জয়ের কাছাকাছি থেকে দিন শেষ করলো বাংলাদেশ
ক্রীড়া প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম
সংক্ষিপ্ত স্কোর
::প্রথম ইনিংস::
বাংলাদেশ: ৩১০/১০ ও নিউ জিল্যান্ড: ৩১৭/১০।
::দ্বিতীয় ইনিংস::
বাংলাদেশ: ৩৩৮/১০ (১০০.৪ ওভার),
নিউ জিল্যান্ড: ১১৩/৭ (৪৯ ওভার),
চতুর্থ দিন শেষে পিছিয়ে: ২১৯ রানে।
বাংলাদেশের ছুড়ে দেওয়া ৩৩২ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে সুবিধা করতে পারেনি নিউ জিল্যান্ড। বাংলাদেশের বোলিং তোপে রীতিমতো নাস্তানাবুদ তারা। ৬০ রান যেতে না যেতেই ৫ উইকেট হারানো নিউ জিল্যান্ড ৭ উইকেট হারিয়ে ১১৩ রান তুলে চতুর্থ দিন শেষ করেছে। বাংলাদেশের চেয়ে এখনো তারা ২১৯ রানে পিছিয়ে আছে। শেষ দিনে জিততে বাংলাদেশের প্রয়োজন ৩ উইকেট। আর নিউ জিল্যান্ডের প্রয়োজন ২১৯ রান। এই পরিস্থিতিতে যা অসম্ভবই বটে।
ড্যারিল মিচেল ৪৪ রানে অপরাজিত আছেন। তার সঙ্গে ৭ রানে অপরাজিত আছেন ইশ সোধী।
বল হাতে তাইজুল ইসলাম ৪টি উইকেট নিয়েছেন। ১টি করে উইকেট নিয়েছেন শরীফুল ইসলাম, মেহেদী হাসান মিরাজ ও নাঈম ইসলাম।
শতরান পেরিয়ে সপ্তম উইকেট হারালো নিউ জিল্যান্ড:
১০২ রানের মাথায় সপ্তম উইকেট হারালো নিউ জিল্যান্ড। তাইজুল ইসলামের বলে এলবিডব্লিউ হন কাইল জেমিসন। ২৮ বল খেলে ১ চারে ৯ রান করে যান তিনি। জিততে এখনো ২৩০ রান প্রয়োজন কিউইদের। একপ্রান্ত আগলে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ড্যারিল মিচেল।
ষষ্ঠ উইকেট হারালো নিউ জিল্যান্ড:
দলীয় ৬০ রানের মাথায় টম ব্লানডেলের উইকেট হারায় নিউ জিল্যান্ড। এরপর ড্যারিল মিচেল ও গ্লেন ফিলিপস মিলে দলীয় সংগ্রহকে টেনে নেন ৮১ পর্যন্ত। এই রানে গিয়ে ষষ্ঠ উইকেট হারায় কিউইরা। এবার নাঈমের ঘূর্ণিতে পরাস্ত হন ফিলিপস। ২৬ বলে ১ চারে ১২ রান আসে তার ব্যাট থেকে। এখনও তারা পিছিয়ে ২৫১ রানে।
তাইজুলের ঘূর্ণিতে ৫ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছে নিউ জিল্যান্ড:
তাইজুলের তৃতীয় শিকার ব্লান্ডেল। অনাকাঙ্ক্ষিত টার্ন ও বাউন্সে পরাস্ত ব্লান্ডেল। ব্যাকফুটে খেলতে চেয়েছিলেন। বল ব্যাটের কানা লেগে যায় উইকেটের পেছনে। সোহান ক্যাচ ধরতে ভুল করেননি। ৬ রানে ফেরেন ব্লান্ডেল। ৬০ রানে ৫ উইকেট হারালো কিউইরা। ক্রিজে ডেরিল মিচেলের সঙ্গী গ্লেন ফিলিপস।
এবার তাইজুলের শিকার কনওয়ে
৫০ রানের আগেই ৪ উইকেট নেই নিউ জিল্যান্ডের। সামনে আছে পাহাড়সম রান তাড়ার চ্যালেঞ্জ। উইলিয়ামসনের পর তাইজুলের শিকার কনওয়ে। বিপদের মুহুর্তে কিউইদের ভরসা হয়ে কনওয়ে ক্রিজে ছিলেন। কিন্তু ইনিংস বেশি লম্বা করতে দেননি তাইজুল। আউটসাইড অফের বল ডিফেন্স করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ব্যাটে-বলে এক হয়নি। বল ব্যাটে লেগে যায় শর্ট লেগে দাঁড়ানো শাহাদাত হোসেন দিপুর হাতে। ৪৬ রানে ৪ উইকেট হারালো নিউ জিল্যান্ড। ক্রিজে মিচেলের সঙ্গী ব্লান্ডেল।
