ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৫ অক্টোবর ২০২৪ ||  আশ্বিন ৩০ ১৪৩১

মালয়েশিয়ায় যৌন নির্যাতনের শিকার ৪০০ শিশু-কিশোর উদ্ধার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৩৯, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪   আপডেট: ১৬:২৭, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
মালয়েশিয়ায় যৌন নির্যাতনের শিকার ৪০০ শিশু-কিশোর উদ্ধার

মালয়েশিয়ার সেলাঙ্গর এবং নেগেরি সেম্বিলান প্রদেশের ২০টি কেয়ার হোম থেকে শারীরিক ও যৌন নির্যাতনের শিকার ৪০২ জন শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের উদ্ধার করেছে দেশটির পুলিশ। এ ঘটনায় এসব প্রতিষ্ঠানের ১৭১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

বুধবার রাজধানী কুয়ালালামপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান মালয়েশিয়া পুলিশের মহাপরিদর্শক রাজারউদ্দিন হুসাইন। খবর বিবিসির।

কেয়ার হোমগুলো একটি ইসলামী সংগঠনের সাথে জড়িত বলে জানা গেছে, তবে ইসলামী সংগঠনটি কোনো অন্যায়ের সাথে জড়িত নয় জানিয়ে একটি বিবৃতি জারি করেছে।

সম্মেলনে রাজারউদ্দিন বলেন, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে চালানো অভিযানে যেসব শিশুকে উদ্ধার করা হয়েছে, তাদের সবার বয়স এক থেকে ১৭ বছরের মধ্যে। অপরদিকে যাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের বয়স ১৭ থেকে ৬৪ বছরের মধ্যে। 

পুলিশ মহাপরিদর্শক জানান, ওই কেয়ার হোমগুলোতে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ধর্মীয় আচরণের অংশ দাবি করে শিশুদের স্পর্শ করতেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া কিছু শিশুকে তাদের চেয়ে কম বয়সীদের সাথে একই রকম যৌন আচরণ করতে শেখানো হয়েছিল।

তিনি বলেন, কখনো কখনো শিশুদের যৌনকাজে লিপ্ত হতে বাধ্য করা হতো। তারা রাজি না হলে কোনো গরম বস্তু শরীরে চেপে ধরে রাখতো। এর কোনো চিকিৎসাও করা হতো না, যতক্ষণ না তা গুরুতর আকার ধারণ করতো।

উদ্ধারকৃত শিশু-কিশোরদের রাজধানী কুয়ালালামপুরের একটি পুলিশ সেন্টারে সাময়িকভাবে রাখা হয়েছে এবং তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন রাজারউদ্দিন।

চলতি মাসের শুরুতে নেগেরি সেম্বিলান রাজ্যের একটি কেয়ার হোমে শিশু শোষণ, শ্লীলতাহানি এবং যৌন নির্যাতনের প্রতিবেদন প্রকাশের পর পুলিশ সেলাঙ্গর এবং নেগেরি সেম্বিলান রাজ্যের ২০টি কেয়ার হোমে বুধবার অভিযানগুলো পরিচালনা করে।

দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা বার্নামা জানিয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে যে অনেক শিশুকে তাদের বাবা-মা এসব কেয়ার হোমে রেখেছিলেন যাতে তারা ধর্মীয় শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে।

এই দাতব্য সংস্থাগুলোকে অর্থায়ন ও ব্যবস্থাপনাগত সহায়তা প্রদান করত মালয়েশিয়াভিত্তিক বহুজাতিক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ইখওয়ান সার্ভিসেস অ্যান্ড বিজনেস (জিআইএসবি)। সুপারমার্কেট থেকে শুরু করে ইলেকট্রনিক পণ্য উৎপাদন পর্যন্ত বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ রয়েছে এই কোম্পানির। মালয়েশিয়া ছাড়াও বিভিন্ন দেশে জিআইএসবির শাখা রয়েছে।

শিশু শোষণের অভিযোগে জিআইএসবি ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে পুলিশ তদন্ত শুরু করার কয়েকদিন পরেই এই অভিযান চালানো হয়।

জিআইএসবি বুধবার ফেসবুকে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তারা বলেছে, কোম্পানি আইনের বিরুদ্ধে যায় এমন কোনও কার্যকলাপের সাথে আপস করে না, বিশেষ করে শিশুদের শোষণের বিষয়ে।

মালয়েশিয়ার মানবাধিকার কমিশন ওয়েলফেয়ার হোমগুলোতে কঠোর প্রবিধানের আহ্বান জানিয়েছে।

কমিশনের শিশু কমিশনার ফারাহ নিনি বলেন, ‘সমস্যা হলো এই জায়গাগুলো সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ বা তদারকি করা হয় না। মনিটরিং এবং তত্ত্বাবধানের ক্ষেত্রে আমাদের গুরুতর সমস্যা রয়েছে। এসব ব্যাপারে আরও সতর্ক হতে হবে।’

/ফিরোজ/


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়