ঢাকা     শুক্রবার   ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২০ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

জার্মানির নির্বাচনে রক্ষণশীলদের জয়, চ্যান্সেলর হচ্ছেন ফ্রিডরিখ মের্ৎস

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:০৭, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫   আপডেট: ১৩:১১, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
জার্মানির নির্বাচনে রক্ষণশীলদের জয়, চ্যান্সেলর হচ্ছেন ফ্রিডরিখ মের্ৎস

জার্মানির জাতীয় নির্বাচনে রক্ষণশীল ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়ন (সিডিইউ) জয়ী হয়েছে। সোমবার সকালে (২৪ ফেব্রুয়ারি) প্রকাশিত প্রাথমিক ফলাফলে দেখা গেছে, সিডিইউ পেয়েছে ২৮ দশমিক ৮ শতাংশ ভোট, যা দলটিকে স্পষ্ট বিজয় এনে দিয়েছে। দলের নেতা ফ্রিডরিখ মের্ৎস নতুন চ্যান্সেলর হতে চলেছেন। 

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, গতকাল রোববার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ২০ দশমিক ৮ শতাংশ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে কট্টর ডানপন্থি দল আল্টারনেটিভ ফর জার্মানি (এএফডি)। আগের ২০২১ সালের নির্বাচনে এএফডি ১০ দশমিক ৩ শতাংশ ভোট পেয়ে পঞ্চম স্থানে ছিল, এবার রেকর্ড জয় পেয়ে ওই জায়গা থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে এসেছে।

আরো পড়ুন:

নির্বাচনে জিতে মেয়াৎস (৬৯) জোট সরকার গঠনের প্রস্তুতি শুরু করেছেন। কিন্তু ঐতিহাসিক উত্থানের মধ্য দিয়ে এএফডি দ্বিতীয় স্থান পাওয়ায় মেয়াৎসকে জোট গঠনে জটিল ও দীর্ঘ দরকষাকষির আলোচনার মধ্য দিয়ে যেতে হবে।

এএফডি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্কের সমর্থন পেয়ে ধন্য হলেও জার্মানির মূলধারার দলগুলো কট্টর ডানপন্থি দলটির সঙ্গে জোট গঠনের সম্ভাবনা নাকচ করেছে। ফলে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকলেও এএফডি দেশটির পরবর্তী সরকারের অংশ হতে পারবে না বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে।

বিভিন্ন দলের মধ্যে ভোট ভাগ হয়ে যাওয়া এই নির্বাচনে জার্মানির বর্তমান চ্যান্সেলর ওলাফ শলজের নেতৃত্বাধীন এসপিডি ১৬ দশমিক ৪ শতাংশ ভোট পেয়ে তৃতীয় হয়েছে।

এছাড়া, সমাজতান্ত্রিক দল ডি লিঙ্কে ৮ দশমিক ৫ শতাংশ ভোট পেয়েছে, যা পার্লামেন্টে প্রবেশের জন্য প্রয়োজনীয় ৫ শতাংশ সীমার অনেক ওপরে।  

শলৎজের নেতৃত্বাধীন ‘ট্রাফিক লাইট’ জোট বিভক্ত রাজনৈতিক অবস্থানের কারণে দীর্ঘদিন ধরে টিকে থাকলেও শেষ পর্যন্ত ভেঙে পড়ে, যার ফলে রবিবারের আগাম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। জার্মানির মতো স্থিতিশীল রাজনৈতিক ব্যবস্থায় এটি একটি বিরল ঘটনা।  

এই নির্বাচন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি হস্তক্ষেপের কারণে বিশেষভাবে আলোচিত হয়েছে এবং জার্মানির অভিবাসন নীতির ওপর নতুন করে বিতর্ক উসকে দিয়েছে।  

এদিকে, ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে কিয়েভ ও ইউরোপীয় নেতাদের বাদ রেখে রাশিয়ার সঙ্গে ট্রাম্পের শান্তি আলোচনার সিদ্ধান্ত ইউরোপ জুড়ে আলোড়ন তুলেছে।  

মের্ৎস এই বিষয়ে রবিবার বলেন, “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ‘স্বাধীনতা’ অর্জন তার প্রধান লক্ষ্য।” তিনি বলেন, “আমার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হবে ইউরোপকে দ্রুত শক্তিশালী করা, যেন আমরা ধাপে ধাপে সত্যিকারের স্বাধীনতা অর্জন করতে পারি।”  

তিনি আরো বলেন, “আমি কখনো ভাবিনি যে টেলিভিশনে আমাকে এমন কিছু বলতে হবে। কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক বক্তব্যের পর এটা স্পষ্ট যে, অন্তত এই প্রশাসনের একটি অংশ ইউরোপের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদাসীন।”  

তবে, নতুন সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জ কম নয়। নাজি যুগের পর থেকে জার্মানির স্থিতিশীলতা ও উন্নতি নির্ভর করেছে ন্যাটো জোট, সস্তা রুশ জ্বালানি এবং চীনের সঙ্গে বাণিজ্যের ওপর। কিন্তু এই ভিত্তি এখন দুর্বল হয়ে পড়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ইউক্রেন যুদ্ধ, যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং অভিবাসন সংকট মের্ৎস প্রশাসনের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়