ঢাকা     রোববার   ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২৯ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

এপোস্টিল কনভেনশনে বাংলাদেশ, দেশি ডকুমেন্টের বিদেশে সত্যায়ন লাগবে না

কূটনৈতিক প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২৩:০১, ২৯ জুলাই ২০২৪   আপডেট: ২৩:০২, ২৯ জুলাই ২০২৪
এপোস্টিল কনভেনশনে বাংলাদেশ, দেশি ডকুমেন্টের বিদেশে সত্যায়ন লাগবে না

পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ নেদারল্যান্ডসে এপোস্টিল কনভেনশনে যোগদান অনুষ্ঠানে দেশের পক্ষে 'ইন্সট্রুমেন্ট অব একসেশন' আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করেছেন।

সোমবার (২৯ জুলাই) রাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সোমবার নেদারল্যান্ডসের রাজধানী হেগে স্থানীয় সময় দুপুরে নেদারল্যান্ডস পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলাদেশ ‘দ্য কনভেনশন অন এবোলিশিং দ্য রিকোয়ারমেন্ট অব লিগালাইজেশন অব ফরেন পাবলিক ডকুমেন্ট’ বা এপোস্টিল কনভেনশন- ১৯৬১ এর পক্ষভুক্ত হলো। এর ফলে দেশে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন করা ডকুমেন্ট আর অন্য দেশে পুনরায় সত্যায়ন করা লাগবে না এবং প্রতি বছর বিদেশগামী বাংলাদেশিদের আনুমানিক ৫০০-৬০০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে।

অনুষ্ঠানের শুরুতে নেদারল্যান্ডস পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সেক্রেটারি জেনারেল মন্ত্রী হাছান মাহমুদকে স্বাগত জানান। পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার বক্তৃতায় বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য এই চুক্তির প্রয়োজনীয়তা ও তাৎক্ষণিক সুবিধাদি ব্যাখ্যা করেন।  

তিনি বলেন, এখন থেকে বিদেশগামী ছাত্রছাত্রী, পেশাজীবী ও অভিবাসন প্রত্যাশীদের বিদেশে ভর্তি ও চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে যেসব পাবলিক ডকুমেন্ট সনাতন পদ্ধতিতে সত্যায়িত করতে হতো, তা দ্রুততর, সহজ ও সুলভভাবে করা যাবে।

এই কনভেনশনে যোগদান বাংলাদেশের জন্য যুগান্তকারী পদক্ষেপ এবং এতে দেশের শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবেন, উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, এর ফলে ই-এপিপি বা ইলেকট্রনিক এপোস্টিল প্রোগ্রাম পদ্ধতিতে সত্যায়ন করে ইলেকট্রনিক এপোস্টিল সার্টিফিকেট ইস্যু করা হবে, যার সত্যতা ও সঠিকতা সার্টিফিকেটে বিদ্যমান কিউআর কোড দিয়ে বিশ্বের যে কোনো স্থান থেকে যাচাই করা যাবে। এতে বিদেশগামী ছাত্রছাত্রী এবং পেশাজীবীদের বিভিন্ন ধরনের হয়রানি ও ভোগান্তি লাঘব হবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, নিজ দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ইস্যু করা এপোস্টিল সার্টিফিকেট ব্যবহার করলে বিদেশি দূতাবাস বা বিদেশি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা বিদেশি অন্য কোনো কর্তৃপক্ষের সত্যায়নের জন্য শ্রম ও অর্থ ব্যয় করে তাদের দ্বারস্থ হতে হবে না। এতে প্রতি বছর বিদেশগামী বাংলাদেশিদের আনুমানিক ৫০০-৬০০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে।

বর্তমানে বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ, চাকরির আবেদন, বিদেশে স্থায়ী হওয়া, বিদেশি নাগরিকদের সঙ্গে বিয়েসহ নানা প্রয়োজনে বিদেশগামী ও বিদেশে অবস্থানরত নাগরিকদের বিভিন্ন দলিলাদি (যেমন: একাডেমিক সার্টিফিকেট, জন্মনিবন্ধন সনদ, বৈবাহিক সার্টিফিকেট ইত্যাদি) একাধিক কর্তৃপক্ষের সত্যায়নের প্রয়োজন হয়। দেশের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সত্যায়নসহ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন শেষে সেবাপ্রার্থীগণকে পুনরায় বিদেশি দূতাবাস, সংশ্লিষ্ট দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বিদেশি বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের কাছে সত্যায়নের জন্য উপস্থিত হতে হয়, যা অত্যন্ত সময়সাপেক্ষ, শ্রমসাধ্য এবং ব্যয়বহুল।

নেদারল্যান্ডসের পররাষ্ট্র সচিবের সৌজন্য সাক্ষাৎ:
অনুষ্ঠান শেষে নেদারল্যান্ডসের পররাষ্ট্র সচিব পল হুজিস পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

এ সামগ্রিক উদ্যোগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী নেদারল্যান্ডসের পররাষ্ট্র মমন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রশংসা করেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, অন্যান্য দেশের মতো কনভেনশনে যোগদানের আট মাসের মধ্যে এতে পক্ষভুক্ত অন্য দেশগুলোর চূড়ান্ত সমর্থন নিয়ে বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ই-এপিপি বা ইলেকট্রনিক এপোস্টিল প্রোগ্রাম সম্পূর্ণভাবে চালু করা সম্ভবপর হবে।

ইন্সট্রুমেন্ট অব একসেশন হস্তান্তর অনুষ্ঠানে নেদার‌ল্যান্ডসে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মু. রিয়াজ হামিদুল্লাহ্, নেদারল্যান্ডসের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হেড অব ট্রিটিজ ডিভিশন, ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল অব হেগ কনফারেন্স অন প্রাইভেট ইন্টারন্যাশনাল ল’, দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কনসুলার ও কল্যাণ উইংয়ের মহাপরিচালক ড. শাহ্ মো. তানভীর মনসুর এবং দূতাবাসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

হাসান/রফিক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়