ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

প্রেমের আনন্দ বিয়ের পর পেয়েছি: টয়া

আমিনুল ইসলাম শান্ত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৩০, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১   আপডেট: ০৭:৫৩, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১
প্রেমের আনন্দ বিয়ের পর পেয়েছি: টয়া

শাওন-টয়ার আনন্দঘন মুহূর্ত

মডেল-অভিনেত্রী মুমতাহিনা চৌধুরী টয়া। ভালোবেসে অভিনেতা সায়েদ জামান শাওনের সঙ্গে ঘর বেঁধেছেন তিনি। গত বছরের ২৯ ফেব্রুয়ারি পারিবারিক আয়োজনে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন এই যুগল। জীবনের বিশেষ দিনটি স্মরণীয় করতে লিপ ইয়ারে বিয়ে করেন তারা। প্রেম, বিয়ে ও দাম্পত্য জীবনের নানা গল্প রাইজিংবিডিকে শুনিয়েছেন টয়া। আলাপচারিতায় ছিলেন জ্যৈষ্ঠ সহ-সম্পাদক আমিনুল ইসলাম শান্ত।

রাইজিংবিডি: আপনাদের প্রথম দেখা কোথায়?
টয়া:
২০১৬ সালে নায়নানা হাউজে শাওনের সঙ্গে আমার প্রথম দেখা হয়। ওটা বান্নাহ (মাবরুর রশীদ বান্নাহ) ভাইয়ের সেট ছিল। একই সিরিয়ালে আমরা কাজ করছিলাম। কিন্তু সেদিন আমাদের অতটা কথা হয়নি। তারপর কয়েক বছর আমাদের দেখাও হয়নি।

রাইজিংবিডি: তাহলে কখন শাওনের প্রতি আপনি টান অনুভব করলেন?
টয়া:
অনেক দিন থাইল্যান্ডে থাকার পর ঢাকায় ফিরছিলাম। ঢাকা এয়ারপোর্টে বিমান ল্যান্ড করার পর প্রথম যে পরিচিত মুখটা দেখি সে শাওন। ওর পরনে সেদিন ইউনিফর্ম ছিল। প্রথমে দ্বিধায় ছিলাম অন্য কেউ কিনা! কিন্তু শাওন আমাকে দেখে হেসে ফেলে। বিমান থেকে নেমেই শাওনকে জড়িয়ে ধরেছিলাম। এই কাণ্ড করার পর আমি নিজেই অবাক হয়েছিলাম। কারণ ওর সহকর্মীরা হা করে তাকিয়ে ছিল। এরপর আবার দুই তিন বছর আমাদের দেখা হয়নি। ২০১৯ সালে কোরবানির ঈদে আমরা একসঙ্গে কাজ করি। কাজটি করার পর আমাদের মধ্যে বন্ধুত্বটা আরো গভীর হয়। এরপর থেকে আমরা পরস্পরকে ফিল করতে থাকি। পরে শাওন আমাকে জিজ্ঞাসা করে, বিয়ে করতে চাই কিনা। তারপর আমি সময় নিই এবং শাওনের প্রস্তাবে সম্মতি দিই। এরপর দুই পরিবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন।

রাইজিংবিডি: তার মানে প্রেম নয়, সরাসরি বিয়ের প্রস্তাব পান…
টয়া:
হ্যাঁ, সরাসরি বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিল শাওন। আসলে আমরা খুব বেশি সময় সম্পর্কে ছিলাম না। বরং বিয়ের কথাই আগে এসেছে। যখন থেকে আমরা একসঙ্গে হ্যাংআউট করতাম তখনই বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিল শাওন।

