ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৫ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

মোদিকে নিয়ে অশালীন মন্তব্য: পশ্চিমবঙ্গ ও বিহারে কংগ্রেসের দপ্তরে হামলা

কলকাতা ব্যুরো || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:০৯, ২৯ আগস্ট ২০২৫   আপডেট: ১৭:২৪, ২৯ আগস্ট ২০২৫
মোদিকে নিয়ে অশালীন মন্তব্য: পশ্চিমবঙ্গ ও বিহারে কংগ্রেসের দপ্তরে হামলা

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং তার প্রয়াত মাকে নিয়ে অশালীন মন্তব্যের জেরে হামলার ঘটনা ঘটেছে বিহার ও পশ্চিমবঙ্গে। শুক্রবার দুই রাজ্যেই কংগ্রেস দপ্তরে ঢুকে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে বিজেপি কর্মী সমর্থকদের বিরুদ্ধে। সংবাদমাধ্যমের হাতে ইতিমধ্যেই যে ভিডিও এসেছে তাতে দেখা যাচ্ছে, দুই দলের কর্মীরা দলীয় পতাকার ডান্ডা দিয়ে একে অপরকে মারছেন। দুই রাজ্যেই সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হয়েছেন দুই দলের বেশ কয়েকজন নেতা কর্মী।  

‘ভোটার অধিকারের যাত্রা’ চলাকালে দরভাঙ্গায় কংগ্রেসের পতাকা গায়ে জড়ানো এক ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে অশ্লীল মন্তব্য করেন। ওই ভিডিও ভাইরাল হতেই বিজেপি থানায় এফআইআর দায়ের করে এবং কংগ্রেসের কাছে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানায়।

পরে দরভাঙ্গা পুলিশ জানিয়েছে, ওই ঘটনায় অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

এক্স-এ দারভাঙ্গা পুলিশ লিখেছে— “সিমরি থানায় মামলা নথিভুক্ত হয়েছে। এক অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পেশ করা হচ্ছে।”

কিন্তু ঘটনা এখানেই থেমে থাকেনি।শুক্রবার বিহারের পাটনায় রাস্তায় নেমে প্রতিবাদে করে বিজেপি। পাল্টা কংগ্রেস কর্মীরাও মাঠে নামতেই দুই শিবিরের মধ্যে মারপিট লেগে যায়। সামাল দিতে নামানো হয় বিশাল পুলিশ বাহিনী। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা গেলেও পাটনাজুড়ে রয়েছে থমথমে পরিস্থিতি। 

এদিকে বিহারের আঁচ এসে পড়ে কলকাতাতেও। কলকাতায় জাতীয় কংগ্রেসের রাজ্য সদর দপ্তর বিধান ভবনের সামনে শুক্রবার বিক্ষোভ সমাবেশ আয়োজন করে বিজেপি। বিক্ষোভ সমাবেশ চলাকালে বিজেপি সমর্থকরা কংগ্রেস দপ্তরে ঢুকে ভাঙচুর ও তাণ্ডব চালান বলে অভিযোগ। বিজেপি নেতা রাকেশ সিংয়ের নেতৃত্বে ভবনের বাইরে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে বলেও অভিযোগ। লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর ছবিসহ একাধিক ব্যানার, পোস্টারও ছেড়ার অভিযোগ উঠেছে। গোটা ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে রাজ্য কংগ্রেস। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে এন্টালি থানায়। 

গোটা ঘটনার নিন্দা জানিয়ে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র সৌম্য আইচ রায় বলেন, “রাজনীতিতে দেউলিয়া না হলে কেউ এই কাজ করে না। গোটা দেশে কংগ্রেস যেহেতু বিজেপির চুরি ধরছে তাই তাদের রাগ আমাদের দলের উপর। এই কাজ করার জন্য এমন একটা সময় তারা বেছে নিয়েছে যখন দপ্তর ফাঁকা ছিল। আমরা রাজ্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছি দোষীদের বিরুদ্ধে যেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়।” 

বিহার কংগ্রেসের নেতা অশুতোষের অভিযোগ, “ঘটনায় সরকারেরই মদত রয়েছে। নীতীশ কুমার ভুল করছেন। আমরাও জবাব দেব।”

এদিকে বিজেপি নেতা নীতিন নবীন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলছেন, “মায়ের অপমানের বদলা বাংলার প্রতিটি ছেলে কংগ্রেসকে দেবে। এর জবাব আমরা অবশ্যই নেব।”

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কড়া ভাষায় নিন্দা করে লেখেন, “রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে কংগ্রেস রাজনীতি সবচেয়ে নীচে নেমে গিয়েছে। একজন গরিব মায়ের ছেলে ১১ বছর ধরে প্রধানমন্ত্রী পদে বসে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, তা তারা মেনে নিতে পারছে না। প্রধানমন্ত্রীকে এবং তার প্রয়াত মাকে নিয়ে এই ধরনের ভাষা কেবল লজ্জাজনকই নয়, গণতন্ত্রের উপরও কলঙ্ক।”

বিজেপি সভাপতি জে পি নাড্ডা লেখেন, “এই ধরনের অশালীন আক্রমণ সব সীমা ছাড়িয়েছে। রাহুল গান্ধী ও তেজস্বী যাদবের ক্ষমা চাওয়া উচিত।”

ঘটনার তীব্র সমালোচনা করে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার বলেছেন, “প্রধানমন্ত্রী এবং তার প্রয়াত মাকে নিয়ে অশ্লীল মন্তব্য করা অনুচিত। আমি এর তীব্র নিন্দা করছি।”

সুচরিতা/শাহেদ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়