ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

১০ বছর পর বরগুনায় আউশের বাম্পার ফলন

ইমরান হোসেন, বরগুনা  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৪৫, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২১   আপডেট: ১৩:৪৬, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২১
১০ বছর পর বরগুনায় আউশের বাম্পার ফলন

বরগুনায় আউশ ধানের চিত্র

প্রতিবছর আউশ ধান চাষে কৃষকদের লোকসান হলেও এবার কাটার আগেই লাভের আশা করছেন বরগুনার কৃষকরা। কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, আউশের বাম্পার ফলনের জন্য কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে এবার সফলতা পেয়েছেন তারা।

লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ফলন হওয়ায় আউশ চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের। এদিকে তেমন একটা রোগ বা পোকামাকড়ের আক্রমণ নেই। আর খুব কম খরচে অধিক ফসল ঘরে তুলতে পারছেন তারা।

সদরের বদরখালী, ফুলঝুড়ি, মাইঠা, কুমড়াখালী, গীলাতলী, বুড়িরচর, গলাচীপা এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কৃষকরা উন্নত জাতের (ব্রি. ধান-৪৮,২৩,৮৭) আউশ ধান চাষ করে অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশি ফলন পেয়েছেন।

বদরখালী এলাকার কৃষক আবু-সালেহ রাইজিংবিডিকে বলেন, গত ১০ বছর ধরে আউশ ধান চাষ করে লোকসান হতো কৃষকদের। তবে এবার আউশে ভরে গেছে ক্ষেত। এ জাতের ধানে সেচের পানিতে খরচ কম। রোগ-বালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণও কম।

একই এলাকার কৃষক মো. জুলফেকার (৬৬) বলেন, ১১ বছর বয়স থেকে কৃষি কাজ শুরু করি। অন্য কাজের অভিজ্ঞতা না থাকায় কৃষিতেই নির্ভর করতে হয়। আমন-ইরি ধান চাষে প্রতিবছর লাভ হলেও বরাবরই আউশ চাষে লোকসান হতো আমাদের। তবে, এবারই প্রথম আউশের বাম্পার ফলন হয়েছে। 

তিনি বলেন, আমার জীবনে আউশের এমন ফলন দেখি নাই। যে পরিমাণ ধান পেকেছে, তাতে মনে হয় আমন-ইরির থেকেও বেশি লাভ হবে এবার আউশ ধানে।

বুড়িরচর এলাকার কৃষক আব্দুল খালেক, সোবাহান, সেলিম, জুয়েলসহ একাধীক কৃষকরা জানান, এবার আউশে সব থেকে বেশি লাভ হবে বরগুনার কৃষকদের। মাটি এবার আউশের জন্য উর্বর মনে হচ্ছে তাদের কাছে। ভাদ্র মাসের শেষের দিকে আউশ ধান কাটা শুরু হয়। আবহাওয়া অনেকটা ভালো।এই বছর সরকার কৃষকদের বিভিন্ন ধরনের প্রণোদনা ও বীজ, সার দিয়ে চাষিদের উৎসাহিত ও সহযোগিতা করেছে। এতে বাম্পার ফলন হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আধুনিক উচ্চ ফলনশীল (উচ্চফলনশীল ৭০ শতাংশ, স্থানীয় ৩০ শতাংশ) ধানের বীজ কৃষকদের দেওয়া হয়েছে। আউশ আবাদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে। চলতি মৌসুমে ২৪ হাজার ২৯১ হেক্টর জমিতে আউশ ধান আবাদ হয়েছে।

এসময় তিনি আরও বলেন, আমরা ভোলার কৃষকদের বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগিতায় ব্রি হাইব্রিড ৭ জাতের আউশ ধানের বীজ পরীক্ষামূলক চাষ করার জন্য বিনামূল্যে দিয়েছি। আর পরীক্ষামূলকই আমরা সফল হয়েছি। কৃষকরা হেক্টর প্রতি ৭ টন করে ধান পাচ্ছেন।

এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বরগুনা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আবদুর রশীদ বলেন, বছরের পর বছর আমরা চেষ্টা করেছি আউশের বাম্পার ফলনের জন্য। তবে আমরা ব্যর্থ হয়েছি বার বার। কৃষকদের কেউ কেউ আউশ চাষে অনীহা প্রকাশ করেছেন। কিন্তু কিছু কিছু কৃষক হাল ছাড়েননি। আর সেসব কৃষকরাই ভালো ফলন হওয়ায় খুশি হয়েছে। 

আমরা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে ফসল উৎপাদনে সব ধরনের সহযোগিতা করে যাচ্ছি। এবছর জেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক আউশ ধান ফলন হয়েছে। আমরা যেহেতু এবার সফলতা পেয়েছি, আগামীতে আরও বেশি সফলতা আসবে, বলেন তিনি। 

/মাহি/ 

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