রাইজিংবিডি: আপনাদের প্রেম পরিণয় পেতে কী বাধার মুখে পড়েছিল?
টয়া:
না, আমরা সেরকম কোনো বাধার মুখে পড়িনি। শুরুতে যখন বিয়ের কথা বলি তখন একজন আরেকজনের পরিবারের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলাম। শাওনের পরিবার চমৎকারভাবে আমাকে স্বাগত জানিয়েছিল। আমার পরিবারও শাওনকে দারুণভাবে গ্রহণ করে। এখন পর্যন্ত আমরা কোনোরকম বাধা-বিপত্তির মুখে পড়িনি। আমাদের দুই পরিবারের বন্ধনটাও অনেক শক্ত। আমার বাবার বাড়ি ও শ্বশুরবাড়ি একদম পাশাপাশি। সবকিছু মিলিয়ে আমরা ভালো আছি। তবে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে রোজকার খুনসুটি, ঝগড়াঝাটি তো সব সম্পর্কেই থাকে। এটা ছাড়া আমাদের জীবনে অন্য কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই।

রাইজিংবিডি: বিয়ের আগে ও পরের ভালোবাসায় কোনো পার্থক্য খোঁজে পান?
টয়া:
সত্যিকার অর্থে আমাদের ভালোবাসার পিরিয়ডটা শুরু হয়েছে বিয়ের পর। বিয়ের আগে আমরা বন্ধুর মতোই ছিলাম। যখন বিয়ের সিদ্ধান্ত নিলাম তখন আমাদের মধ্যে একটা প্রেম-ভাব জাগে। বিয়ের পর যখন একসঙ্গে থাকতে শুরু করি তখন থেকে প্রেমের আসল মজাটা পেতে শুরু করি। আমাদের সম্পর্কের বিষয়টি বলতে পারেন অনেকটা পুরোনো ধাঁচের। বিয়ের পরে আমাদের বন্ধন আরো বেড়েছে।

রাইজিংবিডি: শাওনের কোন কোন বৈশিষ্ট্য আপনার প্রিয়?
টয়া:
শাওনের মনে যা মুখেও তাই, ও কোনো কিছু হাইড করে না। কোনো ইমোশন লোকায় না। ও ভীষণ কেয়ারিং একজন মানুষ। যতটা সম্ভব ও ওর পরিবার, বন্ধু-বান্ধবকে খুব কেয়ার করে। নিজের স্বার্থ চিন্তা করার আগে সামনের মানুষটির কথা ভাবে। বলা যায়, অন্যের জন্য নিবেদিত প্রাণ! শাওনের এই কেয়ারিংয়ের বিষয়টি আমাকে সবচেয়ে বেশি আকর্ষণ করেছিল। শাওন কখনো কারো বিপদের কারণ হয়নি। একদিনের পরিচিত কেউ-ও যদি বিপদে পড়ে তাহলে তাকে উদ্ধার করার চেষ্টা করে শাওন। ওর এই প্রবণতাটা ভীষণ ভালো।

রাইজিংবিডি: আর অপ্রিয় বৈশিষ্ট্য?
টয়া:
অপ্রিয় বলতে গেলে অনেক কিছুই বলা যায়। কিন্তু ভালো গুণের সামনে শাওনের খারাপ গুণ ঢাকা পড়ে যায়! শাওনের একটি খারাপ বৈশিষ্ট্য হলো— ও শর্ট টেম্পার একজন মানুষ। অল্পতে রেগে যায়। এটা কাউকে বললে, কেউই বিশ্বাস করে না। ওর সব রাগ আমার সঙ্গে কিংবা বাসার ভেতরে। বাসার মানুষের সামনে মান-অভিমান বা সব অভিযোগ বলতে থাকে। আমার মনে হয় এটাই হওয়া উচিত। আর ওর সব রাগ আমার সামনে প্রকাশ করে। এটা হয়তো ভালোবাসার জায়গা থেকেই করে। কিন্তু বাইরে কখনো রাগ করতে দেখিনি।  

রাইজিংবিডি: ভালোবাসা দিবসে প্রিয় মানুষটির উদ্দেশ্যে কী বলতে চান?
টয়া:
ও যেমনটা আছে তেমনটাই থাকুক। যেভাবে ওর পরিবার বা কাছের মানুষগুলোকে যত্নসহকারে রাখছে সেটাই করুক। আল্লাহ তা’আলার কাছে একটাই প্রার্থনা, ওকে আরো বড় মানুষ করুক। ওর মনটা সবসময় ভালোবাসায় ভরপুর থাকুক।

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়