‘স্বাস্থ্য সেক্টরের যন্ত্রপাতিও জলবায়ু বান্ধব হওয়া উচিত’
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, স্বাস্থ্য সেক্টরে আমরা নানা রকম যন্ত্রপাতি ব্যবহার করি, এইসব যন্ত্রপাতিও জলবায়ু বান্ধব হওয়া উচিত। মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) দুপুরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এটিএসিএইচ কর্তৃক আয়োজিত ‘ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড হেলথ: সাপ্লাই চেইন’ বিষয়ক অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বিগত দশকে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতে উন্নয়ন এবং জলবায়ু বান্ধব যন্ত্রপাতি কেনা, সাপ্লাই এবং ব্যবহারের কথা বলে জলবায়ু বান্ধব স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বিনির্মাণে বিজ্ঞানসম্মত এবং যেসব যন্ত্রপাতি জলবায়ুর ক্ষতি করে না সেসব যন্ত্রপাতি ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব প্রদান করেন। তিনি ডব্লিউএইচও এবং এটিএসিএইচকে জলবায়ু বান্ধব যন্ত্রপাতি সাপ্লাই এবং হাসপাতাল বিনির্মাণে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।
‘স্বাস্থ্যমন্ত্রী বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক আয়োজিত স্যালিনিটি কিউসড বাই ক্লাইমেট চেঞ্জ এন্ড ইটস ইম্পেক্ট অন এনসিডিএস অ্যান্ড এসআরএইচআর’ শীর্ষক সাইড ইভেন্টে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. আহমেদুল কবির। তিনি তার উপস্থাপনায় জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতে পরিবর্তন বিশেষ করে উপকূলীয় অঞ্চলে লবণাক্ততা এবং এর প্রভাবে এসব এলাকায় অসংক্রামক রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাচ্ছে উল্লেখ করেন। এছাড়া এর প্রভাবে গর্ভবতী মায়েদের নানা রকম সমস্যা হয় যার কারণে কোস্টাল এলাকায় মাতৃমৃত্যু বেড়ে যায়।
অনুষ্ঠানে মন্ত্রী জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে পরিবর্তন বিশেষ করে লবণাক্ত বেড়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করেন। এর ফলে নানা ধরনের রোগের যাওয়ার কথা বর্ণনা করেন তিনি। বিশেষ করে অসংক্রামক রোগ এবং মহিলা ও নারীদের নানা স্বাস্থ্য সমস্যা হচ্ছে তার জন্য স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের গৃহীত পদক্ষেপ এবং পরবর্তী পরিকল্পনা তুলে ধরেন। এক্ষেত্রে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সহযোগিতার কথা উল্লেখ করেন। তিনি উন্নয়ন সহযোগীদের জলবায়ু বান্ধব স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বিনির্মাণে আর্থিক সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।
স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব তার বক্তব্যে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে স্বাস্থ্য খাতের চ্যালেঞ্জসমূহ স্মরণ করিয়ে দিয়ে সকলের এক যোগে কাজ করার আহ্বান জানান। উপকূলীয় এলাকায় অসংক্রামক রোগের প্রাদুর্ভাব কমাতে ও এসব রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে গৃহীত পদক্ষেপ তুলে ধরেন।
এই অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন- ডেনিয়েল নোভাক, ফার্স্ট সেক্রেটারি, সুইডেন অ্যাম্বাসি, ঢাকা, বাংলাদেশ। অনুষ্ঠানে প্যানেলিস্ট হিসেবে ছিলেন মিস খুশবু পাওডেল, প্রোগ্রাম কোঅর্ডিনেটর, আইপাস, নেপাল, এবং ডা. হুসাইন রশিদ, আঞ্চলিক উপদেষ্টা, ওয়াশ, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা।
প্রতিটি অনুষ্ঠানেই বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশ যেসব উদ্যোগ নিয়েছে সেগুলোর প্রশংসা করেন এবং ভবিষ্যতে স্বাস্থ্যখাতে আরও সহযোগিতা এবং বিনিয়োগের আশ্বাস প্রদান করেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাস্থ্য প্রতিনিধি দলের অংশ হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- সচিব স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ মো. জাহাঙ্গীর আলম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. আহমেদুল কবির, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের যুগ্ম সচিব মো. মামুনুর রশিদ, উপসচিব ও স্বাস্থ্য মন্ত্রীর একান্ত সচিব মো. রিয়াজুল হক, সচিবের একান্ত সচিব মো. আবু রায়হান দোলন প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, ৩০ নভেম্বর থেকে ১২ ডিসেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত দুবাইয়ে জলবায়ু সম্মেলন ২০২৩ (কপ২৮) অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
আসাদ/এনএইচ