ভারতের হামলায় পাকিস্তানের ১৩ সেনা নিহত, আহত ৭৮: আইএসপিআর

পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর মিডিয়া উইং (আইএসপিআর) জানিয়েছে, প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনার সময় ভারতের ‘উসকানিমূলক ও নিন্দনীয় হামলা’ থেকে পাকিস্তানকে রক্ষা করতে গিয়ে কমপক্ষে ১৩ জন সেনা নিহত এবং ৭৮ জন আহত হয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার আইএসপিআর এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে। খবর ডনের।
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক সংঘর্ষ শুরু হয় যখন ভারত পহেলগাম সন্ত্রাসী হামলার জন্য ইসলামাবাদকে দায়ী করে। ৬-৭ মে রাতে নয়াদিল্লি অপারেশন সিন্দুরের ব্যানারে পাকিস্তানে ধারাবাহিক বিমান হামলা চালায়, যার ফলে বেসামরিক লোক হতাহত হয়। এরপর উভয় পক্ষই ক্ষেপণাস্ত্র বিনিময় করে, যা সপ্তাহব্যাপী চলে। অবশেষে উভয় পক্ষকে তাদের বন্দুক ত্যাগ করতে মার্কিন হস্তক্ষেপের প্রয়োজন হয়।
শনিবার, যখন দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছিল, তখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি হয়েছে।
পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, ভারতীয় হামলায় ৪০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ৭ জন নারী এবং ১৫ জন শিশু রয়েছেন। এছাড়া আরো ১২১ জন বেসামরিক নাগরিক আহত হয়েছেন।
বিবৃতি অনুসারে, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নিহত সেনাদের মধ্যে রয়েছেন- নায়েক আব্দুল রহমান, ল্যান্স নায়েক দিলওয়ার খান, ল্যান্স নায়েক ইকরামুল্লাহ, নায়েক ওয়াকার খালিদ, হাবিলদার মুহাম্মদ নাভিদ, সিপাহি মুহাম্মদ আদিল আকবর এবং সিপাহি নিসার।
পাকিস্তান বিমান বাহিনীর নিহত সদস্যদের রয়েছেন- স্কোয়াড্রন লিডার উসমান ইউসুফ, চিফ টেকনিশিয়ান আওরঙ্গজেব, সিনিয়র টেকনিশিয়ান নাজিব, কর্পোরাল টেকনিশিয়ান ফারুক, সিনিয়র টেকনিশিয়ান মুবাশির এবং সিনিয়র টেকনিশিয়ান মুহাম্মদ আয়াজ।
বিবৃতিতে বলা হয়, “এই শহীদদের আত্মত্যাগ আমাদের জন্য চিরন্তন অনুপ্রেরণা- তাদের সাহস, দায়িত্ববোধ ও নিঃস্বার্থ দেশপ্রেম পাকিস্তানের ইতিহাসে অমলিন হয়ে থাকবে।”
আইএসপিআর-এর বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘অপারেশন বুনিয়ানুম মারসুসের মাধ্যমে পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনী মার্কা-ই-হকের ব্যানারে দৃঢ় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে, সুনির্দিষ্ট এবং উন্নত প্রতিশোধমূলক হামলা চালিয়েছে।"
আইএসপিআর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, “পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব বা ভৌগোলিক অখণ্ডতা যদি কেউ ভবিষ্যতে চ্যালেঞ্জ করে, তাহলে তার জবাব দেওয়া হবে দ্রুত, সর্বাত্মক ও চূড়ান্ত প্রতিক্রিয়া দিয়ে।”
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ ঘোষণা করেছেন, অপারেশন বুনিয়ানুম মারসুসের ‘মহান সাফল্য’ উপলক্ষে প্রতি বছর ১০ মে ‘ইউম-এ-মার্কা-ই-হক’ দিবস পালিত হবে।
তিনি আরো বলেন, প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে অসাধারণ সাফল্য অর্জনের জন্য সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্য এ বছর দিবসটি শুক্রবার, ১৬ মে পালিত হবে।
ঢাকা/ফিরোজ