ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

করোনাভাইরাস বৈশ্বিক মানসিক রোগ

মাসুদ হাসান উজ্জ্বল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:৫৩, ১৬ জুলাই ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
করোনাভাইরাস বৈশ্বিক মানসিক রোগ

The biggest global Phycological disorder is Covid-19! আপনাদের হয়তো আমার কথাটা পছন্দ হবে না। এ কারণে আমি নিজেই মনে মনে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার অপেক্ষায় ছিলাম। কেননা এমন একটি মহামারি সম্পর্কে মন্তব্য করতে গেলে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থাকা জরুরি।

আমি গত ১৫ দিন করোনার সঙ্গে লড়াই করে এখন অনেকটা সুস্থ। ‘লড়াই’ শব্দটি প্রচলিত হয়েছে বলে আমিও ব্যবহার করলাম। তবে আমি মনে করি, ‘লড়াই’ শব্দটি ব্যবহার করে এই রোগকে এতোটা মহিমান্বিত করার কিছু নেই। 

যেকোনো অসুস্থতা থেকে মুক্ত হতে সময় লাগে, এটিও তার ব্যতিক্রম নয়। একটা রোগ থেকে মুক্ত হয়ে কোথায় ধন্য হবো, তা না করে আমি এর ভেতরেও রাজনীতি খুঁজতে শুরু করে দিয়েছি- ব্যপারটি কেমন তাই না?

আমি শুরু থেকেই বিষয়টি এতোটা জটিলভাবে দেখিনি। আমার কোভিড-১৯ পজিটিভ হওয়ার আগে নিউমোনিয়া ধরা পড়ে। আমার ফুসফুসে ৯ বছর আগে সার্জারিও হয়েছিল। বুঝুন তবে কতোটা জটিল অবস্থা! হিসাব মতে আমার তো করোনা সামলে ওঠারই কথা না! মাত্র দু’সপ্তাহে এটি সামলে ওঠার (যদিও এখনো পুরোপুরি সুস্থ নই) পেছনে উপরে আল্লাহ, নিজের মানসিক জোর আর পরিবারের নিরবচ্ছিন্ন যত্ন মূল সহায়ক হিসেবে কাজ করেছে। আমার পজিটিভ শুনে বোন-দুলাভাই দু’জনেই ব্যস্ত হয়ে পড়েন। আমার দেখাশোনার জন্য ছোট আপা খুলনা থেকে চলে এসেছিলেন। এটুকু পড়ে অনেকেই হয়তো বিস্মিত হবেন। বিশেষ করে এই সময়ে সামাজিক দূরত্বের কথাই যখন বারবার উচ্চারিত হচ্ছে। কিন্তু আমি দেখলাম, করোনায় আক্রান্ত রোগীকে এভাবে ‘অচ্ছুত’ মনে করার কোনো কারণ নেই। 

বিশ্বে প্রতিটি সংবাদমাধ্যম যে হারে প্রতিনিয়ত মৃত্যুর খবর প্রচার করে চলেছে তাতে অর্ধেক মানুষই করোনা নয়, করোনা আতঙ্কে মারা যাচ্ছেন বলে আমার বিশ্বাস।

৪-৫ মাস ধরে লকডাউনে অ্যামাজনের বেজোস ট্রিলিয়নিয়ার হয়ে গেল আর আমরা ঘরে বসে অনলাইনে কেনাকাটা করে মিলিয়নিয়ারকে বিলিয়নিয়ার আর বিলিয়নিয়ারকে ট্রিলিয়নিয়ার বানালাম। আর নিজেরা হলাম নিঃস্ব! যেকোনো পরিস্থিতিতে আমাদের শারীরিক উপস্থিতি কী হারে কমেছে ভেবে দেখুন। একটি অস্বাভাবিক জীবনযাপনকে ‘নতুন’ ‘স্বাভাবিক’ তকমা দিয়ে সেটিতে অভ্যস্ত হতে বলা হচ্ছে। They’re designing a complete virtual world and asking us to get used to with it!

কপালে মৃত্যু লেখা থাকলে এক পশলা বৃষ্টিতেও মারা যেতে পারেন। আমরা কেউই অমরত্ব নিয়ে পৃথিবীতে আসিনি। স্বাস্থ্যবিধি মেনেও জীবন এবং জীবিকাকে স্বাভাবিক রাখা যায়।

একটা স্থবির পৃথিবী যাবতীয় শোষণ এবং নিপীড়নের সম্ভাবনাকে হাজার গুণ বাড়িয়ে দেয়, যার সুফল কেবলমাত্র পুঁজিপতিরাই ভোগ করবেন! অনেক হলো আতঙ্কে স্থবির থাকা- চলুন নিজের কর্ম, স্বপ্ন এবং প্রতিবাদ সচল রাখি।

লেখক: নাট্য ও চলচ্চিত্র নির্মাতা

 

ঢাকা/তারা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়