ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

খালেদা জিয়াকে নারী মুক্তিযোদ্ধা আখ্যা ‘আষাঢ়ে গল্প’: কাদের

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:৪৮, ২৫ ডিসেম্বর ২০২১  
খালেদা জিয়াকে নারী মুক্তিযোদ্ধা আখ্যা ‘আষাঢ়ে গল্প’: কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের (ফাইল ফটো)

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বেগম খালেদা জিয়াকে নারী মুক্তিযোদ্ধা আখ্যায়িত করে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা বাংলা সাহিত্যের ‘আষাঢ়ে গল্প’র মতো বলে মন্তব‌্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

শনিবার (২৫ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘মির্জা ফখরুল খালেদা জিয়াকে মুক্তিযোদ্ধা আখ্যা দিয়ে প্রকৃতপক্ষে একাত্তরের রণাঙ্গণে অংশ নেওয়া বীর নারীদের গৌরবগাথা এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগের প্রতি কটাক্ষ করার অপচেষ্টা চালিয়েছেন। কারণ, মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তিই বিএনপির শক্তির একমাত্র উৎস।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা আশা করি, বিএনপির নেতারা এ ধরনের বানোয়াট গল্প থেকে বিরত থাকবেন। তাদের বোধোদয় হওয়া উচিত যে, মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির মতো ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও জাতিদ্রোহীমূলক কার্যকলাপে লিপ্ত থাকার কারণেই বিএনপি জনগণ দ্বারা বারবার প্রত্যাখ্যাত হয়েছে।’

গণমাধ্যমে প্রচারিত ও প্রকাশিত মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘চিরাচরিত মিথ্যাচারের অপরাজনীতিতে নিমগ্ন বিএনপির নেতারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে প্রতিনিয়ত অপপ্রচারের আশ্রয় নিচ্ছেন।’

তিনি বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ইসলামসহ বিএনপির নেতারা বিদেশে অর্থপাচারের কথা বলেছেন। দেশবাসী জানেন, এই অর্থপাচারের মূল হোতা কারা। তারা হাওয়া ভবন সৃষ্টি করে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করে বিদেশে পাচার করেছে। দুর্নীতিতে বারবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ও অর্থপাচারকারীদের দল বিএনপির নেতাদের মুখে অর্থপাচারের কথা ভূতের মুখে রাম নাম ছাড়া কিছু নয়।’

‘বিএনপির শাসনামলে জার্মানির প্রযুক্তিপণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সিমেন্স গ্রুপের কাছ থেকে তারেক রহমানের ঘুষ গ্রহণের কথা আদালতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের সাক্ষ্যে প্রমাণিত হয়েছে। একই সঙ্গে চীনের হার্বিন কোম্পানির কাছ থেকে তারেক রহমানের ঘুষ নেওয়ার কথা সকলেই জানে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও জিয়া পরিবারের দুর্নীতির চিত্র বিস্তারিতভাবে প্রকাশিত হয়েছে। সিঙ্গাপুর থেকে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার পুত্র কোকো রহমানের পাচারকৃত অর্থ আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই দেশে ফেরত আনা হয়েছে।’

‘বিএনপির নেতারা একদিকে অর্থপাচারের কথা বলে, অন্যদিকে লন্ডনে অবস্থানরত তাদের নেতা সাজাপ্রাপ্ত পালতক আসামি তারেক রহমানের বিলাসী জীবনযাপনের রসদ পাঠায়। এ দেশের জনগণ জানে, বিএনপির সাজাপ্রাপ্ত নেতা একাত্তরের পরাজিত অপশক্তি ও যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা, সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে লবিস্ট নিয়োগ করেছে। বিএনপির মনোনয়ন ও পদ বাণিজ্যের হাজার হাজার কোটি টাকা দেশ থেকে পাচার করছে’, বলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বে আর্থ-সামাজিক সব সূচকেই বাংলাদেশের অভূতপূর্ব অগ্রগতি হচ্ছে, দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘জনগণের জীবনমানে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। দেশের টাকা দেশে আছে বলেই উত্তরোত্তর বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। অর্থনৈতিক শৃঙ্খলা ও সুশাসন আছে বলেই মূল্যস্ফীতি ও মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আছে।’

তিনি বলেন, ‘বৈশ্বিক মহামারি করোনার ভয়াবহ অভিঘাতের মধ্যেও দেশের অর্থনীতির গতি সচল আছে। আইএমএফসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বাংলাদেশের শক্তিশালী অর্থনৈতিক কাঠামো বিনির্মাণ এবং অগ্রগতির প্রশংসা করছে। চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির হার বৃদ্ধি এবং আগামী অর্থবছরে তা ৭ দশমিক ১ শতাংশে দাঁড়াবে বলে সাম্প্রতিক সময়ে পূর্বাভাস দিয়েছে আইএমএফ।’

বিশ্বসভায় উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃত বাংলাদেশের কোনো উন্নয়নই বিএনপি নেতাদের চোখে পড়ে না, অভিযোগ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা বিএনপি নেতাদের প্রতি আহ্বান জানাবো, অসংলগ্ন কথাবার্তা পরিহার করুন এবং সত্যকে স্বীকার করার সৎ সাহস নিয়ে গঠনমূলক বক্তব্য দিন।’

পারভেজ/রফিক

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