১০ ট্রাক অস্ত্র মামলার রায় বৃহস্পতিবার
আদালত ও বিচারকের বাসভবনে নিরাপত্তা
রেজাউল করিম || রাইজিংবিডি.কম
ফাইল ফটো : ১০ ট্রাক অস্ত্র
জেলা প্রতিবেদক
চট্টগ্রাম, ২৮ জানুয়ারি : চট্টগ্রামের চাঞ্চল্যকর ও দেশব্যাপী আলোচিত ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলার রায় ঘোষণা হচ্ছে। আর এ রায়কে কেন্দ্র করে কঠোর নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)।
আগামী বৃহস্পতিবার এই অস্ত্র মামলার রায় ঘোষণার নির্ধারিত দিন।
রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে সংশ্লিষ্ট মামলার বিচারক মহানগর দায়রা জজ এস এম মুজিবুর রহমানের আদালত ও বাসভবনে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে ‘রাতদিন ২৪ ঘণ্টার’ এই নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত বহাল থাকবে। মঙ্গলবার মামলার বিচারক মহানগর দায়রা জজ এস এম মুজিবুর রহমানের বাসভবনের সামনে গিয়ে দেখা গেছে, সেখানে সশস্ত্র ১০ জন পুলিশ সদস্য সতর্ক অবস্থায় দায়িত্ব পালন করছেন।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (কোর্ট) মোহাম্মদ রেজাউল মাসুদ জানিয়েছেন, ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলার বিচারকের আদালত ও বাসভবনে দুই শিফটে ১০ জন করে ২০ জন পুলিশ সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন।
এ ছাড়া বিচারকের চলাচলের সময়ও পুলিশি স্কট বাড়ানো হয়েছে। কড়া পুলিশি নজরদারিতে রয়েছে বিচারকের বাসভবন।
পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার ৩০ জানুয়ারি চাঞ্চল্যকর ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলার রায়কে কেন্দ্র করে বিচারকের কক্ষ, আশপাশের এলাকা ও পাঁচলাইশ থানাসংলগ্ন বিচারকের বাসভবনে কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা নিতে কোর্ট পুলিশ ও মহানগর পুলিশের জরুরি সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বিচারকের বাসভবনে নিরাপত্তার ব্যাপারে জানা গেছে, এই বাসার নিয়মিত সিকিউরিটি গার্ড ও গানম্যানের পাশাপাশি পাঁচলাইশ থানা পুলিশের মোবাইল টিম সার্বক্ষণিক বাসাটি নজরদারিতে রাখছে। বাসার সামনে-পেছনে ১০ জন পুলিশ দায়িত্ব পালন করছেন ২৪ ঘণ্টা।
উল্লেখ্য, প্রায় ১০ বছর পর সর্বশেষ গত ১৩ জানুয়ারি শুনানি শেষে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ ও বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক এস এম মজিবুর রহমান আগামী ৩০ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন।
প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল বিসিআইসির সার কারখানা চিটাগং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেড (সিইউএফএল) জেটিঘাটে ১০ ট্রাক অস্ত্রের চালানটি ধরা পড়ে। এ ঘটনায় কর্ণফুলী থানায় অস্ত্র আইনে ও চোরাচালানের অভিযোগে দুটি মামলা হয়। মামলা দুটির সাক্ষ্য গ্রহণ চলাকালে বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে রাষ্ট্রপক্ষের তৎকালীন আইনজীবী মহানগর পিপি আহসানুল হক হেনার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে অধিকতর তদন্তের আদেশ দেন আদালত।
সাড়ে তিন বছর তদন্তের পর ২০১১ সালের ২৬ জুন নতুনভাবে আরও ১১ আসামির নাম অন্তর্ভুক্ত করে আদালতে ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলার সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করেন সিআইডির চট্টগ্রাম অঞ্চলের তৎকালীন এএসপি মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান চৌধুরী।
একই বছরের ১৫ নভেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করা হয়। ২০১১ সালের ২৯ নভেম্বর থেকে সাক্ষ্য গ্রহণের মধ্য দিয়ে এ মামলার বিচারকাজ শুরু হয়। সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিলের পর থেকে এ মামলায় অতিরিক্ত তদন্তকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান চৌধুরীসহ ৩০ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দেন।
মামলার আসামিদের মধ্যে হাজতে থাকা হাইপ্রোফাইল ১১ আসামি হচ্ছেন : জামায়াত নেতা মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআইয়ের তৎকালীন মহাপরিচালক অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুর রহিম, সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআইয়ের তৎকালীন পরিচালক অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, এনএসআইয়ের সাবেক পরিচালক অবসরপ্রাপ্ত উইং কমান্ডার সাহাবুদ্দিন, উপপরিচালক অবসরপ্রাপ্ত মেজর লিয়াকত হোসেন, ফিল্ড অফিসার আকবর হোসেন খান, রাষ্ট্রায়ত্ত সার কারখানা সিইউএফএলের সাবেক এমডি মোহসীন তালুকদার, সাবেক মহাব্যবস্থাপক এনামুল হক, ট্রলার মালিক দীন মোহাম্মদ এবং চোরাচালানি হিসেবে অভিযুক্ত হাফিজুর রহমান।
রাইজিংবিডি / রেজাউল করিম / সোহাগ / ক.কর্মকার
রাইজিংবিডি.কম