আহত ২১
সুলতান মাহমুদ || রাইজিংবিডি.কম
দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
দিনাজপুর প্রতিনিধি : দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি) ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংর্ঘষে অন্তত ২১জন আহত হয়েছে ।
ছাত্রলীগের সভাপতিসহ আটক হয়েছেন চার। তারা হলেন : ছাত্রলীগ সভাপতি ইফতেখারুল ইসলাম রিয়েল, ছাত্রলীগ নেতা জাহিদ হোসেন, ছাত্রলীগ নেতা মিল্টন ও অপর ছাত্রলীগ অন্তু রায়।
রোববার দুপুরে এই সংঘর্ষ হয়। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাংচুরসহ মোটরসাইকেল জ্বালিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে হাবিপ্রবি থেকে বহিষ্কৃত ছাত্র ও ছাত্রলীগ শাখার সাধারণ সম্পাদক অরুন কান্তি রায় সিটনও আহত হন।
এছাড়া ছাত্রলীগ হাবিপ্রবি শাখার সভাপতি ইফতেখারুল ইসলাম রিয়েলকে প্রতিপক্ষ গ্রুপ অবরুদ্ধ করে রেখে তার মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়।
আহতদের মধ্যে পাঁচজনকে দিনাজপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এরা হলেন-ছাত্রলীগ হাবিপ্রবি শাখার সাধারণ সম্পাদক অরুন কান্তি রায় সিটন, হাবিব, সিফাত, অন্তু, জাকারিয়া। অন্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
হাবিপ্রবির ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে তিন ছাত্রের বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার ও ভিসির পদত্যাগের দাবিতে গত ৪ নভেম্বর থেকে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ব্যানারে ছাত্রলীগ এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন করে আসছে। এতে হাবিপ্রবিতে ক্লাশ পরীক্ষাসহ সব কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।
এক পর্যায় হাবিপ্রবি কর্তৃপক্ষ কৌশল অবলম্বন করে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করতে বাধ্য হয়। তৃতীয় দফা বিশ্ববিদ্যালয় খোলার তারিখ পরিবর্তন করেন। গত ১২ জানুয়ারী বিশ্ববিদ্যালয় খোলার প্রথম দিনেই ছাত্রলীগ হাবিপ্রবি শাখার সভাপতি ইফতেখারুল ইসলাম রিয়েল ও সাধারণ সম্পাদক অরুন কান্তি রায় সিটনসহ কয়েকজন নেতা শিক্ষকদের লাঞ্চিত করে। এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা কর্মচারীদের সঙ্গে সংর্ঘষের ঘটনা ঘটে।
আজ রোবাবার আবারো ছাত্রলীগের নেতারা ক্যাম্পাসে আন্দোলন শুরু করে। এ সময় হাবিপ্রবি ছাত্রলীগ শাখার যুগ্ম সম্পাদক জেমি শেখ রাসেল, হলের সভাপতি পলাশ ও নয়নের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের একাংশ এবং সাধারণ ছাত্ররা তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে দুই পক্ষের মধ্যে সংর্ঘষ শুরু হয়। ক্যাম্পাসে পুলিশ প্রবেশ করে পরিস্থতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে।
হাবিপ্রবির প্রক্টর ড.এ.টি.এম. শফিকুল ইসলাম জানান ছাত্র লীগের দুই গ্রুপের সংর্ঘষের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই কর্মকর্তাও আহত হয়েছেন । তিনি আরো বলেন ছাত্রলীগের সভাপতি ইখতেরুল ইসলাম রিয়েল , সাধারন সম্পাদক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃত অরুন কান্তি রায় সিটনসহ কয়েকজন নেতা ছাত্রলীগের নাম ব্যবহার করে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করে বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করে তুলেছে।
তিনি বলেন, ছাত্রলীগ নাম ব্যবহার করে শিক্ষকদের লাঞ্চিত করাসহ তাদের নানাভাবে হয়রানী করছে। চাঁদাবাজী, সন্ত্রাসী কার্যকলাপসহ এমন কোন অনৈতিক কাজ নেই যা তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটাচ্ছে না। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও সাধারন শিক্ষার্থীসহ সকলে অসহায়। আমরা এদের বিচার দাবী করছি
দিনাজপুর কোতয়ালী থানার ওসি এ কে এম খালেকুজ্জামান সংর্ঘষের বিষয়ে নিশ্চিত করে জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌছে পরিস্থতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে বলেও তিনি জানিয়েছেন ।
রাইজিংবিডি/১৮ জানুয়ারি ২০১৫/সুলতান মাহমুদ/নওশের
রাইজিংবিডি.কম