ঢাকা     শুক্রবার   ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২০ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

মহাকাশে ইতিহাস গড়ল ভারত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:১৭, ১৬ জানুয়ারি ২০২৫   আপডেট: ১৩:২৫, ১৬ জানুয়ারি ২০২৫
মহাকাশে ইতিহাস গড়ল ভারত

ভারত মহাকাশে মানবহীন মহাকাশযানের ডকিং সফলভাবে সম্পন্ন করেছে। যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীনের পর বিশ্বের চতুর্থ দেশ হিসাবে এই সাফল্য অর্জন করেছে ভারত। এই অর্জন ভবিষ্যতে ভারতের মহাকাশ স্টেশন তৈরির পথ প্রশস্ত করবে। 

বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো) এক্স পোস্টে জানায়, ‘মহাকাশযান ডকিং সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে! একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত।”

আরো পড়ুন:

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের খবরে বলা হয়েছে, ভারতীয় মহাকাশ সংস্থা তাদের স্পেস ডকিং এক্সপেরিমেন্ট (স্পাডেক্স) নামের মিশনে প্রায় ২২০ কিলোগ্রাম ওজনের দুটি ছোট মহাকাশযানকে নিম্ন-পৃথিবী কক্ষপথে স্থাপন করেছে। টার্গেট এবং চেজার নামের দুটি মহাকাশযান গত ৩০ ডিসেম্বর দক্ষিণ অন্ধ্র প্রদেশ রাজ্যের সতীশ ধাওয়ান মহাকাশ কেন্দ্র থেকে ভারতীয় তৈরি একটি পিএসএলভি রকেটে করে উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল।

স্পাডেক্স মিশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেশটির মহাকাশমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং বলেছিলেন, “ভারতের স্পাডেক্স মিশন মহাকাশ গবেষণায় একটি নতুন যুগের সূচনা করবে, যা ভারতের প্রযুক্তিগত দক্ষতা এবং উচ্চাকাঙ্ক্ষা প্রদর্শন করে।” 

ইসরোর তথ্যানুসারে, ভারত যদি একজন ভারতীয় নাগরিককে চাঁদে পাঠানোর, একটি স্বদেশী মহাকাশ স্টেশন তৈরি করার এবং চন্দ্রের নমুনা পৃথিবীতে নিয়ে আসার উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে নিয়ে এগোতে চায়, তাহলে দেশীয়ভাবে উন্নত ডকিং প্রযুক্তি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে।

মহাকাশমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং গত ৩১ ডিসেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বলেন, “এই প্রযুক্তি ভারতকে একটি উপগ্রহ বা মহাকাশযান থেকে অন্য উপগ্রহে (যেমন পেলোড), চন্দ্রের নমুনা পৃথিবীতে আনা এবং মহাকাশে নভোচারী পাঠানোর সুযোগ করে দেবে।”

মিশনের অংশ হিসেবে, ডক করা মহাকাশযানটি সংযুক্ত হওয়ার পরে তাদের মধ্যে বৈদ্যুতিক শক্তি ট্রান্সফার করা যাবে। ভবিষ্যতের মিশনের সময় মহাকাশে রোবোটিক্স, মহাকাশযান নিয়ন্ত্রণ এবং পেলোড অপারেশন পরিচালনার জন্য এটি অপরিহার্য।

ভারতীয় মহাকাশ সংস্থা ইসরো এর আগে গত ৭ এবং ৯ জানুয়ারি দুবার ডকিংয়ের চেষ্টা চালিয়েছিল। কিন্তু প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে দুইবারই পরীক্ষা স্থগিত করতে বাধ্য হয়। এই আবহে আশঙ্কা করা হচ্ছিল, এই অভিযানে হয়তো লক্ষ্য পূরণের আগেই ইসরো হাল ছেড়ে দেবে এবং ডকিংয়ের চেষ্টা করা হবে না। তবে গত রবিবার এ সংক্রান্ত পরীক্ষায় সফলতা পায় ভারত। এরপর আজ ১৬ জানুয়ারি মহাকাশে দুটি মহাকাশযান সংযুক্ত করলো ইসরো।

সিএনএনের প্রতিবেদন বলছে, এর আগে ২০২৩ সালে চন্দ্র অভিযানে নতুন রেকর্ড গড়েছিল ভারত। বিশ্বের চতুর্থ দেশ হিসেবে চাঁদের মাটিতে ল্যান্ডার নামিয়েছিল। চন্দ্রযান-৩ নামের ওই মিশনের মধ্য দিয়ে বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে ভারত সফলভাবে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে মহাকাশযান অবতরণ করায়।

উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে, ভারত আগামী কয়েক বছরের মধ্যে মহাকাশে প্রথম ক্রু মিশন পাঠাবে এবং ২০৪০ সালের মধ্যে চাঁদে একজন নভোচারী পাঠাবে। চাঁদে নভোচারী পাঠানো একমাত্র দেশ এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র। 

ভারত ২০৩৫ সালের মধ্যে নিজস্ব মহাকাশ স্টেশন তৈরির লক্ষ্যও স্থির করেছে, যেটির নাম হবে “ভারতীয় অন্তরীক্ষ স্টেশন’। ২০২৮ সালে শুক্র গ্রহের প্রথম কক্ষপথ অভিযান চালাবে ভারত। চলমান চন্দ্রায়ণ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ২০২৭ সালে চাঁদের নমুনা পৃথিবীতে আনার পরিকল্পনাও রয়েছে ভারতের।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়