আমিরের নির্দেশে নেতাকর্মীরা হিন্দুদের বাড়িঘর পাহারা দিয়েছেন: বুলবুল
বিশেষ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম
জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেছেন, “৫ আগস্ট পরবর্তী জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান ঢাকেশ্বরী মন্দিরে গিয়ে হিন্দু ধর্মাবলম্বী নেতাদের আশ্বস্ত করেছেন তাদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষায় জামায়াতে ইসলামীর কর্মীরা পাহারাদারের ভূমিকা পালন করবেন। পরবর্তীতে সারা দেশে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীসহ এদেশের আলেম-ওলামা হিন্দুদের বাড়িঘর পাহারা দিয়েছেন।”
বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের (ঢাকা-৬ আসনের) উদ্যোগে মন্দির ও পূজা কমিটির সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বুলবুল বলেন, “হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা এরই মধ্যে স্বীকারও করেছেন পাচ আগস্ট পরবর্তীতে জামায়াতে ইসলামীর কোনো নেতাকর্মী কিংবা এদেশের মাদরাসার কোনো ছাত্র-শিক্ষক হিন্দুদের সম্পদ লুট করেনি, ভাঙচুর করেনি। বরং যারা নিজেদের হিন্দু সম্প্রদায়ের পক্ষের লোক দাবি করেছে তারাই হিন্দুদের বাড়িঘর লুট করেছে, সম্পদ দখল করেছে।”
স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও এদেশে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের নিরাপত্তা ও অধিকার নিশ্চিত হয়নি দাবি করে জামায়াতের এই নেতা বলেন, “অতীতে যারা সরকারে ছিল তারা ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের অধিকার লুণ্ঠন করেছে। ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যালঘু বানিয়ে রেখেছিল। জামায়াতে ইসলামি সংখ্যালঘু কিংবা সংখ্যাগরিষ্ঠ নীতিতে বিশ্বাসী না। জামায়াতে ইসলামী মনে করে রাষ্ট্রের কাছে প্রতিটি নাগরিক সমান।”
ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠিত হলে প্রত্যেক ধর্মের মানুষ নিজ-নিজ ধর্ম পালনে স্বাধীনতা লাভ করবে উল্লেখ করে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, “মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে সূরা বাকারাহর ২৫৬ নম্বর আয়াতে বলেছেন ধর্মের ব্যাপারে বাড়াবাড়ির সুযোগ নেই। সূরা নিসার ২৯ নম্বর আয়াতে নির্দেশ দিয়েছেন, একে-অপরের সম্পদ গ্রাস করিও না। এই দুটি আয়াতের দিকে তাকালেই বুঝা যায়, ইসলাম ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের অধিকারের ব্যাপারে কতটা সুনির্দিষ্ট করে নির্দেশনা দিয়েছে।কিন্তু যারা ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে তারা ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠার বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের মাঝে ভয়ভীতি সৃষ্টি করেছে।”
এখনো তাদের ধর্মীয় উৎসব পালন করতে হলে ধর্মীয় উপাসনালয় পাহারা দিতে হয় জানিয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির বুলবুল বলেন, “মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিতে হবে। জামায়াতে ইসলামী রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠিত করে প্রতিটি মানুষের নিরাপত্তা ও অধিকার সমানভাবে নিশ্চিত করা হবে। ইসলামি রাষ্ট্রের দায়িত্ব হচ্ছে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করা। জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা-৬ সংসদীয় আসন কমিটির নির্বাচন পরিচালক কামরুল আহসান হাসানের সভাপতিত্বে রাজধানীর স্বামীবাগের ঢাকা পার্টি সেন্টারে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি, ঢাকা-৬ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ড. আব্দুল মান্নান, বাংলাদেশ হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব অ্যাডভোকেট গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক।
এছাড়াও সভায় বিভিন্ন মন্দির কমিটির সভাপতি-সেক্রেটারিসহ ভিন্ন ধর্মাবলম্বী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি