ঢাকা     মঙ্গলবার   ০৭ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২৪ ১৪৩১

তরুণীকে পৈশাচিক নির্যাতন: নারী পাচার চক্রের ৪ সদস্য রিমান্ডে

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:৫১, ২ জুন ২০২১   আপডেট: ২৩:০৮, ২ জুন ২০২১
তরুণীকে পৈশাচিক নির্যাতন: নারী পাচার চক্রের ৪ সদস্য রিমান্ডে

ফাইল ছবি

সম্প্রতি ভারতে বাংলাদেশি তরুণীকে পৈশাচিক নির্যাতনের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আন্তর্জাতিক নারী পাচার চক্রের চার সদস্যের ৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

বুধবার (২ জুন) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম ইয়াসমিন আরার আদালত শুনানি শেষে রিমান্ডের আদেশ দেন।

রিমান্ডে যাওয়া আসামিরা হলেন- নারী পাচার চক্রের অন্যতম মূলহোতা আশরাফুল মন্ডল ওরফে বস রাফি, আব্দুর রহমান শেখ ওরফে আরমান, ইসমাইল সরদার ও মোছা. সাহিদা বেগম ওরফে মেডাম সাহিদা।

এরআগে রাজধানীর হাতিরঝিল থানার দায়ের করা মানব পাচারসহ পর্নোগ্রাফি আইনের মামলায় তদন্ত ককর্মকর্তা হাতিরঝিল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুক আসামিদের আদালতে হাজির করে প্রত্যেকের ১০ দিন করে রিমান্ড আবেদন করেন।

আবেদনে বলা হয়, গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত বলে স্বীকার করে। এ আসামিরা অপরাপর সহযোগীদের সহায়তায় ঢাকা মহানগরীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বিভিন্ন সহজ-সরল নারীদের বিভিন্ন লোভনীয় কথাবার্তার মাধ্যমে নারীদের আকৃষ্ট করে ভারতসহ বিভিন্ন দেশে পাচার করে যৌনকর্মী হিসেবে কাজ করতে বাধ্য করে। 

বিভিন্ন অশ্লীল স্থিরচিত্র ও ভিডিও চিত্র বিভিন্ন ইলেকট্রিক ডিভাইসের মাধ্যমে ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেবে বলে হুমকি প্রদান করে যৌনকর্মে বাধ্য করে বলে স্বীকার করে।

আসামিরা নারী পাচারকারী দলের সক্রিয় সদস্য। এরা ছাড়াও তাদের অপরাপর সহযোগী আসামিরা পরস্পর যোগসাজসে ভারত সীমান্ত দিয়ে মানব পাচার করে। আসামিদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে অপরাপর সহযোগী দেশীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে মানব পাচারের সঙ্গে জড়িত আসামিদের সনাক্ত, কারা মানব পাচারে অর্থযোগানদাতা ও মামলার মূল রহস্য উদঘাটনের সম্ভাবনা রয়েছে। 

এ অবস্থায় আসামিদের ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থণা করেন তদন্ত কর্মকর্তা। আসামি পক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। তবে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে জামিনের বিরোধিতা করা হয়। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত রিমান্ডের আদেশ দেন।

এরআগে পার্শ্ববর্তী দেশে নারী পাচার এবং সম্প্রতি বাংলাদেশি তরুণীকে পৈশাচিক নির্যাতনের ঘটনায় এ চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।

উল্লেখ‌্য, চার-পাঁচ জন তরুণ-তরুণী মিলে এক তরুণীকে বিবস্ত্র করে পৈশাচিক শারীরিক ও যৌন নির্যাতন করে। সেই ঘটনার ভিডিও ধারণ করে সেটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিলে ভাইরাল হয়। 

ভিডিওটি সাইবার মনিটরিং টিমের নজরে এলে পুলিশ অনুসন্ধান শুরু করে। পরে নির্যাতক হিসেবে রিফাতুল ইসলাম ওরফে ‘টিকটক হৃদয় বাবু’কে সনাক্ত করে পুলিশ। তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে জানা যায়, চার মাস আগে বাসা থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে তাকে।

পরে পুলিশ কৌশলে হৃদয়ের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর থেকে জানতে পারে, মাস তিনেক আগে সে ভারতে গেছে। ওই ঘটনা ঘটেছে ভারতের কেরালায়। ১৫-২০ দিন আগে। মেয়েটিকে নির্যাতন করার সময় তার সঙ্গে ছিল হৃদয়ের কয়েকজন বন্ধু-বান্ধব। নির্যাতনের শিকার মেয়েটির বাড়ি কিশোরগঞ্জ। 

ওই ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে মানব পাচার আইন ও পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা দায়ের করেন ওই তরুণীর বাবা।

ঢাকা/মামুন/সনি

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়