ঢাকা     শুক্রবার   ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২১ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

১৯৭৮: ৬ গোলের ‘রহস্য’ নিয়ে আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়

মোহাম্মদ মেহেদী হাসান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:০২, ৭ ডিসেম্বর ২০২২   আপডেট: ১৪:১১, ৭ ডিসেম্বর ২০২২
১৯৭৮: ৬ গোলের ‘রহস্য’ নিয়ে আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়

আয়োজক: আর্জেন্টিনা, দল: ১৬, ভেন্যু: ৬, ফাইনাল: নেদারল্যান্ডস ও আর্জেন্টিনা, জয়ী: আর্জেন্টিনা (৩-১), ইতিহাস: ফাইনালে যাওয়ার জন্য দ্বিতীয় রাউন্ডের শেষ ম্যাচে পোলান্ডের বিপক্ষে আর্জেন্টিনাকে কমপক্ষে ৪ গোলের ব্যবধানে জিততে হতো। আর্জেন্টিনা সেই ম্যাচ জিতে নেয় ৬-০ গোলে! 

ঘরের মাঠে রাজা আর্জেন্টিনা। কথাটা বললে কি খুব বেশি ভুল হবে? হওয়ার তো কথা না। ১৯৭৮ সালের বিশ্বকাপ তো বলছে সে কথাই। সেবারই প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ আয়োজন করেছিল আর্জেন্টিনা। ১৯৬৬ সালের ৬ জুলাই আয়োজক হিসেবে আর্জেন্টিনার নাম ঘোষণা করে ফিফা। ইংল্যান্ড ও মেক্সিকো নিজেদের নাম প্রত্যাহার করে নেওয়ায় আর্জেন্টিনা সুযোগ পায় বিশ্বকাপ আয়োজনের। আর প্রথম আসরেই বাজিমাত তাদের। প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে প্রথম বিশ্বকাপের রানার্সআপরা।

আরো পড়ুন:

এক অদ্ভুত মায়ায় জড়িয়ে আছে ওই বিশ্বকাপ। ১৯৩০ সালে প্রথম বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলেছিল আর্জেন্টিনা। এরপর চার দশকের বেশি সময়ে বিশ্বকাপের নয়টি আসরে আর্জেন্টিনা শেষ চারে উঠতে পারেনি একবারও! ৭৮’এ ঘরের মাঠে সেমিফাইনালের টিকিট পাওয়ার পর তাদের আর আটকে রাখা যায়নি। মারিও কেম্পেস, ড্যানিয়েল বেরটনি কিংবা আলবের্টো টারানটিনিরা বিশ্বকাপের মুকুট জিতে শান্ত হন।

৬ গোল করে সেবার গোল্ডেন বুট পেয়েছিলেন আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড মারিও কেম্পেস। আর্জেন্টিনার ঘরে উঠেছিল ফিফা ফেয়ার-প্লে ট্রফিও। ২৫ দিনের টুর্নামেন্টটি শুরু হয়েছিল ১ জুন। আর্জেন্টিনার ৫টি শহরের ৬টি ভেন্যুতে হয়েছিল ১৬ দলের ৩৮টি ম্যাচ। ওই টুর্নামেন্টে মোট গোল হয়েছিল ৩৮টি। নেদারল্যান্ডসে ৩-১ গোলে হারিয়ে আর্জেন্টিনা জিতেছিল শিরোপা। ইতালিকে ২-১ গোলে হারিয়ে ব্রাজিল হয়েছিল তৃতীয়।

যদিও ওই বিশ্বকাপকে ঘিরে রয়েছে বিতর্ক। বিতর্ক আয়োজক আর্জেন্টিনাকে নিয়েই। ফাইনালে যাওয়ার জন্য দ্বিতীয় রাউন্ডের শেষ ম্যাচে আর্জেন্টিনাকে কমপক্ষে ৪ গোলের ব্যবধানে জিততে হতো। কারণ একই গ্রুপে থাকা ব্রাজিল আগের ম্যাচে পোলান্ডের বিপক্ষে জয় পায় ৩-১ ব্যবধানে। তাই পেরুর বিপক্ষে ৪ গোলের ব্যবধানে জিততে পারলেই আর্জেন্টিনা যাবে ফাইনালে।

কিন্তু বিতর্কের জন্ম দিয়ে আর্জেন্টিনা সেই ম্যাচ জিতে নেয় ৬-০ গোলে! প্রথমার্ধে মাত্র ২-০ গোলে এগিয়ে থাকলেও দ্বিতীয়ার্ধে ৪ গোল করেন কেম্পেস, হাউসম্যানরা। শুধু বিশ্বকাপ নয়, ফুটবল ইতিহাসের অমীমাংসিত রহস্য হিসেবে চিহ্নিত হয়ে রয়েছে ম্যাচটি।

সে সময় ইংলিশ গণমাধ্যম একাধিক প্রতিবেদন  করেছিল পেরুর গোলরক্ষককে নিয়ে। কারণ গোলরক্ষক জন্ম নিয়েছিলেন আর্জেন্টিনাতে। আবার কলম্বিয়ার গণমাধ্যম প্রতিবেদন করেছিল, রাজনৈতিক কারণে আর্জেন্টিনাকে বড় ব্যবধানে জিতিয়েছিল পেরু। কারণ সে সময়ে পেরুর গমের বিশাল অংশের জোগানদাতা ছিল আর্জেন্টিনা। এবং লাতিন আমেরিকার এক সাময়িকী জানায়, আর্জেন্টিনার জেলে বন্দী ১৩ জন পেরুর নাগরিককে মুক্তি দেওয়ার বদলে জয় দাবি করে আর্জেন্টিনা।

গুজব, বিতর্ক সেই সময় থেকে এখনো চলছে। ওই বিশ্বকাপের কোনো তদন্ত হয়নি, তাই সঠিক কোনো তথ্য ফিফা আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়নি। তবে দিন শেষে হাসিটা হাসেন ওই ড্যানিয়েল প্যাসারেলা। তার হাতেই ওঠে আর্জেন্টিনার প্রথম রুপালি ট্রফি।

১৯৭৪: নেদারল্যান্ডসের চমকে দেওয়া ‘টোটাল ফুটবল’ উপহার

তারা//

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়