ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

উচ্চ আদালতে যাবে ‘বাংলাদেশ জাতীয় দল’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৫০, ১১ মে ২০২৩  
উচ্চ আদালতে যাবে ‘বাংলাদেশ জাতীয় দল’

নিবন্ধনের জন্য আগামী সপ্তাহের মধ্যে উচ্চ আদালতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ‘বাংলাদেশ জাতীয় দল’।

বৃহস্পতিবার (১১ মে) বেলা ১১টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা এ ঘোষণা দেন।

তিনি বলেন, আমরা সব নিয়ম কানুন মেনে তারপর নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছি। কিন্তু দুঃখের বিষয়, নির্বাচন কমিশন থেকে আমাদের দলের নিবন্ধন দেওয়া হয়নি। নির্বাচন কমিশনে মুচলেকা দিয়ে দলের নিবন্ধন নেবো না। তাই, নিবন্ধনের জন্য আমরা উচ্চ আদালতে যাবো।

নিবন্ধন পেতে সব শর্ত মেনে আবেদন করেছিল দলটি। কিন্তু ইসির শর্ত পূরণ করা এবং সব যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও ‘বাংলাদেশ জাতীয় দলে’র নিবন্ধন আবেদন অযৌক্তিকভাবে প্রত্যাখাত হয় বলে অভিযোগ করেন দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা।

তিনি বলেন, ইসিতে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করা ৪০টি দলের মধ্যে অন্য ১২টি রাজনৈতিক দল কীভাবে, কোন প্রক্রিয়ায় নিবন্ধন পেলো- সে বিষয়টি স্পষ্ট করতে ইসির প্রতি আহ্বান জানাই।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সৈয়দ এহসানুল হুদা আরও বলেন, দলের নিবন্ধন পাওয়ার তিনটি শর্তের মধ্যে আমরা দ্বিতীয় শর্ত অনুযায়ী আবেদন করি। যে শর্তের মধ্যে আছে, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে দরখাস্ত দাখিল করার তারিখ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে যেকোনো একটিতে দরখাস্তকারী দল কর্তৃক নির্বাচনে অংশগ্রহণকৃত নির্বাচিত এলাকায় প্রদত্ত মোট ভোট সংখ্যার শতকরা পাঁচ ভাগ ভোট লাভের সমর্থনে কমিশন কর্তৃক ইস্যুকৃত প্রত্যয়ন পত্র দিতে হবে।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ জাতীয় দলে’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সৈয়দ সিরাজুল হুদা ১৯৭৯ সালে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে তৎকালীন ময়মনসিংহ-২৩ বর্তমানে কিশোরগঞ্জ-৫ আসন থেকে খেজুর গাছ মার্কা প্রতীকে নির্বাচন করে মোট ১২.৭% ভোট পান।

আমরা নির্বাচন কমিশন কর্তৃক প্রাপ্ত হয়ে প্রদত্ত ভোটের ফলাফলের দালিলিক বিবরণ দাখিল করে কমিশনের কাছে ১২.৭% ভোট পাওয়ার প্রত্যয়নপত্রের জন্য আবেদন করলে কমিশন পত্র দিয়ে জানায়, কমিশনের তথ্য সংরক্ষিত না থাকায় প্রত্যয়নপত্র প্রদান করা সম্ভব নয়। আমরা কমিশন কর্তৃক প্রদত্ত প্রাপ্ত ভোটের যে তালিকা দাখিল করলাম এটা সম্পূর্ণ এড়িয়ে গিয়ে তথ্য সংরক্ষিত নাই কথাটা বলা একেবারে অযৌক্তিক বলেও জানান তিনি।

সৈয়দ এহসানুল হুদা আরও বলেন, অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের বিষয়, ১২.৭ শতাংশ ভোট পাওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে এড়িয়ে গিয়ে কমিশন আমাদের সঙ্গে এমন আচরণ করেছে, যেনো আমরা নতুন কোনো দলের জন্য নিবন্ধনের দরখাস্ত করেছি। তারা কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যদের নাম পদবির সঙ্গে এনআইডি নম্বরসহ অনেক কিছু দিতে বলে যা নিবন্ধনের জন্য গণবিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত আবেদনপত্রের সঙ্গে আবশ্যকীয় দলিলাদি বহির্ভূত।

এহসানুল হুদা বলেন, চূড়ান্তভাবে কমিশন উল্লেখ করেছে, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ এর অনুচ্ছেদ ৯০ খ (১) (ক) (আ) এর শর্ত প্রতিপালিত না হওয়ায় কমিশনের কাছে দলটি নিবন্ধের যোগ্য বিবেচিত হয়নি। অথচ কমিশন গণপ্রতিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ এর যে ধারা উল্লেখ করে জাতীয় দলের শর্ত পূরণ হয়নি বলে নিবন্ধন অযোগ্য ঘোষণা দিয়েছে। সেই ধারায় একমাত্র শর্ত হচ্ছে, ৫% ভোট প্রাপ্তি। যেটা জাতীয় দল দ্বিগুণেরও বেশি অর্থাৎ ১২.৭% ভোট পেয়েছে এবং নির্বাচন কমিশনের দেওয়া প্রত্যয়ন পত্র জমা দেওয়া হয়েছে। ১২.৭% ভোট প্রাপ্তি এবং কমিশনের দেওয়া প্রত্যয়নপত্রের বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে নির্বাচন কমিশন নজিরবিহীন একটি মন্দ নজির সৃষ্টি করেছে। যা ন্যাক্কারজনক।

জাতীয় দলের চেয়ারম্যান বলেন, নির্বাচন কমিশনের কাছে দাবি জানাচ্ছি, ৪০টি দলের কোনটি কোন প্রক্রিয়ায় নিবন্ধনের যোগ্য হয়েছে, তা প্রকাশ করে জনগণকে জানানো হোক এবং যে ১২টি দলকে প্রাথমিকভাবে নিবন্ধন দেওয়ার জন্য মনোনীত করা হয়েছে, তাদের নিবন্ধন পাওয়ার যৌক্তিক কারণ ও যোগ্যতার বিষয়টি ব্যাখ্যা করে তুলে ধরা হোক। তথ্য অধিকার আইন অনুযায়ী আমাদের এবং জনগণের উপরোক্ত বিষয় সম্পর্কে জানার অধিকার আছে। তাছাড়া আমরা আইনের আশ্রয় নিয়ে প্রমাণ করবো বাংলাদেশ জাতীয় দল নির্বাচন কমিশনের বিধি অনুযায়ী নিবন্ধন পাওয়ার শতভাগ যোগ্য একটি রাজনৈতিক দল।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ‘বাংলাদেশ জাতীয় দলে’র মহাসচিব রফিকুল ইসলাম, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুল আহাদ, সারোয়ার আলম, যুগ্ম-মহাসচিব লুৎফুল হাবিব লিটন, জিয়াউল হক জিয়া ও প্রচার সম্পাদক বেলায়েত হোসেন শামীম প্রমুখ।

/মেয়া/এসবি/

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