কিউইদের ৩ উইকেট নিয়ে দ্বিতীয় সেশন বাংলাদেশের
দ্বিতীয় সেশনের শুরুতে দ্রুত তিন উইকেট হারিয়ে অলআউট হয় বাংলাদেশ। ৩৩২ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে নিউ জিল্যান্ডেরও শুরুটা ভালো হয়নি। প্রথম ওভারে লাথামের উইকেট হারানোর পর একে একে তারা হারিয়ে ফেলে কেন উলিয়ামসন ও হ্যানরি নিকোলস। দ্বিতীয় সেশন শেষে চা বিরতিতে যাওয়ার আগে কিউইদের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৩৭ রান। ডেভন কনওয়ে ১৮ ও ডেরিল মিচেল ৬ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন। বাংলাদেশের হয়ে ১টি করে উইকেট নেন শরিফুল-তাইজুল-মিরাজ।
তাইজুলের পর মিরাজের ঘূর্ণিতে চাপে নিউ জিল্যান্ড
তাইজুলের পর এবার মিরাজের আক্রমণ। অফের বলে সুইপ করতে চেয়েছিলেন নিকোলস। টাইমিং ঠিকঠাক হয়নি। অন সাইডে বল উঠে যায় আকাশে। শর্ট ফাইন লেগ থেকে দৌড়ে গিয়ে ক্যাচ নেন নাঈম। ৮ বলে ২ রান করেন নিকোলস। ক্রিজে কনওয়ের সঙ্গী ডেরিল মিচেল।
তাইজুলের ঘূর্ণিতে পরাস্ত উইলিয়ামসন
অফ ও মিডলের মাঝে ছোঁড়া তাইজুলের ঘূর্ণি বল ডিফেন্স করতে চেয়েছিলেন উইলিয়ামসন। বল ব্যাট ফাঁকি দিয়ে লাগে সামনের পায়ের নিচের দিকে। জোরালো আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার। রিভিউ নিতে দেরি করেননি এই অভিজ্ঞ ব্যাটার। তবে লাভ হয়নি। রিভিউতেও রায় আসে বাংলাদেশের পক্ষে। প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি করা উইলিয়ামসন ২৪ বলে ১১ রান করেন। ক্রিজে কনওয়ের সঙ্গী নিকোলস।
শূন্য রানে লাথামকে ফেরালেন শরিফুল
প্রথম ওভারেই বাংলাদেশকে সাফল্য এনে দিয়েছেন শরিফুল। পাঁচ বল ডট দিয়ে শেষ বলে কাটা পড়েন টম লাথাম। শরিফুলের ফোর্থ স্ট্যাম্পে করা বল ব্লক করতে চেয়েছিলেন লাথাম। কিন্তু টাইমিংয়ে গড়বড়। বল ব্যাটের কানায় লেগে যায় উইকেটের পেছনে। দারুণ ক্যাচ নেন সোহান। শূন্য রানে ফেরেন লাথাম। তার আউটের পর ক্রিজে কনওয়ের সঙ্গী উইলিয়ামসন।
নিউ জিল্যান্ডের সামনে ৩৩২ রানের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ল বাংলাদেশ
দ্বিতীয় ইনিংস এ ৩৩৮ রান করে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ। নাজমুল হোসেন শান্তর সেঞ্চুরি (১০৫) ও মুশফিকুর রহিমের ফিফটির (৬৭) ও শেষ দিকে মেহেদি হাসান মিরাজের অপরাজিত ফিফটিতে (৫০) চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় বাংলাদেশ। মাঝে শাহাদাত হোসেন দিপু ও নুরুল হাসান সোহান দায়িত্ব নিয়ে খেলতে পারলে লক্ষ্যটা আরও বড় হতো। কিউইদের হয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন অ্যাজাজ প্যাটেল। ২ উইকেট নেন ইশ সোধী।
বিরতির পর ফিরেই নেই ২ উইকেট
