ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

উইন্ডোজ ১১-তে যেসব সুবিধা রয়েছে

প্রকাশিত: ১৮:০১, ৩০ জুন ২০২১  
উইন্ডোজ ১১-তে যেসব সুবিধা রয়েছে

সম্প্রতি উইন্ডোজ ১১ উন্মোচন করেছে মাইক্রোসফট। উইন্ডোজের সর্বশেষ এই সংস্করণে রয়েছে ইনটিউটিভ ডিজাইন ফিচার, যা মাল্টি টাস্কিংকে করেছে আরো সহজ। সম্পূর্ণ নতুন মাইক্রোসফট স্টোরে ব্যবহারকারীরা এখন সহজেই খুঁজে পাবেন অ্যাপ, গেম ও মুভি। কাজ, শেখা, বিনোদন সকল ক্ষেত্রেই নতুন উইন্ডোজ ১১ ব্যবহারকারীদের অনন্য অভিজ্ঞতা দেবে।  

এ সম্পর্কে মাইক্রোসফটের চিফ প্রোডাক্ট অফিসার পানোস পানায় বলেন, ‘কম্পিউটার ব্যবহারের ধরনে আমূল পরিবর্তন লক্ষ্য করেছি আমরা। আগে কম্পিউটার কাজের প্রয়োজনে ও ব্যবহারিক কাজের অংশ হিসেবে ব্যবহার করা হতো, এখন কম্পিউটারের ব্যবহার ব্যক্তিগত জীবন ও অনুভূতির ক্ষেত্রেও সম্পৃক্ত হয়েছে। এ বিষয়টি আমাদেরকে কোটি কোটি মানুষের আস্থার প্ল্যাটফর্ম উইন্ডোজ’র পরবর্তী প্রজন্ম তৈরিতে অনুপ্রেরণা দিয়েছে। উইন্ডোজ ১১ এর মাধ্যমে আমরা এমন একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে চেয়েছি যেখানে প্রত্যেকে আরো ভালোভাবে নতুন নতুন জিনিস তৈরি করবে, শিখতে পারবে এবং নিজেদের কানেক্ট করতে পারবে।’

এ বছরের শেষের দিকে নতুন কম্পিউটারে পাওয়া যাবে উইন্ডোজ ১১। এছাড়া উইন্ডোজ ১০ থাকা কম্পিউটারে বিনামূল্যে উইন্ডোজ ১১ আপগ্রেড হবে।

কাজের গতি বাড়াতে দ্রুততর এবং আরও নিরাপদ ওএস 

ব্যবহারকারীদের সহজে কাজ সম্পন্ন করতে এবং তাদের সৃষ্টিশীলতাকে উৎসাহ প্রদানে উইন্ডোজ ১১-তে রয়েছে নতুন ও সহজ ইন্টারফেস এবং সাবলীল সব ফিচার। স্ক্রিনের কেন্দ্রে থাকা স্টার্ট বাটনটি ক্লিক করে ব্যবহারকারীরা সহজেই তাদের প্রয়োজনীয় জিনিসগুলি খুঁজে নিতে পারবেন। স্টার্ট বাটনটি ক্লাউড ও মাইক্রোসফট ৩৬৫ ব্যবহার করে, যা বিভিন্ন ডিভাইস ও প্ল্যাটফর্মে ব্যবহৃত সর্বশেষ ফাইল ব্যবহারকারীদের দেখাবে। এতে ব্যবহারকারী অ্যান্ড্রয়েড বা আইওএস অন্য কম্পিউটারে কাজ করা সর্বশেষ ডকুমেন্ট সহজেই খুঁজে নিতে পারবেন। 

উইন্ডোজ ১১-এর স্ন্যাপ লেআউট, স্ন্যাপ গ্রুপ ও ডেস্কটপ এর মতো ফিচারগুলো আরো ভালোভাবে  উইন্ডোজ ব্যবহারে সহায়তা করবে। পাশাপাশি ব্যবহারকারীরা স্ক্রিন রিয়েল এস্টেট (কোনো অ্যাপ্লিকেশনের আউটপুট প্রদানে ডিসপ্লে’তে থাকা জায়গা) -এর সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে পারবেন। কম্পিউটারের স্ক্রিনে একইসঙ্গে কয়েকটি উইন্ডোজ ব্যবহারের সুবিধার পাশাপাশি একাধিক অ্যাপ পাশাপাশি রেখে একসঙ্গে সাবলীলভাবে কাজ করার সুবিধা পাওয়া যাবে। ডেস্কটপের মাধ্যমে কাজ, গেমিং বা স্কুলসহ যেকোনো জিনিসের জন্য ব্যবহারকারীরা স্পেস কাস্টোমাইজ করতে পারবেন এবং সেগুলো সুবিধা অনুযায়ী পরিবর্তন করাতে পারবেন। 

উইজেটস-এর মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা তাদের পছন্দসই তথ্য জানতে পারবেন। এটি এআই প্রযুক্তির ব্যবহার করে ব্যবহারকারীর পছন্দ অনুযায়ী নির্বাচিত নিউজ ফিড দেখাবে। হালনাগাদ উইন্ডোজে মাইক্রোসফট এজ ব্রাউজারে ব্রাউজিং অভিজ্ঞতা হবে আরো উন্নত। ক্রিয়েটর ও পাবলিশারদের জন্য উইজেটস পার্সোনালাইজড কন্টেন্ট প্রদানে নতুন রিয়েল এস্টেট চালু করবে।

