বছরের প্রভাবশালী পাঁচ খলনায়ক
আমিনুল ইসলাম শান্ত || রাইজিংবিডি.কম
ভয়ংকর আউট লুক, চিৎকার-চেঁচামেচি করে পর্দা কাঁপানো খলনায়কদের দিন যেন ফুরিয়েছে! এখনকার সিনেমা খলনায়কদের নতুন রূপে সংজ্ঞায়িত করছে। যেখানে শক্তিশালী অভিনেতারা শান্তভাবে ভীতি প্রদর্শন, তীক্ষ্ম দৃষ্টিপাত, নিয়ন্ত্রিত বিশৃঙ্খল পরিবেশ দিয়ে নিজেদের প্রমাণ করছেন। সূক্ষ্মতা অতিরঞ্জিত নাটকীয়তার জায়গা দখল করেছে, ফলে প্রতিপক্ষরা বাস্তব এবং বিপজ্জনক বোধ করছে। আধুনিক বলিউডের খলনায়কেরা সত্যিকার অর্থে নতুন করে সংজ্ঞায়িত করে মনোমুগ্ধকর অভিনয় পরিবেশন করছেন। চলতি বছরের প্রভাবশালী পাঁচ বলিউড খলনায়ককে নিয়ে এই প্রতিবেদন—
অক্ষয় খান্না
‘ধুরন্ধর’ সিনেমায় রেহমান চরিত্রে অভিনয় করে অক্ষয় খান্না প্রমাণ করেছেন, তিনি হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম সেরা অভিনেতা। সিনেমাটিতে তার উপস্থিতি প্রথমে বিশেষভাবে নজর কেড়েছে; এর সঙ্গে শক্তিশালী অভিব্যক্তি—এই দুয়ের মেলবন্ধনে তৈরি হয়েছে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স। অন্তর্জালে এখন এসবই ছড়িয়ে পড়েছে। তাকে নিয়ে যে চর্চা শুরু হয়েছে, তা এখনো অব্যাহত। অক্ষয় চিৎকার করেননি; তার নীরবতা আর দৃঢ়তার মাধ্যমে সব কথা বলে দিয়েছেন; যা চলতি বছরের অন্যতম ঠান্ডা মাথার ও ভয়ংকর খলনায়কে পরিণত করেছে।
অর্জুন রামপাল
‘ধুরন্ধর’ সিনেমায় খলনায়কের ভূমিকায় অর্জুন রামপাল নিজেকে পুরোপুরি সঁপে দিয়েছেন। সিনেমাটিতে আইএসআই মেজর ইকবাল চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। তার শক্তিশালী অন-স্ক্রিন উপস্থিতি, নির্যাতনের দৃশ্য, সোনালি দাঁত, ঘন দাড়ি এবং ইস্পাতের মতো কঠোর অভিব্যক্তি পর্দায় ঝড় তুলেছে। এ নিয়ে অন্তর্জালেও জোরালো হাওয়া বইছে। ২০০০ সালের শুরুতে প্রেমিক চরিত্র রূপায়ন করে পরিচিতি পেয়েছিলেন অর্জুন। সেই অভিনেতা বলিউডের ভিলেন; যা তাকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করেছে। চিৎকার করে নয়, গল্পে ধীরগতির বিপদের আবহ তৈরি করেছেন অর্জুন রামপাল।
রীতেশ দেশমুখ
‘রেইড টু’ সিনেমায় হাজির হয়ে দর্শকদের চমকে দিয়েছেন রীতেশ দেশমুখ। রেলওয়ের ইউনিয়ন মন্ত্রী মনোহর ধনকারের চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। খলনায়ক রূপে তার নীরব, হিসেবি উপস্থিতি দর্শকদের মনে সজোরে ধাক্কা দিয়েছে। কমেডি ইমেজ থেকে বেরিয়ে এমন এক শক্তিশালী প্রতিপক্ষের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন, যা বলপ্রয়োগের চেয়ে প্রভাব ও কৌশলের ওপর ভরসা করে। তার সংযত অভিনয় দ্বন্দ্বকে আরো গভীর করেছে, ফলে অজয় দেবগনের আইআরএস অফিসারের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ আরো তীব্র হয়ে ওঠে। বাস্তবধর্মিতার জন্য রীতেশের খলনায়কের চরিত্র আলাদাভাবে নজর কেড়েছে; প্রমাণ করেছেন যে, ভয় দেখাতে সবসময় উচ্চকণ্ঠ প্রয়োজন নেই।
জয়দীপ আহলাওয়াত
‘জুয়েল থিফ: দ্য হাইস্ট বিগিনস’ সিনেমায় রাজন ওলাখ চরিত্রে অভিনয় করেছেন জয়দীপ আহলাওয়াত। বুদ্ধিদীপ্ত ও তীক্ষ্ণ প্রতিপক্ষ হিসেবে বিশ্ব অপরাধ ও প্রতারণার জগতে কাজ করেন তিনি। খলনায়কের চরিত্রটি উচ্চাকাঙ্ক্ষা ও বুদ্ধিমত্তা দ্বারা পরিচালিত; যা তাকে যতটা বিপজ্জনক, ততটাই অনিশ্চিত করে তোলে। পর্দায় তার প্রভাবশালী উপস্থিতি, নানা মাত্রিক পারফরম্যান্স আলাদা পরিচিতি এনে দিয়েছে। শুধু অ্যাকশন নয়, বরং মগজাস্ত্রের লড়াই-ই এই গল্পে মুখ্য।
নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকী
‘থাম্মা’ সিনেমায় নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকী আবারো শক্তিশালী খল চরিত্রে অভিনয় করেছেন। তার চরিত্রের নাম যক্ষশাসন। যেখানে রয়েছে আবেগী জটিলতা ও আঁধার। চরিত্রটি কেবল মন্দ নয়, বরং গভীরভাবে মানবিক পরিস্থিতি ও অন্তর্দ্বন্দ্ব দ্বারা গঠিত। নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকীর ধূসর চরিত্রে সুক্ষ্মতা যোগ করার ক্ষমতা সিনেমাটিতে প্রতিপক্ষকে একই সঙ্গে অস্বস্তিকর ও আকর্ষণীয় করে তোলে; যা সিনেমার শেষে দর্শকদের মনে গেঁথে যায়।
ঢাকা/শান্ত