পুচির মা, মানুষ ও প্রাণীর এক অসাধারণ মেলবন্ধন
নাদীমুল হোসেন নিলয় || রাইজিংবিডি.কম
রোজকার সংসার, ছেলেমেয়ে নিয়ে খুনসুটি পুচি ফ্যামিলির যাত্রা শুরু হয় ২০১৯ সালের শেষের দিকে করোনার সময়ে। ‘পুচির মা’-কে মানুষ চিনতে শুরুই করে তার বিড়ালদের নিয়ে। ছোট ছোট প্রাণীগুলোর প্রতি তার এত মায়া মমতা সকলের মন কেড়ে নেয়। তাদের এই ছোট্ট সংসারের প্রধান আকর্ষণই যেন বেড়ালরা। তাদের ছুটোছুটি, হামাগুড়ি দিয়ে বিছানায় উঠে যাওয়া আবার কখনো বা এক লাফে অনেক উঁচুতে ওঠা দেখে ছোট বড় সবাই আনন্দ পেত তাদের ভিডিও থেকে। প্রথমে ফেসবুকে কয়েকটা কন্টেন্ট ছাড়ার পর রাতারাতি ভাইরাল হয়ে যায় যেন পুচির মা। তারপর ইউটিউবসহ বিভিন্ন প্লাটফর্মে তাদের ভিডিও আপলোড শুরু হয়।
ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে পুচি ও তার ফ্যামিলি। বেড়ালের ভিডিও-সহ নিজের সংসারের খুঁটিনাটি নিয়ে ভিডিও করে কখন যে মানুষের মনে জায়গা করে নেয় তারা নিজেরাও বুঝতে পারেনি। পুচি ফ্যামিলির সবথেকে প্রিয় মুখ তাপসী দাস তার অসাধারণ কণ্ঠে ভিডিও তে অতি দ্রুততার সাথে কথা বলেন যা দেখে যে কারোর মুখেই হাসি ফুটতে বাধ্য। বর্তমানে তার ১৪টি বিড়ালসহ পরিবারের সকলে বেশ হাসিখুশি ভাবেই জীবনযাপন করছেন।
তিনি জানান, ছোটবেলা থেকেই তিনি অনেক বেশি পশুপ্রেমিক। বিড়াল তার সবচেয়ে পছন্দ। বিড়ালের ভিডিওর পাশাপাশি তিনি নতুন নতুন রান্না, মজাদার সব ভিন্ন রেসিপি ইত্যাদি শেয়ার করে থাকেন। তার ফলোয়ারদের মধ্যে অনেক গৃহিণীই আছেন, তার জন্য খুব তাড়াতাড়িই তার ভিডিওগুলো পৌঁছে যায় নানা পর্যায়ের মানুষের কাছে। সংসারের ছোটখাটো দুষ্টুমি, ছেলেমেয়েদের নিয়ে নতুন কোথাও যাওয়া- সব মিলিয়ে তিনি যেন বাংলাদেশি স্ত্রী-বউদের একটা দিক তুলে ধরেন। অনেক অনেক মানুষই জানিয়েছেন তারা পুচির মা চ্যানেলের ভিডিওগুলোর সাথে নিজেদের জীবনের অনেক ঘটনা মিল করতে পারেন। শুধু যে ভিডিও দিয়েই মানুষের মন জয় করে নিয়েছেন তাপসী, তা নয়; তার পেজের ইনকাম দিয়ে অসহায় মানুষদের সাহায্য করা, আর্থিক অসচ্ছল ব্যক্তিকে সাহায্য করা, অসুস্থ দুস্থ মানুষদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করাসহ বহু সামাজিক কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। তার ভিডিও কন্টেন্ট থেকে উপার্জিত আয়ের একটা অংশ তিনি অসহায়, গরিব-দুখী মানুষসহ প্রাণীদের জন্য ব্যয় করে থাকেন।
পুচির মা ছাড়াও তাপসী দাসের পুচি ফ্যামিলি, গলুস রিভিউসহ দুটি চ্যানেল রয়েছে। এই সবকটি পেজের ফলোয়ার মিলিয়নের অধিক। তার এতদূর আসার পেছনে স্বামী ও পরিবারের সাপোর্ট ছিলো সবচেয়ে বেশি। তিনি এভাবেই তার ফ্যান ফলোয়ারদের থেকেও সাপোর্ট ও ভালোবাসা আশা করেন। তিনি মনে করেন, ফলোয়ারেরাই তার সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা।
ঢাকা/এনএইচ