সিরাজুল আলম খানের প্রথম জানাজা বায়তুল মোকাররমে, নোয়াখালীতে দাফন
ছবি: সংগৃহীত
মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও রাজনীতির ‘রহস্য পুরুষ’ সিরাজুল আলম খানের (দাদা ভাই) প্রথম জানাজা শনিবার (১০ জুন) সকাল ১০টায় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে।
শুক্রবার (৯ জুন) বিকেলে সিরাজুল আলমের ছোট ভাইয়ের মেয়ে ব্যারিস্টার ফারাহ খান এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, বায়তুল মোকাররমে জানাজা শেষে সিরাজুল আলমের মরদেহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নেওয়া হবে। সেখানে দ্বিতীয় জানাজার পর তার মরদেহ নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার আলীপুর গ্রামের বাড়িতে নেওয়া হবে। সেখানে তৃতীয় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
এর আগে, শুক্রবার দুপুর সোয়া ২টায় ঢাকা মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সিরাজুল আলম। তিনি দীর্ঘদিন বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যায় ভুগছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম প্রধান সংগঠক সিরাজুল আলম খান ১৯৪১ সালের ৬ জানুয়ারি নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ থানার আলীপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫৮ সালে ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিত বিভাগে স্নাতকে ভর্তি হন তিনি। থাকতেন ফজলুল হক হলে। ১৯৬১ সালে তিনি ছাত্রলীগের সহ-সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে ১৯৬৩ সালে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পান।
এর আগে, গত ২০ মে সিরাজুল আলম খানকে বার্ধক্যজনিত কারণে ঢাকা মেডিক্যালের নতুন ভবনের কেবিনে ভর্তি করা হয়।
স্বাধীনতার পক্ষে আন্দোলন-সংগ্রাম পরিচালনায় তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতা সিরাজুল আলম খান, আব্দুর রাজ্জাক ও কাজী আরেফ আহমেদের নেতৃত্বে ষাটের দশকের প্রথমার্ধে স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ বা স্বাধীনতার ‘নিউক্লিয়াস’ গঠিত হয়।
পরে ছাত্র-তরুণদের আন্দোলন সংগঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তারা। বঙ্গবন্ধুরও ঘনিষ্ঠ সাহচর্যে ছিলেন এই ছাত্রনেতারা।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পরপরই বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ভেঙে দুই ভাগ হয়। এরপর ১৯৭২ সালে সিরাজুল আলম খানের উদ্যোগে রাজনৈতিক দল জাসদ প্রতিষ্ঠা হয়।
তিনি কখনও নেতৃত্বে না এলেও জাসদ নেতাদের পরামর্শক হিসেবে তাদের ‘তাত্ত্বিক গুরু’ হিসেবে পরিচিত। তাকে সবাই ‘দাদা ভাই’ নামেই ডাকেন।
সিরাজুল আলম খান কখনও জনসমক্ষে আসতেন না এবং বক্তৃতা-বিবৃতি দিতেন না; আড়ালে থেকে তৎপরতা চালাতেন বলে বাংলাদেশের রাজনীতিতে ‘রহস্য পুরুষ’ হিসেবে তিনি পরিচিত।
ঢাকা/হাসান/এনএইচ