ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

তাওবা প্রত্যেক মুমিনের জন্য যে কারণে বাঞ্ছনীয়

প্রকাশিত: ১৪:৩৭, ১ এপ্রিল ২০২৩  
তাওবা প্রত্যেক মুমিনের জন্য যে কারণে বাঞ্ছনীয়

নিজের অপরাধসমূহ স্বীকার করে মহান আল্লাহর দরবারে আন্তরিকভাবে অনুতপ্ত হওয়া এবং ভবিষ্যতে উক্ত গুনাহ থেকে বিরত থাকার দৃঢ় সংকল্প করাকে ‘তাওবা’ বলে। যার ভেতর অপরাধবোধ নেই সে প্রকৃত মুমিন নয়। যখনই কোনো অপরাধী স্বীয় অপরাধবোধ জাগ্রত করে মহান রবের নিকট অনুতপ্ত হয়ে তাওবা করেন তখন সে আল্লাহর বন্ধুতে পরিণত হন। 

প্রিয়নবী (সা.) নিষ্পাপ হওয়া সত্ত্বেও দৈনিক একশ বার তাওবা করতেন। মহান আল্লাহ তাওবাকারীকে ভালোবাসেন, তাওবা করা মাত্র তার সব গুনাহ মাফ করেন এবং তাওবাকারীর গুনাহসমূহ নেক দ্বারা পরিবর্তন করে দেন।

মহান আল্লাহ তায়ালা এ সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেন, হে মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহর কাছে তাওবা করো, আন্তরিক তাওবা। আশাকরা যায়, তোমাদের পালনকর্তা তোমাদের মন্দ কর্মসমূহ মোচন করে দেবেন এবং তোমাদের প্রবেশ করাবেন জান্নাতে, যার তলদেশে ঝরনাসমূহ প্রবাহিত। আল্লাহ সেদিন নবী এবং তাঁর বিশ্বাসী সহচরদের অপদস্থ করবেন না। (সূরা তাহরীম, আয়াত-৮)

মহান আল্লাহ তায়ালা মহাগ্রন্থ আল-কোরআনে আরো ইরশাদ করেন, যারা অজ্ঞতাবশত মন্দ কাজ করে, অতঃপর তাওবা করে এবং নিজেকে সংশোধন করে, আপনার পালনকর্তা এসবের পরে তাদের জন্যে অবশ্যই ক্ষমাশীল, দয়ালু। (সূরা নাহল, আয়াত-১১৯) 

দয়াময় রাব্বুল আলামিন সূরা ফুরকানের ৭০ নম্বর আয়াতে ইরশাদ করেন, কিন্তু যারা তাওবা করে, বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদের গুনাহসমূহ পুণ্য দ্বারা পরিবর্তন করে দেবেন। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।

হযরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, আল্লাহ তায়ালা নিজ বান্দার তাওবার কারণে তোমাদের ঐ ব্যক্তি থেকেও অধিক আনন্দিত হন, যে জাগ্রত হওয়া মাত্রই ঐ উটটি পেয়ে যায়, যা সে মরুভূমিতে হারিয়ে ফেলেছিল। (সহীহ মুসলিম-৬৭০৯)

প্রিয়নবী (সা.) আরো ইরশাদ করেন, প্রত্যেক আদম সন্তান অপরাধী, আর অপরাধীদের মধ্যে তারাই উত্তম যারা তাওবা করে। (তিরমিযি-২৪৯৯)

প্রিয় পাঠক, তাওবা গুনাহ মাফের প্রধান হাতিয়ার। যদি কোনো বান্দা নফস বা শয়তানের ধোকায় গুনাহ-পাপাচারে জড়িয়ে পড়ে, এমনকি গুনাহ করতে করতে নিজের জন্য জাহান্নামের আজাবকে অবধারিত করে নেয়, অতঃপর অনুতপ্ত হয়ে দয়াময় আল্লাহর নিকট তাওবা ও ইস্তেগফার করে, মহান আল্লাহ উক্ত বান্দাকে ক্ষমার চাদরে আবৃত করে নৈকট্যশীল বান্দাদের অন্তর্ভূক্ত করে নেন।

অতএব কৃত অপরাধের জন্য অনুতপ্ত হয়ে অশ্রুসিক্ত নয়নে মহান রবের দরবারে তাওবা-ইস্তেগফার করা এবং দয়াময় মালিকের অনুগ্রহ সান্নিধ্য ও দিদার লাভে প্রয়াসী হওয়া প্রত্যেক মুমিনের জন্য বাঞ্ছনীয়।

লেখক: মুফাসসিরে কোরআন ও ইসলামী গবেষক
 

শাহেদ//

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়