ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৪ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

১২ অক্টোবর শুরু হচ্ছে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন 

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৩৮, ৯ অক্টোবর ২০২৫  
১২ অক্টোবর শুরু হচ্ছে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন 

দেশব্যাপী টাইফয়েড নিয়ন্ত্রণে আগামী ১২ অক্টোবর থেকে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন ২০২৫ শুরু হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান। 

তিনি জানান, মাসব্যাপী ক্যাম্পেইনে ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী প্রায় ৫ কোটি শিশুকে বিনামূল্যে একটি করে টাইফয়েড টিকা দেওয়া হবে। এক ডোজ টাইফয়েড  টিকাই জীবন বাঁচাতে সহায়তা করবে।

বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য জানান। 

অধ্যাপক সায়েদুর রহমান বলেন, “টাইফয়েড জ্বর শিশুদের জন্য এক নীরব ঘাতক। প্রতি বছর শত শত শিশু এই রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে, অনেকে স্থায়ী জটিলতায় ভুগছে। অথচ একটি মাত্র টিকা এই বিপর্যয় থেকে রক্ষা করতে পারে। তাই সরকার আগামী ১২ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইনে ৫ কোটি শিশুকে নিরাপদ ও কার্যকর টিকা বিনামূল্যে প্রদান করতে যাচ্ছে।” 

দূষিত পানি, খাবার এবং অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ এ রোগ বিস্তারে ভূমিকা রাখে জানিয়ে তিনি বলেন, “বিশ্বজুড়ে এই রোগের প্রকোপ বাড়ছে। Global Burden of Disease Study ২০২১ অনুযায়ী, বিশ্বে ৭০ লাখের বেশি মানুষ টাইফয়েডে আক্রান্ত হন এবং প্রায় ৯৩ হাজার মৃত্যু ঘটে। এছাড়া, বাংলাদেশে ২০২১ সালে টাইফয়েডে মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৮ হাজার জনের, যার মধ্যে ৬৮ শতাংশ ছিল ১৫ বছরের নিচের শিশু।” 

অধ্যাপক সায়েদুর রহমান আরো বলেন, “টাইফয়েড জ্বরের চিকিৎসায় ব্যবহৃত অনেক অ্যান্টিবায়োটিক এখন আর কাজ করছে না। ওষুধ প্রতিরোধী টাইফয়েড একটি বৈশ্বিক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই টিকাই এখন সবচেয়ে কার্যকর প্রতিরোধ ব্যবস্থা।”

তিনি বলেন, “শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত প্রাক-প্রাথমিক থেকে নবম শ্রেণি (মাদ্রাসা ও ইংরেজি মাধ্যমসহ) শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ বিদ্যালয়ে টিকা পাবে। স্কুলবহির্ভূত শিশুদের দেওয়া হবে কমিউনিটি পর্যায়ে ইপিআই টিকাদান কেন্দ্রগুলোতে। ”

সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের (যেমন পথশিশু, বেদে পল্লী, চা বাগান, যৌনপল্লী, এতিমখানা, উন্নয়ন কেন্দ্রের শিশু) জন্য থাকবে বিশেষ টিকাদান ব্যবস্থা।অন্যান্য টাইফয়েড টিকার তুলনায় এটি উন্নততর, অধিক কার্যকর ও নিরাপদ বলেও জানান তিনি। 

পাকিস্তান, নেপাল, এবং ভারতের মুম্বাইতে এই টিকা সফলভাবে ব্যবহার হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “টিকা দেওয়ার পর হালকা জ্বর, ক্লান্তি, বা ইনজেকশনের স্থানে ব্যথা হতে পারে। তবে এটি অস্বাভাবিক নয় এবং দ্রুত সেরে যায়।” 

অধ্যাপক সায়েদুর রহমান বলেন, “টিকার কারণে বাংলাদেশ পোলিও মুক্ত হয়েছে, হাম-রুবেলা নিয়ন্ত্রণে এসেছে, ধনুষ্টংকার নির্মূল হয়েছে। কিছু গোষ্ঠী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছে। তাই গুজবে কান না দিয়ে, টিকা সম্পর্কে তথ্য পেতে স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বা রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

শিশুদের টিকা দেওয়ার আহ্বান জানিযে তিনি বলেন, “আসুন, শিশুদের সুরক্ষায় এক ডোজ টাইফয়েড টিকা নিশ্চিত করি। গড়ে তুলি একটি সুস্থ, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ।”

ঢাকা/এএএম/ইভা 

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়