টেপ টেনিসের অভিজ্ঞতায় উজ্জ্বল সাইফউদ্দিন
ইয়াসিন হাসান || রাইজিংবিডি.কম
ইয়াসিন হাসান, কক্সবাজার থেকে : উপমহাদেশে টেপ টেনিস বল দিয়ে ক্রিকেট খেলেননি এমন ক্রিকেটার পাওয়া দূর্লভ। অন্ত্ত বাংলাদেশে যারা বড় মাপের ক্রিকেটার হয়েছেন তারা নিয়মিত টেপ টেনিসের বল দিয়েই ক্রিকেট বুঝতে শিখেছেন।
এদেশের ক্রিকেটে একটা অলিখিত নিয়ম আছে, একবার ক্রিকেট বল হাতে নেওয়ার পর আর টেপ টেনিস বল দিয়ে ক্রিকেট খেলা যাবে না! কোচদের ব্যাখ্যা ক্রিকেট বল দিয়ে খেলার পর টেপ টেনিস বল দিয়ে খেললে ‘রিদম’ নষ্ট হয়ে যায়। অনেকেই তা মেনে আজ বড় তারকা হয়েছেন। যারা মানতে পারেননি তারা নিজেদেরকে হারিয়ে খুঁজছেন।
বাংলাদেশের যুব ক্রিকেটার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের ক্রিকেট খেলা শুরু টেপ টেনিস বল দিয়ে। টেপ টেনিস বল দিয়ে খেলে পাড়া-মহল্লা চষে বেড়িয়েছেন। ভাড়ায় খেলতে গিয়েছেন বিভিন্ন জেলা-উপজেলা কিংবা শহরে। টেপ টেনিস দিয়ে খেলে যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন তা দিয়ে এখনো খেলে যাচ্ছেন বলে দাবি তার।
বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে এ অলরাউন্ডর মাত্র ১৭ রান করলেও বোলিংয়ে ছিলেন দূর্দান্ত। ৩০ রান দিয়ে তুলে নিয়েছেন ৩ উইকেট। প্রোটিয়া অলরাউন্ডার উইয়ান মুল্ডার, অধিনায়ক টনি জর্জির উইকেট নিয়ে শুরুতেই বাংলাদেশকে এগিয়ে নেন সাইফউদ্দিন। শেষ দিকে বল হাতে দারুণ ফুল লেন্থ ডেলিভারীতে আরেক প্রোটিয়া ব্যাটসম্যানকেও সাজঘরে ফেরত পাঠান। ডানহাতি এ পেসারের মূল অস্ত্র ইয়র্কার। সাইফউদ্দিন জানালেন, টেপ টেনিস ক্রিকেট খেলার সময় থেকেই ইয়র্কারের প্রতি আলাদা ভালোবাসা ছিল তার। সব সময় ডেড এন্ডে বোলিং করতে হত বলে ইয়র্কারটা বেশ ভালোভাবেই রপ্ত করেছেন তিনি।
সাইফউদ্দিনের ভাষ্য,‘ছোটবেলা থেকে পাড়ায় অনেক ক্রিকেট খেলতাম। ফেনী, কুমিল্লা, লক্ষীপুর, নোয়াখালি, সব জায়গায় খেলে বেড়াতাম। আমার দায়িত্ব থাকত ১৬ থেকে ২০ ওভারের মধ্যে বল করা। তখন থেকেই ইয়র্কার করতে করতে অভ্যাস হয়ে গেছ। টেপ টেনিসে আমার ইয়র্কারের অ্যাকুরেসিটাই ক্রিকেট বলে এসেছে। সেজন্য এখানেও ভালো করতে পারছি।’
শিষ্যর এমন প্রতিভায় মুগ্ধ কোচ মিজানুর রহমান বাবুল। রাইজিংবিডিকে তিনি বলেন,‘ওর ইয়র্কারটা আসলেও ভালো হয়। ও নিজ থেকেই এটা রপ্ত করেছে। আমরা তো সব সময়ই পাশে থাকি। কিন্তু কিছু জিনিস আছে যেগুলো ন্যাচারাল। সেগুলো ও নিজেই করেছে।’
ইয়র্কার ‘মাস্টার’ হলেও প্রতিদিন অনুশীলনে এটা নিয়ে আলাদা অনুশীলন করছেন সাইফউদ্দিন। কোচও তাকে প্রতিদিন ইয়র্কার নিয়ে আলাদা অনুশীলন করাচ্ছেন। ‘অনুশীলনে স্পট বোলিংয়ের পাশাপাশি ইয়র্কারও ২০-২৫টি বল ট্রাই করি। আমার জন্য আলাদা একটা নিয়ম আছে। প্রথমে ১৮-২০টি লেংথ বল করি। তারপর স্লগ ওভারের বোলিং অনুশীলনের জন্য কোচ আলাদা সময় রাখেন আমার জন্য।’
গতি নিয়ে আহামরি কোনো মাতামাতি নেই সাইফউদ্দিনের। নিয়ন্ত্রিত ও রান খরচে কিপটেমি করতে চান ১৯ বছর বয়সি এ পেস অলরাউন্ডার।
রাইজিংবিডি/কক্সবাজার/৩০জানুয়ারি২০১৬/ইয়াসিন / আমিনুল
রাইজিংবিডি.কম