হাইব্রিড ওয়ার্ক (অনলাইন ও অফলাইনে কাজের সমন্বয়) ও শেখার ক্ষেত্রে সুরক্ষিত অপারেটিং সিস্টেম প্রদানে বিশেষভাবে ডিজাইন করা হয়েছে উইন্ডোজ ১১। এতে বিল্ট-ইন সুরক্ষা প্রযুক্তি রয়েছে এবং বিভিন্ন ডিভাইস ব্যবহারে ও তথ্য সুরক্ষিত রাখতে রয়েছে জিরো ট্রাস্ট-রেডি অপারেটিং সিস্টেম।

গেমিং, বিনোদন ও কানেক্টেড থাকার ক্ষেত্রে উন্নত অভিজ্ঞতা

উইন্ডোজ ১১- এর সঙ্গে রয়েছে নতুন অল-নিউ মাইক্রোসফট স্টোর। এতে রয়েছে ফার্স্ট ও থার্ড পার্টি অ্যাপের বিশাল ক্যাটাগরি। অ্যান্ড্রয়েডের অ্যাপগুলোও এখন থেকে প্রথমবারের মতো মাইক্রোসফট স্টোরে পাওয়া যাবে। ব্যবহারকারীরা অ্যামাজন অ্যাপ স্টোরের মাধ্যমে সেগুলো ডাউনলোড করতে পারবেন। এই দারুন ব্যাপারটি সম্ভব হয়েছে মাইক্রোসফট ও অ্যামাজনের পার্টনারশিপের মাধ্যমে।

উইন্ডোজ ১০ এর মতোই উইন্ডোজ ১১-তেও অ্যাপ অ্যাসিউর এর মাধ্যমে অ্যাপ কম্প্যাটিবিলিটি নিশ্চিত করেছে মাইক্রোসফট। অ্যাপ এসিউর এর মাধ্যমে অতিরিক্ত কোনো খরচ ছাড়াই ১৫০ বা তারও বেশি অ্যাপ বিষয়ক সমস্যার সমাধান করা হয়। 

উইন্ডোজ ১১ সিস্টেম হার্ডওয়্যারের পূর্ণ সম্ভাবনা উন্মোচন করবে; ফলে, সাম্প্রতিক কিছু গেমিং প্রযুক্তি উইন্ডোজ সমর্থন করবে। উইন্ডোজ ১১ নিম্নোক্ত বিষয়গুলোর মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের দুর্দান্ত গেমিং অভিজ্ঞতা দিবে:

* ডিরেক্টএক্স ১২ আলটিমেট: এখানে ব্যবহারকারীরা উচ্চ ফ্রেম রেটে অসাধারণ গ্রাফিক্স অভিজ্ঞতা লাভ করবেন।

* ডিরেক্টস্টোরেজ – লোড টাইম আরো দ্রুত হবে এবং গেমের দুনিয়া পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে উপভোগ করা যাবে।

* মিলবে ১শ’র বেশি হাই-কোয়ালিটি পিসি গেম ও নতুন গেম খেলার সুযোগ, যা পিসি’র জন্য এক্সবক্স গেম পাস বা আল্টিমেট ক্রেতাদের জন্য সহজলভ্য করা হয়েছে।

উইন্ডোজ ১১ এর ইন্টিগ্রেশন অব মাইক্রোসফট টিমস ইনটু টাস্কবার এর মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা আরও দ্রুত উপায়ে তাদের প্রিয় মানুষের সঙ্গে কানেক্টেড থাকতে পারবেন। এর মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে টেক্সট, চ্যাট, ভয়েস ও ভিডিওর মাধ্যমে পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে থাকা উইন্ডোজ, অ্যান্ড্রয়েড বা আইওএস ব্যবহারকারী প্রিয়জনের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাবে। টু-ওয়ে-এসএমএস এর মাধ্যমে টিমস অ্যাপ ব্যবহার করে না, এমন বন্ধু ও পরিবারের সদস্য সঙ্গে যোগাযোগ করা যাবে। ব্যবহারকারীরা টাস্কবার থেকে সরাসরি টিমস প্রেসেন্ট কিংবা মিউট করতে পারবেন।

ক্রিয়েটর ও ডেভেলপারদের জন্য আরও উন্মুক্ত ইকোসিস্টেম তৈরি 

মাইক্রোসফট উইন্ডোজ ১১ এর মাধ্যমে ক্রিয়েটর ও ডেভেলপারদের জন্য আরো উন্মুক্ত ইকোসিস্টেম তৈরির মাধ্যমে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে। এর মাধ্যমে ডেভেলপাররা ব্যবহারকারীদের জন্য আরও অনেক বেশি অ্যাপ, গেম, মুভি, টিভি শো এবং ওয়েব কন্টেন্ট তৈরি করতে পারবেন। যেখানে: 

* ডেভেলপার ও ইন্ডিপেনডেন্ট সফটওয়্যার ভেন্ডরস অ্যাপ (আইএসভিএস) তাদের অ্যাপগুলো মাইক্রোসফট স্টোরে আনতে পারবেন। এক্ষেত্রে, উইন৩২ কিংবা প্রোগ্রেসিভ ওয়েব অ্যাপ (পিডব্লিউএ) ফ্রেমওয়ার্ক কোনো বাঁধা হবে না। 

* মাইক্রোসফটের রেভিনিউ শেয়ার নীতি পরিবর্তনের ফলে ডেভেলপাররা তাদের শতভাগ ব্যবসায়িক রেভিনিউ পাবেন। অ্যাপ ডেভেলপাররা এখনও ৮৫/১৫ রেভিনিউ শেয়ারে মাইক্রোসফটের বাণিজ্যিক ইকোসিস্টেম ব্যবহার করতে পারবেন। 

উইন্ডোজ ১১-এর আরো বিস্তারিত ফিচার জানতে এখানে ভিজিট করুন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়