আজ বেগম রোকেয়া দিবস
নিউজ ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম
আজ বেগম রোকেয়া দিবস। তিনি ছিলেন সাহিত্যিক, শিক্ষাব্রতী, সমাজসংস্কারক এবং নারী জাগরণ ও নারীর অধিকার আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ। ১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর রংপুর জেলার মিঠাপুকুর থানার অন্তর্গত পায়রাবন্দ ইউনিয়নে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম জমিদার পরিবারে তার জন্ম।
নারী জাগরণের এই অগ্রদূত এবং আলোর দিশারির জীবনকাল ছিল মাত্র ৫২ বছর। ১৯৩২ সালের ৯ ডিসেম্বর কলকাতায় তার মৃত্যু হয়।
নারীর ক্ষমতায়ন ও শিক্ষা, আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, অধিকার ও সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় বেগম রোকেয়ার অবদান ও নারী জাগরণের অগ্রযাত্রায় অন্তহীন প্রেরণার উৎস হিসেবে প্রতিবছর এই দিবসটি পালন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই দিবসটি উপলক্ষে পৃথক বাণী দিয়েছেন।
বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেন, নারীদের জীবনমান উন্নয়নে তিনি বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তার মাধ্যমেও তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। নারীর দুঃখ-দুর্দশা ও সমান অধিকারের দাবি বেগম রোকেয়ার সাহিত্যে জোরালোভাবে উপস্থাপিত হয়েছে। নারী আন্দোলনের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া নারী জাগরণের আহ্বান জানিয়ে বলেছিলেন ‘তোমাদের কন্যাগুলিকে শিক্ষা দিয়া ছাড়িয়া দাও, নিজেরাই নিজেদের অন্নের সংস্থান করুক’।
বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বেগম রোকেয়া ছিলেন দূরদৃষ্টিসম্পন্ন একজন আধুনিক নারী। তিনি উপলব্ধি করেছিলেন সমাজ তথা রাষ্ট্রের সার্বিক উন্নয়নের জন্য পুরুষের পাশাপাশি নারীকে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার মাধ্যমে উপযুক্ত করে গড়ে তোলা একান্ত প্রয়োজন। তাঁর এই উপলব্ধি ও আদর্শ আজও আমাদের অনুপ্রেরণা যোগায়।’
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আজ বেগম রোকেয়া দিবস ও বেগম রোকেয়া পদক ২০২৩ প্রদান উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। নারী জাগরণে উদ্বুদ্ধকরণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান ও গৌরাবোজ্জ্বল ভূমিকা রাখায় এবছর পাঁচজন বিশিষ্ট নারীকে বেগম রোকেয়া পদক দেয়া হচ্ছে। পদক প্রাপ্ত পাঁচ জন বিশিষ্ট নারী ও তাদের অবদানের ক্ষেত্র হলো- নারী শিক্ষায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম নারী উপাচার্য খালেদা একরাম, মরণোত্তর (ঢাকা জেলা), নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় ডা. হালিদা হানুম আখতার (রংপুর জেলা), নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কামরুন্নেছা আশরাফ দিনা, মরণোত্তর (নেত্রকোনা জেলা), নারী জাগরণে উদ্বুদ্ধকরণে নিশাত মজুমদার (লক্ষীপুর জেলা) এবং পল্লী উন্নয়নে রনিতা বালা (ঠাকুরগাঁও জেলা)। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে পদক প্রদান করবেন।
সাহিত্যিক হিসেবে তৎকালীন যুগের প্রেক্ষাপটে রোকেয়া ছিলেন এক ব্যতিক্রমী প্রতিভা।
নবনূর, সওগাত, মোহাম্মদী, নবপ্রভা, মহিলা, ভারতমহিলা, আল-এসলাম, নওরোজ, মাহে নও, বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য পত্রিকা, The Mussalman, Indian Ladies Magazine প্রভৃতি পত্রিকায় তিনি নিয়মিত লিখতেন। রোকেয়ার উল্লেখযোগ্য রচনার মধ্যে রয়েছে ‘মতিচূর’ (প্রবন্ধ), Sultana’s Dream (নকশাধর্মী রচনা), ‘পদ্মরাগ’ (উপন্যাস), ‘অবরোধবাসিনী’ (নকশাধর্মী গদ্যগ্রন্থ) প্রভৃতি।
এ ছাড়া আছে অসংখ্য প্রবন্ধ, ছোটগল্প, কবিতা, ব্যঙ্গাত্মক রচনা ও অনুবাদ।
/টিপু/