সরাসরি: ‘ইসরায়েলের আছে প্রযুক্তির সক্ষমতা, দীর্ঘমেয়াদে শক্তিশালী ইরান’
নবম দিনে গড়িয়েছে ইরান-ইসরায়েল সংঘাত। উভয় পক্ষের পাল্টা-পাল্টি হামলায় হতাহত বাড়ছে। তবে এ সংঘাত দীর্ঘ মেয়াদী হলে ইরানের চেয়ে ইসরায়েল বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
দোহা ইনস্টিটিউট ফর গ্র্যাজুয়েট স্টাডিজের সহকারী অধ্যাপক মুহান্নাদ সেলুম বলেছেন, “এই যুদ্ধে ইসরায়েল প্রযুক্তিগতভাবে এগিয়ে থাকলেও, ইরানের আরো অনেক শক্তি রয়েছে।”
আলজাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হলে ইরানের পক্ষে পাল্লা ভারী হতে পারে।”
তিনি জানান, সংঘাত শুরুর পর থেকে ইসরায়েল আকাশপথে প্রায় সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছে। তবে তিনি উল্লেখ করেন, “ইরান আকারে ইসরায়েলের চেয়ে ৭০ গুণ বড়। ইরানিরা অনেক আঘাত সহ্য করতে পারে, আবার তাদের এমন অস্ত্রও আছে যা ইসরায়েলের ক্ষতি করতে পারে। অন্যদিকে, ইসরায়েলের এই যুদ্ধ দীর্ঘদিন চালিয়ে যাওয়ার সক্ষমতা নেই—তাদের হয় দ্রুত বিজয় নিশ্চিত করতে হবে, নয়তো কৌশলগত লক্ষ্য অর্জন করতে হবে।”
তিনি আরো বলেন, “আমরা এখন একটি সংকটময় পর্যায়ে আছি। কারণ দুই পক্ষই পুরোপুরি যুদ্ধ ঘোষণা না করলেও অস্ত্র ব্যবহারের মাত্রা ও গতি বেড়েই চলেছে।”
সেলুম উল্লেখ করেন, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নেতৃত্বে চালানো হামলায় পরিষ্কার হয়ে গেছে যে, ইসরায়েলের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘ভেঙে’ দেওয়া সম্ভব। আর ইরান এখন সেই একই কৌশল অবলম্বন করছে।
তিনি বলেন, “যদি যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হয়, তাহলে সেটা ইসরায়েলের জন্য ভালো হবে না। অধিকাংশ ইসরায়েলি বাংকারে থাকছেন। এ সংঘাতে তাদের অর্থনীতিও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।”
অন্যদিকে, ইরান প্রায় ৪০ বছর ধরে ‘জরুরি অবস্থা’র মধ্যেই রয়েছে। ইরান-ইরাক যুদ্ধের পর থেকে দেশটি অবরোধ ও ভিন্নধর্মী অর্থনীতি নিয়ে টিকে আছে—যা তাদের দীর্ঘ লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত রেখেছে।
সেলুম বলেন, “আমরা এমন দুটি দেশের মুখোমুখি লড়াই দেখছি, যাদের কাঠামো, প্রস্তুতি এবং বাস্তবতা একেবারেই ভিন্ন।”
গত ১৩ জুন থেকে আঞ্চলিক উত্তেজনা ব্যাপকভাবে বেড়েছে। ইসরায়েল ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনা লক্ষ্য করে বিমান হামলা শুরু করে, যার জবাবে তেহরান প্রতিশোধমূলক হামলা চালায়। দুই পক্ষের মধ্যে হামলা ও পাল্টা হামলা এখনো অব্যাহত রয়েছে।
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কমপক্ষে ২৪ জন নিহত এবং কয়েশ শ’ আহত হয়েছে। ইরান জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ২২৪ জন নিহত এবং ১,০০০ এরও বেশি আহত হয়েছে।
মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার একজন কর্মকর্তার মতে, ইসরায়েলের হামলা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে কেবল কয়েক মাসের জন্য পিছিয়ে দিয়েছে। সিএনএন জানিয়েছে, হামলায় ইরানের নাতানজ পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ স্থাপনার উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতি হলেও, ফোরদোর ভারী সুরক্ষিত স্থাপনাটির তেমন কোনো ক্ষতি করতে পারেনি ইসরায়েল।
ঢাকা/ইভা