গাজীপুরে বাগানজুড়ে দার্জিলিং কমলার বাহার
রেজাউল করিম, গাজীপুর || রাইজিংবিডি.কম
![গাজীপুরে বাগানজুড়ে দার্জিলিং কমলার বাহার গাজীপুরে বাগানজুড়ে দার্জিলিং কমলার বাহার](https://cdn.risingbd.com/media/imgAll/2023December/Gazipur-1-2312051130.jpg)
গাছের ডালে ঝুলে রয়েছে দার্জিলিং কমলা
পায়ে হাঁটা পথ। দুই পাশে গাছ জুড়ে রয়েছে রসে টইটুম্বুর পাকা কমলার থোক। রং ও আকার দেখে গাছ থেকে পছন্দ মতো কমলা তুলে নিচ্ছেন ক্রেতা। এ চিত্র গাজীপুরের শ্রীপুরের সাতখামাইর পশ্চিমপাড়া এলাকায়। দার্জিলিং জাতের বড় আকারের রঙিন কমলাগুলো মিলছে সেখানে। সরাসরি বাগান থেকে নেওয়ায় বাজারের তুলনায় দামও কিছুটা কমে পাচ্চেন ক্রেতারা।
২০২১ সালে মো. অলিউল্লাহ বাইজিদ, মো. ফারুক আহমেদ, মো. আব্দুল মতিন ও মো. আইনুল হক এই চারজন মিলে বাগানটি শুরু করেন। এর নাম রাখেন তাওয়াক্কালনা ফ্রুট এন্ড এগ্রো লিমিটেড। কমলা ছাড়াও বাগানে পাওয়া যায় বিভিন্ন জাতের আম, বল সুন্দরী বরই, সফেদা, জাম্বুরা ও ড্রাগন ফল।
বাগানের ভেতরে প্রবেশ করতেই দেখা মেলে আঙ্গুর ফল গাছের মাচা। মাথার ওপর ঝুলছে ছোট ছোট আঙ্গুরের থোকা। আঙ্গুর গাছের মাচা পেরিয়ে আম বাগানের ভেতর পায়ে হাঁটা পথ। এই পথে কিছুটা এগিয়ে গেলেই কমলা বাগানের শুরু। সারি সারি কমলা গাছের বাগানের ভেতর হেঁটে বেড়ানোর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। চারদিকে শুধু কাঁচা-পাকা কমলার থোকা।
কমলা বাগানের সার্বিক তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে থাকা বাদল মিয়ার ছেলে মো. সবুজ মিয়া। তিনি বলেন, গত ১৫ দিন ধরে বাগান থেকে কমলা বিক্রি শুরু হয়েছে। একই সঙ্গে বিক্রি হচ্ছে কাটিমন আম। গাছ থেকে নিজ হাতে তুলে প্রতি কেজি কমলা ক্রেতারা কিনতে পারছেন ২০০ টাকা দরে।
তিনি আরও বলেন, তাদের বাগানে ১০০টি দার্জিলিং ও ৫০টি চায়না ম্যান্ডারিন কমলা গাছের চারা আছে। এগুলোর মধ্যে প্রায় ৭০ শতাংশ গাছে আশানুরূপ ফলন এসেছে। একেকটি দার্জিলিং জাতের কমলার ওজন ২০০ থেকে ২৫০ গ্রাম। ২০২২ সালে এই বাগান থেকে প্রায় ২ লাখ টাকার বল সুন্দরী বরই বিক্রি হয়েছে। ক্রেতারা বাগান থেকেই বড়ই কিনে নিয়েছেন।
সবুজ মিয়া জানান, চারজন উদ্যোক্তা মিলে ২০২১ সালে ৮ বিঘা জায়গায় ১০ বছরের চুক্তিতে ভাড়া নেন। এরপর সেখানে দেড় বিঘা এলাকায় দুই জাতের কমলা চারা রোপণ করেন। মোট জমির বাকি অংশে বড়ই, আম, সফেদা , জাম্বুরা ও ড্রাগন ফ্রুট চাষ করেন। আম চাষ করা হচ্ছে আল্ট্র ডেনসিটি পদ্ধতিতে। নাটোর থেকে উন্নত জাতের কমলার চারা এনে বাগানে রোপণ করেছেন তারা। প্রায় তিন বছরের মাথায় ২০২৩ সালে কমলা বাগান থেকে ফলন আসা শুরু করেছে।
কমলা বাগানের তত্ত্বাবধায়ক সবুজ মিয়া বলেন, বিদেশ থেকে আমদানি করা কমলার চেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা পাচ্ছে নিজ হাতে বাগান থেকে তুলে কমলা কেনার এই পদ্ধতি। প্রতিদিন দূর দূরান্ত থেকে অনেকেই বাগানে এসে কমলা কিনে নিচ্ছেন। এসব কমলা বাজারের অন্যান্য কমলার তুলনায় স্বাদ ও পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ।
কমলা বাগানের উদ্যোক্তাদের একজন মো. অলিউল্লাহ বাইজিদ বলেন, প্রথম বছর আশানুরূপ ফলন এসেছে। বাগানের বয়স বাড়লে আরো বেশি ফলন পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। ক্রেতাদের কাছে অর্গানিক তরতাজা ফল তুলে দিতে পারছি এতেই আমরা খুশি।
মাসুদ
আরো পড়ুন