সিগারেটের দাম নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া
হাসিবুল ইসলাম মিথুন : আগামী অর্থবছরের (২০১৯-২০) বাজেট পাস হওয়ার আগেই পাইকারি ও খুচরা বাজারে বেড়েছে সিগারেটের দাম। দাম বাড়া নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন ধূমপায়ী ও অধূমপায়ীরা।
অধূমপায়ীরা বলছেন, সিগারেটের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব খুবই ভালো হয়েছে। আবার ধূমপায়ীরা বলছেন, এটা ঠিক হয়নি।
নিয়ম অনুযায়ী আগামী জুলাইয়ে বাজেট বাস্তবায়ন শুরু হবে । অথচ বাজেট উত্থাপনের আগে থেকেই বাজারে সব ধরনের সিগারেটের দাম বেড়েছে।
গত বৃহস্পতিবারের জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত বাজেটে বেশকিছু পণ্য ও সেবার ওপর বাড়তি কর আরোপের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
রাজধানীর ধানমন্ডি ১৫ নম্বর এলাকার যুবক তামিম হোসেনের সঙ্গে কথা হয় একটি চা-সিগারেটের দোকানে। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে রাইজিংবিডিকে বলেন, আমি ছাত্র মানুষ। এখনো কোনো জব করছি না। বাসা থেকে টাকা পাঠায়, সেই টাকায় সারা মাস চলতে হয়। এর আগে একটি বেনসন সিগারেটের দাম ছিল ১০ টাকা, সেখান থেকে হয়েছে ১২ টাকা, এখন হয়েছে ১৫ টাকা। এভাবে দাম বাড়তে থাকলে কীভাবে চলব, সেটাই বুঝতে পারছি না।
তিনি বলেন, এভাবে দাম বাড়তে থাকলে একটা সময় আমাদের গল্পের মতো করে বলতে হবে যে, আমরা কোনো এক সময় বেনসন সিগারেট খেতাম।
এমন অনেক ধূমপায়ী একই অভিযোগ করেছেন। তারা সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে বলেন, বাজেটে সিগারেটের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব পাস হওয়ার আগে আবারো পুনর্বিবেচনা করতে হবে।
ভিন্ন মত প্রকাশ করছেন অধূমপায়ীরা। কথা হয় আরিফুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, সিগারেট খাওয়াটা আসলে এক ধরনের নেশা। যারা খায় তারা সহজে এটা ছাড়তে পারে না।
তিনি বলেন, আগামী বাজেটে সিগারেটের দাম বাড়ানোর বিষয়ে সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটা খুব ভালো একটা সিদ্ধান্ত বলে আমি মনে করছি। কারণ, সিগারেট খাওয়া শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। আমরা কেন জেনে-শুনে এই বিষ পান করব।
তিনি আরো বলেন, যারা সিগারেট খায়, তারা এতো সহজে এই নেশা ছাড়তে পারবে না। তাই দাম সিগারেটের দাম বাড়লে অনেকেই খাওয়া আগের তুলনায় কমিয়ে দেবেন। আগে যারা দিনে ১০টা সিগারেট এখন খেতো, তারা হয়তো ৭ থেকে ৮টা খাবে। এতে শরীরের ক্ষতি কিছুটা হলেও কম হবে।
শুধু আরিফুল ইসলাম না, এমন মত দিয়েছেন অনেকেই। তাদের ধারণা দাম বাড়লে সিগারেট খাওয়া আগের তুলনায় অনেক কমবে।
এদিকে, বাজেট পাস হওয়ার আগেই দাম বাড়িয়ে দিয়েছে সিগারেট কোম্পানিগুলো। খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কোম্পানিগুলো দাম বাড়িয়ে দেওয়ার কারণেই তাদের বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
সিগারেটের দাম বাড়ার বিষয়ে ধানমন্ডির সেলিম টি স্টলের মোহাম্মদ সেলিম রাইজিংবিডিকে বলেন, গত সপ্তাহ থেকেই সিগারেটের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে কোম্পানিগুলো। বেনসন সিগারেট প্রতি কার্টন কিনতে হচ্ছে ২ হাজার ৪৬০ টাকায়, যা আগে ছিল ২১০০ টাকা। তাই বেশি দামে তাদের বিক্রি করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বেনসন প্রতি শলাকা বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকায়, যা গত সপ্তাহেও ছিলো প্রতি শলাকা ১২ টাকা। মার্লবোরো প্রতি শলাকায় ৩ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকা। গোল্ডলিফ প্রতি শলাকায় ১ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকা। প্রতি শলাকায় ১ টাকা করে বেড়ে স্টার সিগারেট বিক্রি হচ্ছে ৭ টাকা, নেভি ৭ টাকা, পাইলট সিগারেট ৫ টাকা, হলিউড সিগারেট ৫ টাকা, ডারবি সিগারেট ৫ টাকা, শেখ সিগারেট ৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৫ জুন ২০১৯/হাসিবুল/রফিক
রাইজিংবিডি.কম