ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

ভারত থেকে এক লাখ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল আসছে

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৪২, ৫ এপ্রিল ২০২১   আপডেট: ১৫:২৬, ৫ এপ্রিল ২০২১
ভারত থেকে এক লাখ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল আসছে

দুর্যোগের কারণে দেশে ধান উৎপাদন ব‌্যাহত হওয়ায় সরকারে খাদ্য মজুতের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হয়নি। এ অবস্থায়  রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে জি-টু-জি পদ্ধতিতে ভারতের সরকারি প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ফেডারেশন অব ফার্মার্স প্রকিউরমেন্ট প্রসেসিং অ্যান্ড রিটেইলিং কো-অপারেটিভ ইন্ডিয়া লিমিটেড (এনএসিওএফ)  থেকে ১.০০ লাখ মেট্টিক টন নন-বাসমতি সিদ্ধ চাল কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

সূত্র জানায়, উন্নত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে জনসাধারণের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে খাদ্য মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও কৃষকের উৎসাহমূল্য দেওয়ার লক্ষ্যে সরকার প্রতি বোরো ও আমন মৌসুমে ধান চাল কিনে থাকে। কিন্তু বিগত বোরো ২০২০ মৌসুমে সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ৫৪.৪৯ শতাংশ অর্জিত হয়েছে।

অন্যদিকে, চলতি আমন সংগ্রহ মৌসুমে ২.০৭ লাখ মেট্টিক টন ধান এবং ৬.৫০ লাখ মেট্টিক টন চাল সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে গত ১৫ মার্চ পর্যন্ত মাত্র ৭২,২৫৬ মেট্টিক টন চাল ও ১২,২০৯ মেট্টিক টন ধান সংগৃহীত হয়েছে।  সর্বশেষ গত ৩১ মার্চ তারিখের দৈনিক খাদ্যশস্য পরিস্থিতি প্রতিবেদন অনুসারে মজুতের পরিমাণ চাল ৪.১৪ লাখ মেট্টিক টন ও গম ০.৭২ লাখ মেট্টিক টন সর্বমোট ৪.৮৬ লাখ মেট্টিক টন।

এমন পরিস্থিতিতে সরকারি বিতরণ ব্যবস্থা সচল রাখাসহ নিরাপত্তা মজুত সুসংসহত করার স্বার্থে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহবানের পাশাপাশি সরকার থেকে সরকার (জি টু জি) পর্যায়ে চাল আমদানির কার্যক্রমও গ্রহণ করা হয়েছে।

সূত্র জানায়, দ্রুত সময়ে খাদ্যশস্য আমদানি এবং খাদ্যশস্য প্রাপ্তির নিশ্চয়তা বাড়ানোর লক্ষ্যে বিভিন্ন উৎস থেকে খাদ্যশস্য আমদানি করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে ভারতের এনএসিওএফ-এর প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে দিল্লিস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনারের মাধ্যমে ভারতীয় প্রতিষ্ঠানটির প্রতিনিধিদলকে ভার্চুয়াল সভায় অংশ নিতে জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়। আমন্ত্রণের পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠানটির প্রতিনিধিদের সঙ্গে গত ২৫ মার্চ তারিখে বাংলাদেশের জি টু জি পদ্ধতিতে ক্রয় বিষয়ক নেগোসিয়েশন কমিটির ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হয়।  সভায় চালের বিনির্দেশসহ চুক্তিনামার শর্তাদি এবং দাম নিয়ে বিশদ আলোচনা ও নেগোসিয়েশন হয়।  আলোচনা ও নেগোসিয়েশন শেষে ভারত থেকে  ১.০০ লাখ মেট্টিক টন নন বাসমতি সিদ্ধ চাল আমদানির লক্ষ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়।

সূত্র জানায়, পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন, ২০০৬ এর ৩৩ ধারায় ৬৮ (১) ধারায় রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে বা বিপর্যকর কোন ঘটনা মোকাবিলা করার জন্য জনস্বার্থে সরকার কর্তৃক গঠিত অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সুপারিশক্রমে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি অনুসরণ করে ক্রয় কার্য সম্পন্ন করার বিষয় উল্লেখ আছে। বর্তমান পর্যায়ে সরকারি সংরক্ষণাগারে খাদ্য মজুত বৃদ্ধি করে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণসহ সরকারি খাদ্য বিতরণ কর্মসূচি অব্যাহত রেখে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর খাদ্য নিরাপত্তা বলয় সুসংহতকরণ এবং খাদ্যশস্যের বাজার মূল্য স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি অনুসরণ করে সরকার থেকে সরকার পর্যায়ে জরুরি ভিত্তিতে খাদ্যশস্য আমদানির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

সূত্র জানায়, ভারত থেকে ১.০০ লাখ মেট্টিক টন নন বাসমতি সিদ্ধ চাল কেনার জন্য আনুমানিক ৩৬৭ কোটি ৯৬ লাখ ৮৪ হাজার টাকা প্রয়োজন হবে, যা পিপিআর ২০০৮ এর বিধি ৭৬ (২) এ উল্লেখিত দাম সীমার বেশি হওয়ায় অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির নীতিগত অনুমোদন অত্যাবশ্যক।  এ অবস্থায়, রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে পিপিএ ২০০৬ এর ধারা ৬৮ (১) ও ধারা ৩২ এবং পিপিআর ২০০৮ এর বিধি ৭৬ (২) এ বর্ণিত ক্রয় পদ্ধতি প্রয়োগ করে জি টু জি এর আওতায় ভারত থেকে ১.০০ লাখ মেট্টিক টন (সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ ভাঙ্গাদানাবিশিষ্ট) নন বাসমতি সিদ্ধ চাল আমদানির বিষয়টি অনুমোদনের জন্য অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির কাছে উপস্থাপন করা হবে।

হাসনাত/সাইফ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