বিরতির পর দ্বিতীয় ওভারে সোধীর বলে পরাস্ত হন নাঈম। শর্ট লেগে ক্যাচ তুলে দেন লাথামের হাতে। ৪ রান করেন তিনি। ক্রিজে এসেই পরের ওভারে ফেরেন তাইজুল। প্যাটেলের বলে শূন্য রানে মিড অনে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। ক্রিজে আসেন শরিফুল। তিনি মিরাজকে দিচ্ছেন দারুণ সঙ্গ। সুযোহ পেলেই হাঁকাচ্ছেন বাউন্ডারি। অন্য দিকে দ্রুত রান তোলায় মনোযোগ মিরাজের।
মধ্যাহ্ন বিরতিতে বাংলাদেশ
আউট সাইড অফে ফিলিপসের বলে ওয়াইড মিড অফে বাউন্ডারির বাইরে পাঠান মেহেদি হাসান মিরাজ। বাংলাদেশ পেয়ে যায় চার রান। সঙ্গে লিড দুইশর ঘর পেরিয়ে চলে যায় তিনশর ঘরে। মিরাজের চারের মারে শেষ হয় প্রথম সেশন। বাংলাদেশ যায় মধ্যাহ্ন বিরতিতে। শান্তর উইকেট হারিয়ে শুরু হয়েছিল চতুর্থ দিন। এগিয়ে নিতে থাকেন মুশফিক। তিনি ৬৭ রান করে ফেরেন সাজঘরে। মাঝে দিপু ১৮ ও সোহান ১০ রানে আউট হন। মিরাজ ৩২ ও নাঈম ৩ রানে অপরাজিত আছেন। দিনের প্রথম সেশনে বাংলাদেশ ৪ উইকেট হারিয়ে ৯৬ রান করে।
সাজঘরে সোহানও
ফিলিপসকে বড় শট খেলতে চেয়েছিলেন নুরুল হাসান সোহান। ডাউন দ্য ট্র্যাকে এসেও কাজ হয়নি। টাইমিং মিস করেন। সোজা তুলে দেন বোলারের হাতেই। ১ চারে ২৭ বলে ১০ রান করেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার। তার আউটে বড় লক্ষ্যের দিকে ছুটতে থাকা বাংলাদেশ কিছুটা ব্যাকফুটে। ক্রিজে ভরসা হয়ে আছেন মিরাজ। তার দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের রান তিনশ ছাড়িয়ে যায়।ক্রিজে মিরাজের সঙ্গী নাইম হাসান।
বাঁচলেন মিরাজ, মুশফিকের বিদায়
মিরাজ দুই-দুবার জীবন পেয়ে টিকে আছেন ক্রিজে। মিড অফে ডাইভ দিয়ে দারুণ ক্যাচ নিয়েছিলেন নিকোলস। কিন্তু বল মাটি স্পর্শ করায় বেঁচে যান তিনি। এরপর স্লিপে আরেকবার জীবন পেয়েছেন এই অলরাউন্ডার। অন্যদিকে দারুণ খেলতে থাকা মুশফিক বিদায় নিলেন অ্যাজাজ প্যাটেলের বলে এলবিডব্লিউর শিকার হয়ে। ১১৬ বলে এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার আউট হন ৬৭ রানে। রিভিউ নিয়েছিলেন মুশফিক, কিন্তু কাজে আসেনি। তার আউটের পর ক্রিজে আসেন নুরুল হাসান সোহান।
দিপুর বিদায়ের পর আড়াইশ পেরোলো বাংলাদেশের লিড
ক্রিজে এসে চার দিয়ে রানের খাতা খোলেন শাহাদাত হোসেন দিপু। খেলতে থাকেন ওয়ানডে স্টাইলে। ১৯ বলের ইনিংসে চারের মারই চারটি। দিপু এভাবে চালিয়ে নিতে পারলেন না। ইশ সোধীর লেগব্রেকে পরাস্ত হন তিনি। বল ব্যাট মিস করে লাগে পায়ে। জোরালো আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার। ১৮ রানে ফেরেন দিপু। ক্রিজে আসেন মেহেদী হাসান মিরাজ। মিড অফে মাথার উপর দিয়ে চারের মারে বাংলাদেশের লিড পেরোয় আড়াইশ রান।
শান্তর বিদায়ের পর মুশফিকের হাফ সেঞ্চুরি
