ঢাকা     রোববার   ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ৩০ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

কোটাবিরোধী আন্দোলন

ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড় অবরোধ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:৪২, ৭ জুলাই ২০২৪   আপডেট: ১৮:২২, ৭ জুলাই ২০২৪
ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড় অবরোধ

শাহবাগ-চানখারপুল অবরোধের পর এবার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড় অবরোধ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা। রোববার (৭ জুলাই) বিকেল ৪টায় ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড় অবরোধ করেন তারা।

এদিন, ৩টা ৫০ মিনিটে শাহবাগ মোড় অবরোধ শেষে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ের দিকে আসেন। এ সময় চারপাশের রাস্তা বন্ধ করে দিয়ে মোড় অবরোধ করেন। 

এ সময় আটকে পড়া যাত্রী এবং বাস চালকদের উদ্দেশ্য করে আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আপনারা যেসব যাত্রী, গাড়িচালক ভাইয়েরা, ভেতর বসে আছেন, আপনার কিংবা আপনাদের সন্তানের জন্যই আমাদের আন্দোলন। যাদের কোনও কোটা নেই, তারা যেন পড়ালেখা করে চাকরি পায়, তারা যেন বঞ্চিত না হয় সেজন্যই আমাদের এ আন্দোলন। দয়া করে আমাদের সহযোগিতা করুন। সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে আজকের সামান্য কষ্ট সহ্য করুন।

এর আগে, বিকেল ৩টায় শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি হল থেকে আলাদা ব্যানার নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়য়ের সেন্ট্রাল লাইব্রেরির সামনে জড়ো হন। পরে সেখান থেকে বিশাল মিছিল নিয়ে হলপাড়া-ভিসি চত্বর-টিএসসি হয়ে বিকেল পৌনে ৪টায় শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন। এ সময় সুফিয়া কামাল হল, অমর একুশে হল, শহীদুল্লাহ হলের শিক্ষার্থীরা চানখারপুল অবরোধ করেন। 

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা ছিল। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা, ১০ শতাংশ নারী, অনগ্রসর জেলার বাসিন্দাদের জন্য ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষের জন্য ৫ শতাংশ আর প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য ১ শতাংশ আসন সংরক্ষিত ছিল।

ওই বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোটা সংস্কারের দাবিতে বড় বিক্ষোভ হয়। কোটা ব্যবস্থার সংস্কার করে ৫৬ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার দাবি জানিয়েছিলেন তখনকার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। পরে সরকারি চাকরিতে (প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে) সব ধরনের কোটা বাতিল করে পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

২০২১ সালে সেই পরিপত্রের ‘মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলে’র অংশটিকে চ্যালেঞ্জ করে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান উচ্চ আদালতে একটি রিট আবেদন করেন। সেই রিটের রায়ে চলতি বছরের ৫ জুন পরিপত্রের ওই অংশ অবৈধ ঘোষণা করেন আদালত। এরপর ৯ জুন হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। ওইদিন এই আবেদন শুনানির জন্য আপিল বিভাগে পাঠিয়ে দেন চেম্বার আদালত।

সেদিন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেছিলেন, সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায় বহাল থাকবে নাকি বাতিল হবে সে ব্যাপারে আপিল বিভাগ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।

পরে গত ৪ জুলাই প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের সরকারি সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় আপাতত বহাল রাখার নির্দেশ দেন এবং এই রায় প্রকাশের পর রাষ্ট্রপক্ষকে নিয়মিত আপিল করার পরামর্শ দেন।

হাইকোর্ট কোটা বাতিলের সরকারি সিদ্ধান্তকে অবৈধ ঘোষণা করার পর থেকেই আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। তারা ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল রাখার দাবি জানাচ্ছেন।

মাকসুদ/এনএইচ 

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়