‘সরকারের পদত্যাগ ছাড়া কোনও বিকল্প নেই’
সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে চলমান একদফা আন্দোলনের অংশ বরিশাল বিভাগীয় রোড মার্চ শেষে বক্তারা বলেন, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে দেশে কোনও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি। ভোট চুরি করে তারা ক্ষমতায় এসেছে। তাই এই সরকারকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। তার আগে অবশ্যই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। এর কোনও বিকল্প নেই।
শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বরিশাল-ঝালকাঠি-পিরোজপুর রুটে বিএনপির বরিশাল বিভাগীয় রোড মার্চ শেষে, পিরোজপুর কাউখালির শিয়ালকাঠি চৌরাস্তায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
বিকেল চারটায় শুরু হওয়া রোড মার্চের সমাপনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএনপি পিরোজপুর জেলার আহ্বায়ক অধ্যক্ষ আলমগীর হোসেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমাদের অনেক দাবি থাকলেও এখন দাবি একটাই অবৈধ এই সরকারের পদত্যাগ।
তিনি অভিযোগ করেন, আজ মেগাপ্রকল্পের নামে দুর্নীতি করে কিছু কিছু মানুষ বড়লোক হয়েছে, কোটিপতি হয়েছে আর সাধারণ মানুষ শেষ হয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশে একটা শিশু জন্মগ্রহণ করে ১ লাখ টাকার মতো ঋণ মাথায় নিয়ে। আমরা সেসব দুর্নীতি, ব্যাংক লুটেরাদের বিচার চাই।
তিনি বলেন, অনাচারের বিরুদ্ধে কথা বলতে গেলে সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্টে মামলা দেওয়া হয় এবং গ্রেপ্তার করা হয়। নারী-শিশু-সাংবাদিককে পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয় এবং তাদের শাস্তি দেওয়া হয়। এ অবস্থা থেকে দেশ ও দেশের জনগণকে মুক্ত এবং দেশের ভবিষ্যৎকে রক্ষা করতে আমাদের যুদ্ধ করতে হবে।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমরা এই সরকারের পতন চাই। যে সরকার ও সংসদ জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়নি, সেই সংসদ বাতিল করতে হবে, সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে আমরা নির্দলীয় সরকার গঠন চাই। সেই দাবিতে সারা দেশের মানুষ রোড মার্চ করছে, সভা করছে, মিছিল করছে।
সকাল সোয়া ১১টায় বরিশালের বেলস পার্ক থেকে শুরু হওয়া রোড মার্চ দুপুর দেড়টায় ঝালকাঠির পেট্রোল পাম্প মোড়ে পৌঁছায়। প্রচণ্ড বৃষ্টি উপেক্ষা করে হাজারো নেতাকর্মী খোলা ট্রাক ও মোটরসাইকেলে চড়ে রোড মার্চে অংশ নেন। রোড মার্চটি ঝালকাঠি হয়ে পিরোজপুরে গিয়ে শেষ হয় বিকেল সোয়া পাঁচটায়। পথে রাজাপুর উপজেলায় আরেকটি পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। বিএনপির এ রোড মার্চে নেতৃত্ব দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ও সেলিমা রহমান।
বরিশাল বিভাগীয় রোড মার্চ সমাপ্তির পর পিরোজপুরের কাউখালীর শিয়ালকাঠি চৌরাস্তা মাঠের সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন পিরোজপুর জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক অধ্যক্ষ আলমগীর হোসেন। প্রধান অতিথি বিএনপি জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপি জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীর উত্তম, ভাইস চেয়ারম্যান এয়ারভাইস মার্শাল অবসরপ্রাপ্ত আলতাফ হোসেন চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান সরোয়ার, প্রধান বক্তা বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও বরিশাল বিভাগীয় রোড মার্চের প্রধান সমন্বয়কারী হারুনুর রশীদ, বিশেষ বক্তা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বরিশাল বিভাগীয় রোড মার্চের সমন্বয়কারী অ্যাড. বিলকিস জাহান শিরিন, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুল হক নান্নু। আরও বক্তব্য রাখেন সাবেক সাংসদ নাজিম উদ্দিন আলম, যুবদল সভাপতি সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকু, সহ সভাপতি নুরুল ইসলাম নয়ন, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, যুগ্ম সম্পাদক কামরুজ্জামান দুলাল, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী, সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান, সহ সভাপতি সিরাজুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান সোহান, যুবদল নেতা জাকির হোসেন নান্নু, তসলিম উদ্দিন, ভান্ডারীয়া বিএনপি সভাপতি আহম্মেদ সোহেল মঞ্জুর সুমন, স্বরূপকাঠি বিএনপি সভাপতি অহিদুজ্জামান, কাউখালী বিএনপি সভাপতি এস এম আহসান কবীর, পিরোজপুর জেলা ছাত্রদল সভাপতি হাসান আল মামুন প্রমুখ।
বরিশাল বিভাগে সাংগঠনিক জেলা বরিশাল উত্তর ও দক্ষিণ জেলা এবং মহানগর, ঝালকাঠি, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, পিরোজপুর জেলা থেকে বিপুল সংখ্যক বাস, ট্রাক, মাইক্রো বাস, মোটরসাইকেল নিয়ে রোড মার্চে অংশ নেন নেতাকর্মীরা।
মেয়া/এনএইচ