সাউদির হাঁফ ভলিকে স্লিপে খেলেন মুশফিকুর রহিম। ডাবলস নিয়ে ৮১ বলে দেখা পান ফিফটির। ৪৩ রানে দিন শুরু করেছিলেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার। শান্তর বিদায়ে বাংলাদেশের দিন শুরু হলেও দিপুকে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন মুশফিক। ব্যাট হাতে সাবলীল দেখা যাচ্ছে মুশফিককে। সুযোগ পেলেই বল পাঠাচ্ছেন বাউন্ডারির বাইরে।
শান্তর বিদায়ে শুরু হলো বাংলাদেশের দিন
দিনের দ্বিতীয় ওভারে আক্রমণে নিউ জিল্যান্ড। টিম সাউদির লেগ স্ট্যাম্পের বাইরে করা শর্ট বলে পরাস্ত হন নাজমুল হোসেন শান্ত। খোঁচা দিয়ে বসেন উইকেটের পেছনে। দিনের শুরুতে সেঞ্চুরিয়ান শান্তকে হারানো বাংলাদেশের জন্য ধাক্কা। ১০৪ রানে দিন শুরু করে মাত্র ১ রান যোগ করতে পেরেছিলেন অধিনায়ক হিসেবে প্রথম ম্যাচেই রেকর্ড গড়া শান্ত। ক্রিজে মুশফিকুর রহিমের সঙ্গী শাহাদাত হোসেন দিপু।
‘নিরাপদ’ লক্ষ্যের খোঁজে চতুর্থ দিন ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ
নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে সিলেট টেস্টের চতুর্থ দিন (শুক্রবার) মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। স্বস্তি নিয়ে তৃতীয় দিন শেষের পর চতুর্থ দিন লাল সবুজের দলের সামনে এবার নিজেদের অবস্থান আরও শক্ত করার পালা। বাংলাদেশের চাওয়া এখন এখন নিরাপদ লক্ষ্য। এখনো দুই দিন ও ছয়টি সেশন বাকি। বড় লক্ষ্য দিয়ে কিউইদের চাপে রাখতে পারলেই ম্যাচ থাকবে হাতের মুঠোয়।
বাংলাদেশ জানে না কোন লক্ষ্য নিরাপদ
তৃতীয় দিন শেষে সংবাদ সম্মেলনে আসেন মুমিনুল হক। তিনি বলতে পারেননি কোন লক্ষ্যটা নিরাপদ, ‘এটা (টার্গেট) বলাটা খুব কঠিন। আমার কাছে এখনও মনে হচ্ছে উইকেট ভালো। কত রান নিরাপদ এটা বলা অনেক কঠিন। ৪০০-ও হতে পারে, ৩৫০ও হতে পারে। কালকের উপর নির্ভর করে। কাল চতুর্থ দিন, অন্যরকম আচরণ করতে পারে। চার’শ হলে ঠিক আছে…।’
নিউ জিল্যান্ডের চাওয়া দ্রুত উইকেট
কাইল জেমিসন জানান চতুর্থ দিন সকালে দ্রুত কিছু উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশকে বিপাকে ফেলা, ‘আসলে কতো রানের টার্গেট হলে আমাদের জন্য ভালো হয় সেটা সম্ভবত একজন ব্যাটসম্যান ভালো বলতে পারতেন। এই মুহূর্তে এ বিষয়ে আমার কোনো ধারণা নেই। এমনকি আমি জানি না যে বাংলাদেশ কতোদূর গিয়ে থামতে চায়। তবে আমাদের টার্গেট হবে আগামীকাল শুরুতেই দ্রুত কিছু উইকেট তুলে নেওয়া।’
তৃতীয় দিন শেষে
বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে অধিনায়কত্বের অভিষেক ম্যাচে সেঞ্চুরি করার অনন্য নজির স্থাপন করেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তিনি ১৯৩ বল খেলে ১০ চারে অপরাজিত আছেন ১০৪ রানে। তার সঙ্গে ৭১ বলে ৫ চারে অপরাজিত আছেন মুশফিকুর রহিম। তাদের দুজনের ব্যাটে ভর করে বাংলাদেশ তৃতীয় দিনটি রাঙিয়েছে। ৩ উইকেট হারিয়ে ২১২ রান তুলে শেষ করেছে দিন। লিড নিয়েছে ২০৫ রানের।
রিয়াদ/আমিনুল