ঢাকা     রোববার   ২১ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৬ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

মার্চেই পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হচ্ছে ওসমানী

ইকবাল মাহমুদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৫৭, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
মার্চেই পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হচ্ছে ওসমানী

ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর

ইকবাল মাহমুদ
সিলেট, ১৭ ফেব্রুয়ারি : আগামী মার্চ মাসেই সরাসরি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু হচ্ছে সিলেট ওসমানী বিমানবন্দরে। এর জন্য রিফুয়েলিং স্টেশনটির নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে।

আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নাম থাকলেও দীর্ঘদিন থেকে বিমানের সরাসরি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ থাকায় সিলেটবাসীর মধ্যে হতাশা ছিলো। ২০১০ সালে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এ বিমান বন্দরে একটি রিফুয়েলিং স্টেশন নির্মাণের উদ্যোগ নেন।

প্রকল্পের সহকারী ব্যবস্থাপক শাকিল আহমদ জানিয়েছেন, আগামী মার্চ মাসেই বিমানকে রিফুয়েলিং দেয়া সম্ভব হবে। আর একই সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মর্যাদা পেতে যাচ্ছে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।

শাকিল আরো জানান, প্রকল্পের গুরুত্বপূর্ণ কাজ পাইপলাইন অর্থাৎ হাইড্রেন রিফুয়েলিং সিস্টেমের কাজ শেষ হয়েছে। বিদেশ থেকে সব যন্ত্রপাতি এরই মধ্যে নিয়ে আসা হয়েছে। এখন চলছে যন্ত্রপাতি স্থাপনের কাজ ।

তিনি জানান, দু’টি স্থানে চলছে প্রকল্পের নির্মাণ কাজ। এর একটি সিলেটের দক্ষিণ সুরমার পুরাতন রেলস্টেশন এলাকায় পদ্মা ওয়েলের ডিপোতে এবং অন্যটি বিমানবন্দরের অভ্যন্তরে। দক্ষিণ সুরমায় এক একর জায়গায় নির্মিত হচ্ছে রিফুয়েলিং স্টেশনের রিজার্ভ স্টেশন। এর কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে।

দক্ষিণ সুরমায় নির্মিত হচ্ছে দুই তলা অফিস ভবন, তিনটি স্টোরেজ ট্যাঙ্ক, পাইপ লাইন, বিদ্যুৎ কেন্দ্র, রেস্ট হাউজ, গ্যারেজ, অফিসার্স রুম ও স্টাফ রুম, দুটি ডিসপেনসার ও ফিল্টারিং ব্যবস্থা। অন্যদিকে বিমানবন্দরে নির্মিত হচ্ছে তিনটি স্টোরেজ ট্যাঙ্ক, হাইড্রেন্ট লাইন, ডিপো রিফুয়েলার ডিসপেনসার ও ফিল্টার এবং জেট ফুয়েল পরিবহনের জন্য ব্রিজার অর্থাৎ বড় ট্যাঙ্ক লরি।

উল্লেখ্য, ২০১০ সালের জুন মাসে বিমানবন্দরের রিফুয়েলিং স্টেশন নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয় তৎকালীন মহাজোট সরকার। তার প্রেক্ষিতে সিলেট ২০১২ সালের জানুয়ারি মাসে পদ্মা ওয়েলের তত্ত্বাবধানে ৫১ কোটি ১৮ লক্ষ টাকা ব্যয় স্বাপেক্ষে শুরু হয় রিফুয়েলিং স্টেশন নির্মাণ কাজ। ২০১৩ সলের জুন মাসে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবার কথা ছিলো। কিন্তু নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় প্রকল্পের মেয়াদ আরো বাড়ানো হয়। একই সঙ্গে প্রকল্প ব্যয় অতিরিক্ত ২ কোটি টাকা বাড়িয়ে ৫৩ কোটি ১৫ লাখ ৫০ হাজার টাকায় উন্নীত করা হয়।

প্রকল্প পরিচালক আমিনুল হক জানান, রিফুয়েলিং স্টেশন নির্মাণ প্রকল্পের কাজ মোট পাঁচটি অংশে বিভক্ত করা হয়। এর মধ্যে সবগুলোর কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। স্থাপনা নির্মাণ, পাইপ লাইন স্থাপনসহ যেসব কাজ বেশি সময় সাপেক্ষ ও গুরুত্বপূর্ণ, সেগুলো শেষ হয়েছে। দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা না থাকলে প্রকল্পের মেয়াদের আগেই সম্পন্ন করা সম্ভব হতো বলে জানান তিনি।

সিলেট ওসমানী বিমানবন্দরের ম্যানেজার হাফিজ উদ্দিন আহমদ জানান, প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে তাকে জানিয়ে দিয়েছে ২০১৪ সালের মার্চ মাসের মধ্যে প্রকল্পটি বুঝিয়ে দেয়া হবে।  

তিনি জানান, বিমানবন্দরে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা থাকার পরও বিমানের রিফুয়েলিং ব্যবস্থা না থাকায় সিলেট থেকে সরাসরি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ ছিল এতদিন। রিফুয়েলিং সুবিধা হয়ে গেলে প্রবাসী অধ্যুষিত এই অঞ্চলের মানুষের জন্য যাতায়াত ব্যবস্থা আরো সহজ হবে।

উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ১৫ ডিসেম্বর কুয়াশার অজুহাতে সিলেট-লন্ডন সরাসরি ফ্লাইট বন্ধ হয়ে যায়। ৩ মাস পর ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে সরাসরি ফ্লাইট চালু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দীর্ঘ দিনেও তা হয়নি। বর্তমানে লন্ডন থেকে সিলেটে কয়েকটি ফ্লাইট আসলেও রিফুয়েলিং ব্যবস্থা না থাকায় সিলেট থেকে লন্ডনে সরাসরি কোন ফ্লাইট যেতে পারছে না।


রাইজিংবিডি / ইকবাল মাহমুদ / লিমন

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়