আগুনসন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে গণমাধ্যমকর্মীদের সোচ্চার হওয়ার আহ্বান 

দুষ্কৃতকারী ও আগুনসন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে একযোগে সোচ্চার হওয়ার জন্য গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

বুধবার (৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর তোপখানা রোডে জাতীয় প্রেস ক্লাবে অনলাইন সংবাদ পোর্টাল এনএএনটিভিবিডি ডটকমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ আহ্বান জানান।

এনএএনটিভিবিডি ডটকমের সম্পাদক ও প্রকাশক সাবিনা মুবাশশিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে এ কে এম শামীম ওসমান এমপি, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, তাঁতি লীগের সভাপতি প্রকৌশলী শওকত আলী, পোর্টালের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন দীপু ও পরিচালক খাদেম মো. সানাউল্লাহ বক্তব্য রাখেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির সমাবেশের নামে ২৮ অক্টোবর যে বর্বরতায় পুলিশ হত্যা করা হয়েছে, বর্বরোচিতভাবে সাংবাদিকদের সাপ পেটানোর মতো পেটানো হয়েছে, তা অতি জঘন্য ও চরম অমানবিক। গণমাধ্যমের সবাই এর বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলুন, যাতে ওরা আর এই কাজ করতে না পারে। আমি সমস্ত গণমাধ্যমকে অনুরোধ জানাবো, এদের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলার জন্য।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আজকে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। হরতাল-অবরোধের নামে এই চোরাগোপ্তা হামলা, পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ, বাসের ড্রাইভার হত্যা করা, জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে অঙ্গার করা—এগুলো কোনো রাজনৈতিক দলের কাজ বা কর্মসূচি হতে পারে না। এগুলো সন্ত্রাসী কর্মসূচি ছাড়া অন্য কিছু নয়। এমনকি সন্ত্রাসী কর্মসূচি শব্দও এই ঘটনাগুলোকে বর্ণনা করার জন্য যথেষ্ট নয়।’

অবৈধ ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের বিরুদ্ধে মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞাকে স্বাগত

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আজকে অনলাইনে দেখলাম, যেসব ইসরাযেলি ফিলিস্তিনিদের জায়গার ওপর অবৈধভাবে বসতি স্থাপন করেছে, তাদের বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তকে আমি স্বাগত জানাই। আশা করব, বাংলাদেশে যারা পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করছে এবং যারা নির্বাচনকে প্রতিহত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধেও তারা ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেবে।’

‘সবার আগে সংবাদ দিতে গিয়ে ভুল তথ্য দেবেন না’

সম্প্রচারমন্ত্রী অতিথি ও আয়োজকদের সঙ্গে নিয়ে কেক কেটে এনএএনটিভিবিডি ডটকম  উদ্বোধন করেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের সরকার গণমাধ্যমের বিকাশ, বিস্তৃতি এবং স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মনে করেন যে, গণমাধ্যমের বিকাশের সাথে রাষ্ট্রের ও বহুমাত্রিক সমাজ ব্যবস্থার বিকাশ যুক্ত, বিতর্কভিত্তিক ন্যায়ভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা যুক্ত। সে কারণে গত ১৫ বছরে বাংলাদেশে গণমাধ্যমের ব্যাপক বিকাশ ঘটেছে। এর কারণে অনেকের কর্মসংস্থান হচ্ছে এবং মানুষের কাছে অবাধ তথ্য যাচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে থেকে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে এই নতুন অনলাইন গণমাধ্যম ভূমিকা রাখবে, সেটিই প্রত্যাশা।’

সাংবাদিকদের সতর্ক করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘লক্ষ রাখতে হবে—সবার আগে সংবাদ দিতে গিয়ে যেন সম্পাদনাহীন এবং ভুল তথ্য পরিবেশিত না হয়। গণমাধ্যমের বিস্তৃতির সাথে সবার সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার প্রবণতা মূলধারার গণমাধ্যমের জন্য ক্ষতিকর। এটি থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য আমাদের প্রেস ক্লাব, সাংবাদিক ইউনিয়নগুলো বারবার তাগাদা দিচ্ছে এবং প্রেস কাউন্সিল এ নিয়ে কাজ করছে। আগে ফেসবুকে কিছু দেখলেই সেটিকে মানুষ সংবাদ মনে করত। এখন বোঝে যে, ফেসবুকের তথ্য সংবাদ নয়। কারণ, এই দেশে গত ১২-১৩ বছরে যত ধরনের হানাহানি, সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা তৈরি হয়েছে—নাসির নগর, রামু, কুমিল্লা, বরিশাল, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঘটনা—সবগুলোর পেছনেই ভুয়া অনলাইন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। সুতরাং, এ ব্যাপারে আমাদেরকে অনেক বেশি সতর্ক হতে হবে। আমাদের সরকার, আমরা অত্যন্ত শক্তভাবে সেগুলো মোকাবিলা করেছি। যারা এই কাজগুলো করেছিল, তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে।’ 

সংসদ সদস্য শামীম ওসমান বলেন, ‘রাজনীতি মানে এবাদত, মানুষের সেবা করা। মানুষকে খুশি করলে সৃষ্টিকর্তা খুশি হন। আমি রাস্তাঘাট, মসজিদ, মাদ্রাসা যা-ই করেছি, সব মানুষের জন্য। বিএনপি-জামায়াত ২০১৩, ২০১৪, ২০১৫ সালে যে ৫০০ মানুষকে পুড়িয়ে মারল, ৩ হাজার ৬২৬ জনকে যে পুড়িয়ে দিলো, রেলগাড়ি পোড়ালো, ২৯ জন পুলিশকে কুপিয়ে মারলো, এগুলো তো রাজনীতি নয়, সন্ত্রাস আর অপরাজনীতি।’