ঢাকা     বুধবার   ১৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৪ ১৪৩১

মহাসড়কে বসছে এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র  

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:০৫, ২৮ মার্চ ২০২১   আপডেট: ২১:০৪, ২৮ মার্চ ২০২১
মহাসড়কে বসছে এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র  

দেশের সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের আওতাধীন গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কে পণ্য পরিবহনের উৎসমুখে এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এই প্রকল্পের আওতায় সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের পূর্বজোনের ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, সিলেট ও কুমিল্লা জোনে এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে।  প্রকল্পে ব্যয় হবে ৩০১ কোটি ৩৫ লাখ ৬১ হাজার টাকা। ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।

সূত্র জানায়, টেকসই, নিরাপদ ও ব্যয় সাশ্রয়ী (পরিবহন ব্যয় ও সময়) সড়ক অবকাঠামো এবং সমন্বিত যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের আওতাধীন গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কে পণ্য পরিবহনের উৎসমুখে এসব এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। প্রকল্পের মূখ্য উদ্দেশ্য হচ্ছে অনুমোদিত ওজন সীমার অতিরিক্ত পণ্য পরিবহন নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সড়কের নির্ধারিত ডিজাইন লাইফ নিশ্চিত করা।  প্রকল্পের আওতায় ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, সিলেট ও কুমিল্লা সড়ক জোনে এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র স্থাপনের প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে।

সূত্র জানায়, ‘সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের আওতাভুক্ত গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কে পণ্য পরিবহনের উৎসমুখে এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র স্থাপন’ শীর্ষক প্রকল্পটি ১৬৩০ কোটি ২৭ লাখ ৯১ হাজার  টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২২ সালের ৩০ জুন  মেয়াদে গত ২০১৯ সালের ৩ সেপ্টেম্বর একনেক সভায় অনুমোদিত হয়। সে প্রেক্ষিতে ২০১৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর প্রকল্পের প্রশাসনিক আদেশ জারি করা হয়। প্রকল্পটির ক্রয় পরিকল্পনায় পূর্ত কাজের জন্য ২টি প্যাকেজ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তার মধ্যে বিবেচ্য প্যাকেজ নম্বর-পিডব্লিউ-০১ এর প্রাক্কলিত দাম ৩১০ কোটি ৭০ লাখ ৭২ হাজার টাকা এবং অনুমোদিত দাপ্তরিক প্রাক্কলিত দাম ৩০৭ কোটি ৫০ লাখ ৬২ হাজার ৮৩৯ টাকা।  

সূত্র জানায়, প্রকল্পের আওতায় ৪ তলা ফাউন্ডেশনের ওপর ২ তলা বিল্ডিং নির্মাণ, ক্যাফেটেরিয়া, ভূমি উন্নয়ন ১৩৮০৯৬১.৮০ ঘনমিটার, রিজিড পেভমেন্ট নির্মাণ ১২৫৯৩৮ বর্গমিটার, ফ্লেক্সিবল পেভমেন্ট নির্মাণ ৩৭৯০ বর্গমিটার, আরসিসি ড্রেন নির্মাণ ১৫৮০০ মিটার ইত্যাদি কাজ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

বর্তমানে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের সব দরপত্র সিপিটিইউ কর্তৃক প্রণীত ই-জিপি (ইলেক্ট্রনিক গভমেন্ট প্রকিউরমেন্ট) পদ্ধতির মাধ্যমে আহ্বান করা হয়ে থাকে। পূর্ত কাজ সম্পাদনের জন্য ২০২০ সালের ২৮ অক্টোবর ই-জিপিতে উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করা হয়।

দরপত্রের নির্ধারিত সময় সীমার মধ্যে মোট ২টি দরপত্র জমা পড়ে।  গত ২০২০ সালের ১৪ ডিসেম্বর দরপত্র উন্মুক্তকরণ কমিটি (টিওসি) দরপত্রগুলো উন্মুক্ত করে এবং দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির (টিইসি) কাছে উপস্থাপন করে।

দরপত্রে অংশ নেওয়া দরদাতা প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্স ৩০১ কোটি ৩৫ লাখ ৬১ হাজার টাকা উল্লেখ করে সর্বনিম্ন দরদাতা এবং স্পেকট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড ৩০৪ কোটি ৩২ লাখ ২৮ হাজার টাকা উল্লেখ করে দ্বিতীয় দরদাতা হয়।

দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি কর্তৃক যাচাই-বাছাই করার পর দরদাতা ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড সর্বনিম্ন মূল্যায়িত রেসপনসিভ দরদাতা হিসেবে বিবেচিত হয়। প্রতিষ্ঠানটির উদ্ধৃত দর ৩০১ কোটি ৩৫ লাখ ৬১ হাজার টাকা।

উল্লেখ্য, এ কাজের অনুমোদিত দাপ্তরিক প্রাক্কলিত দাম ৩০৭ কোটি ৫০ লাখ ৬২ হাজার টাকা। অর্থাৎ সর্বনিম্ন দরদাতার মূল্যায়িত দর অনুমোদিত দাপ্তরিক প্রাক্কলিত দামের চেয়ে ২.০০০ শতাংশ কম।  অনুমোদিত দাপ্তরিক প্রাক্কলন সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর এবং পিডব্লিউডি এর সিডিউল অব রেইট ২০১৮ অনুসরণে প্রস্তুত করা হয়।

সূত্র জানায়, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে মহাসড়কে অতিরিক্ত পণ্য বোঝাই যানচলাচল নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে পাশাপাশি জাতীয় মহাসড়কগুলো অতিরিক্ত লোড থেকে রক্ষা পাবে এতে সড়কের স্থায়ীত্বকাল বাড়বে। বর্তমানে যে সড়কের উপর দিয়ে ১০ টন ক্ষমতা সম্পন্ন যানবাহন চলাচলের কথা,কোন নিয়ন্ত্রণ না থাকায় দ্বিগুন থেকে আড়াইগুন বেশি পণ্য পরিবহন করা হচ্ছে। এতে সড়কগুলো বেহাল অবস্থা সৃষ্টি হচ্ছে। এতে মহসড়কের রক্ষাণাবেক্ষণ ব্যয় প্রতি বছরই বাড়ছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে এ অবস্থার অবসান হবে।

হাসনাত/সাইফ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়