ঢাকা     রোববার   ০৫ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২২ ১৪৩১

৫৩ বছরের পুরনো চট্টগ্রাম সাইলো বিএমআরই হচ্ছে

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:১৪, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩   আপডেট: ০৯:১৬, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩
৫৩ বছরের পুরনো চট্টগ্রাম সাইলো বিএমআরই হচ্ছে

ফাইল ফটো

চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি করা খাদ্যশস্য সুষ্ঠুভাবে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সরবরাহ করার জন্য দীর্ঘদিনের পুরনো সাইলোটি বিএমআরই (ব্যালেন্সিং, আধুনিকায়ন, বিস্তার এবং প্রতিস্থাপন)  করার উদ্যোগ দেওয়া হয়েছে। সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে বেলজিয়ামের প্রতিষ্ঠান ভিগান ইঞ্জিনিয়ারিং এসএ সাইলোটি বিএমআরই করার কাজটি সম্পন্ন করবে।  

খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, বিদেশ থেকে আমদানিকৃত সরকারি গমের বেশির ভাগ চট্টগ্রাম সাইলোতে খালাস করা হয়। এক লাখ মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন ৫৩ বছরেরও বেশি সময়ের পুরাতন সাইলোটি ১৯৬৬ সাল থেকে ১৯৭০ সালের মধ্যে স্থাপন করা হয়েছিল। বর্তমানে সাইলোর যন্ত্রপাতি পুরাতন হওয়ায় কাঙ্খিত ফলাফল পাওয়া যাচ্ছে না। সাইলোটির ব্যাগিং হাউজ, ডেলিভারি সিস্টেম, ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম, কনভেয়র ব্রিজ, জেটি, সাব-স্টেশন, কন্ট্রোল রুম সিস্টেম, পুরাতন স্কেল, বেল্টের কাউন্টার ওয়েট বুথ ইত্যাদি পুরাতন হওয়ার অপারেশনাল কার্যক্রমে প্রায়ই বিঘ্ন ঘটছে।

সূত্র জানায়, এতে করে যথাসময়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে গম সরবরাহের জটিলতা দেখা দিচ্ছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে সাইলোর কার্যক্রম দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করতে চট্টগ্রাম সাইলোর বিএমআরই করণ প্রয়োজন। জানা যায়, ইতিপূর্বে ১৯৯৮ থেকে ২০০০ সালে সাইলোটি একবার আংশিকভাবে বিএমআরই করণ করা হয়েছিল। এরপর প্রায় ২৩ বছরে সব যন্ত্রপাতি ও কনভেয়রগুলোর পারফরম্যান্স হ্রাস পেয়েছে। এছাড়া, বর্তমানে আধুনিক প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতার সঙ্গে তালমেলাতে এবং দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমদানি করা গম খালাস, সংরক্ষণ ও ডেলিভারি কার্যক্রম গতিশীল করার জন্য চট্টগ্রাম সাইলোটি বিএমআরই করা প্রয়োজন। এ কাজের জন্য বাজেটে প্রয়োজনীয় অর্থেরও বরাদ্দ রয়েছে। বর্তমানে একলাখ মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি নতুন সাইলো নির্মাণে ব্যয় আনুমানিক ৮০০ কোটি টাকা থেকে ১০০০ কোটি টাকা।

চট্টগ্রাম সাইলো আধুনিকীকরণে স্কোপ অব ওয়ার্ক প্রণয়নের লক্ষ্যে চলতি বছরের গত ২৭ এপ্রিল খাদ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালকের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি সাইলো সরেজমিন পরিদর্শন করে বিএমআরই করার সুপারিশ করেছে। পরে চট্টগ্রাম সাইলো বিএমআরই করা জরুরি ভিত্তিতে কোনো কাজ সম্পাদন করা দরকার তা নির্ধারণে গত ১৭ আগস্ট পাঁচ সদস্যের আরেকটি কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটিও একটি প্রতিবেদন দাখিল করেছে।

চট্টগ্রাম সাইলোর পূর্ত কাজ সম্পাদন করেছিল সুইডিশ কোম্পানি স্কানস্কা। ওই সময়ে জার্মানির মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি মিয়াগ (এমআইএজি) এবং সুইজারল্যান্ডের কোম্পানি বাহলের যৌথভাবে সাইলোটির সকল যন্ত্রাংশ সংযোজন করে। পরে ১৯৯৮ থেকে ২০০০ সালে সাইলোটি আংশিকভাবে বিএমআরই করার সময়ে সুইজারল্যান্ডের বাহলের, ফ্রান্সের প্রিসিয়া মলেন, বেলজিয়ামের ভিগান ইঞ্জিনিয়ারিং এবং অন্যান্য মূল প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে যন্ত্রাংশ সংগ্রহ করে প্রতিস্থাপন করা হয়।

সূত্র জানায়, বর্তমান প্রেক্ষাপটে একাধিক প্রতিষ্ঠানের যন্ত্রপাতি আলাদা আলাদা প্রতিষ্ঠান থেকে সংগ্রহ করা এবং সব যন্ত্রপাতির মধ্যে সমন্বয় করা প্রায় অসম্ভব। এ ক্ষেত্রে একক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সাইলোটি বিএমআরই করা উত্তম ও যৌক্তিক হবে বলে মনে করছে মন্ত্রণালয়।

জানা গেছে, সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে মনোনীত বেলজিয়ামের প্রতিষ্ঠান ভিগান ইঞ্জিনিয়ারিং এসএর তৈরি যন্ত্রপাতির পরিমাণ বেশি। প্রতিষ্ঠানটি খাদ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে আশুগঞ্জ সাইলো বিএমআরই; বিভিন্ন সাইলোতে ৯টি আন-লোডার সরবরাহ; স্থাপন ও ইন্টারলিঙ্কসহ সংশ্লিষ্ট সেবা প্রদান করে আসছে। আশুগঞ্জ, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ ও সান্তাহার সাইলো ১৯৬৬ থেকে ১৯৭০ সালে একই প্রযুক্তিতে নির্মাণ করা হয়। আশুগঞ্জ সাইলো বিএমআরই করা বেলজিয়ামের প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন যন্ত্রপাতির ড্রইং ডিজাইন সম্পন্ন করে মূল নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে মালামাল ও যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করে সেগুলো সাইলোতে স্থাপন করছে। বিএমআরই এর কাজটি সুষ্ঠু এবং দ্রুত সম্পন্ন করতে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের গঠিত কমিটির সুপারিশে বেলজিয়ামের প্রতিষ্ঠান ভিগান ইঞ্জিনিয়ারিং এসএ কে দিয়ে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে করা হবে।

ঢাকা/হাসনাত/ইভা 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়