ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৮ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

মানবাধিকার দিবস

বিএনপির সমাবেশের অনুমতি নিয়ে আ.লীগের প্রশ্ন 

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:১৫, ১১ ডিসেম্বর ২০২৩  
বিএনপির সমাবেশের অনুমতি নিয়ে আ.লীগের প্রশ্ন 

মানবাধিকার দিবসে রাজধানীতে আওয়ামী লীগকে সমাবেশের অনুমতি না দিয়ে বিএনপিকে প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি একে ‘অন্যায় আচরণ’ বলে অভিহিত করেছেন।

সোমবার (১১ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতাদের যৌথসভায় নির্বাচন কমিশনের দ্বিচারিতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি।

মানবাধিকার দিবসে বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে বড় সমাবেশ করতে চেয়েও অনুমতি না পাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে অনুমতি চেয়েছিলাম। তারা আমাদের বাইরে সমাবেশ না করতে অনুরোধ জানিয়েছে। আমরা সম্মানের সাথে তাদের অনুরোধ রেখেছি। কিন্তু, যারা নির্বাচন পণ্ড করার জন্য নাশকতা করছে, তাদেরকে মানবাধিকার দিবসে প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ করার অনুমতি কীভাবে দিলেন?’ 

‘আমরা পেলাম না, আমরা নির্বাচনের পক্ষের শক্তি। আর যারা বিরোধী, তাদের কেন অনুমতি দেওয়া হলো, এই প্রশ্ন আমার থাকল। এটা হয় না। নির্বাচনবিরোধীদের এই আশ্রয়-প্রশ্রয় আপনারা কেন দিলেন? এখানে কি ন্যায়বিচার হলো? আপনি আমাকে দিলেন না, দিলেন তাদের, যারা নির্বাচন ভণ্ডুল করতে চায়।’

সারা দেশে নেতাকর্মীদের আচরণবিধি মেনে চলার পাশাপাশি সতর্ক পাহারায় থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনবিরোধী শক্তি বিএনপির নেতৃত্বে যে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে, জনগণকে নিয়ে এদেরকে প্রতিহত করতে হবে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচনের পক্ষে সারা দেশে সুবাতাস বইতে শুরু করেছে। তারা হরতাল-অবরোধ দিচ্ছে, কিন্তু মানুষ তা মানছে না।

বিএনপির ‘সন্ত্রাসনির্ভর’ রাজনীতি নিয়ে গণমাধ্যমে সেভাবে প্রতিবেদন আসছে না, অভিযোগ করে গণমাধ্যমের দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

তিনি বলেন, বিএনপি পুলিশের ওপর হামলা করলো, হাসপাতালে হামলা করলো, অগ্নিসন্ত্রাস—এসব নিয়ে কলাম আর প্রতিবেদন আসে না। সাংবাদিকের ওপর সেদিন হামলা হয়েছে। আপনাদেরও দায়িত্ব আছে। এই অশুভ শক্তি শুধু দেশের না, সাংবাদিকদেরও শত্রু। এদের পক্ষে আপনারা যদি বায়াস্ট হয়ে লেখেন, সেটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। 

দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নৌকার প্রার্থীর সঙ্গে মল্লযুদ্ধে নামা যাবে না বলে সতর্ক করে দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, শৃঙ্খলার সাথে থাকতে হবে। প্রতিযোগী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এখানে কোনো প্রকার সন্ত্রাসীরা প্রশ্রয় পায়, এমন কোনো কাজ করা যাবে না। নৌকার সাথে মল্লযুদ্ধে নামা যাবে না। নির্বাচন নিয়ে বদনামের ভাগিদার হতে চাই না। এমন নির্বাচন করতে চাই, সারা বিশ্ব প্রশংসা করবে।   

মনোনয়নবঞ্চিতদের হতাশ না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আওয়ামী লীগ কোনো না কোনোভাবে নেতাকর্মীদের মুল্যায়ন করে, শেখ হাসিনা কখনো অবমূল্যায়ন করেন না।

এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, হামলা করলে মামলা হবে, মামলা হলে গ্রেপ্তার হবে, সাজা হবে। পুলিশ মারবেন, এটা কি বিনাবিচারে যাবে? 

সারা বাংলাদেশে আন্দোলনের নামে বিরোধী রাজনৈতিক দল যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে, তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলে রাজপথে থাকায় নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ জানান ওবায়দুল কাদের। 

তিনি জানান, বিজয় দিবস উপলক্ষে আগামী ১৮ ডিসেম্বর রাজধানীতে বিজয় র‍্যালি করবে আওয়ামী লীগ। ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন থেকে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর পর্যন্ত র‍্যালি করা হবে। ১৪ ডিসেম্বর শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হবে। সেদিন বিকেলে আওয়ামী লীগের আলোচনা সভা হবে। আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা তাতে সভাপতিত্ব করবেন। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস উদযাপন করা হবে। সেদিন দলের পক্ষ থেকে সাভারের স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানানো হবে। ১৭ ডিসেম্বর বিজয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা হবে। ১৮ ডিসেম্বর বিজয় র‌্যালি করা হবে। 

যৌথসভায় উপস্থিত ছিলেন—আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, সুজিত রায় নন্দী প্রমুখ। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতারা সভায় অংশ নেন।

পারভেজ/রফিক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়