ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

গাজীপুরে গৃহবধূকে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন

হাসমত আলী || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৫১, ২৯ আগস্ট ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
গাজীপুরে গৃহবধূকে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন

নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর : গাজীপুরে স্বামী, শ্বাশুড়ি, ভাসুর মিলে হাত-পা বেঁধে এক গৃহবধূকে নির্যাতন করে রক্তাক্ত জখম করেছে।

 

ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার দুপুরে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কাথোরা এলাকায়।

 

নির্যাতিত ওই গৃহবধূর নাম এনি আক্তার (৩৩)। তিনি কাথোরা এলাকার হাবিব উল্লাহ মাস্টারের ছেলে খায়রুল ইসলামের স্ত্রী। মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে গাজীপুরে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন পলাতক রয়েছে।

 

এনির বাবা মজিবর রহমান ৮-১০ বছর ধরে কাথোরা এলাকায় বাসবাস করে খাবার হোটেলের ব্যবসা করেন। তাদের গ্রামের বাড়ি বরিশাল জেলায়।

 

এনির বাবা মজিবর রহমান ও স্থানীয়রা জানান, প্রায় চার বছর আগে এনির সঙ্গে খায়রুল ইসলামের বিয়ে হয়। এনির পরিবার অস্বচ্ছল থাকায় ওই বিয়ে খায়রুলের পরিবারের সম্মতি ছিল না। বিয়ের পর থেকেই এনিকে তালাক দেওয়ার জন্য খায়রুলকে চাপ দিচ্ছিলেন তার মা রেহেনা বেগম ও বড় ভাই মঞ্জু। এক পর্যায়ে এনিকে তালাক দেয় খায়রুল। এর কিছু দিন পর খায়রুল সাত লাখ টাকার দেনমোহরে তাকে আবার বিয়ে করে। এ নিয়ে পারিবারিক দ্বন্দ্বে খায়রুলকে পৈতৃক সম্পত্তি থেকেও বঞ্চিত করে তার পরিবার। এক পর্যায়ে খায়রুল গাজীপুরের কালিয়াকৈর এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতে থাকে। তাদের দেড় বছর বয়সী এক কন্যাসন্তান রয়েছে।

 

এদিকে দেড় মাস আগে এনিকে ওই বাসায় রেখে খায়রুল গা-ঢাকা দেয়। এনি ও তার স্বজনরা খায়রুলকে গুম করেছে মর্মে থানায় অভিযোগ দেয় খায়রুলের পরিবার। পরে এনির পরিবার পুলিশের সহযোগিতায় খায়রুলকে সাভার পল্লী বিদ্যুৎ এলাকায় এক আত্মীয়ের (মামার) বাড়ি থেকে আটক করে। সে সময় ওই বাড়িতে খায়রুলের মা রেহেনা বেগমও অবস্থান করছিলেন। পরে স্থানীয়ভাবে মীমাংসার মাধ্যমে খায়রুলকে জেল থেকে জামিনে বের করা হয়।

 

এদিকে গত বৃহস্পতিবার স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরের উপস্থিতিতে সালিশে দেনমোহর ও খোরপোশ বাবদ ৮ লাখ ৫ হাজার টাকায় তাদের বিয়ে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত হয়। খায়রুলের পরিবার নগদ টাকার পরিবর্তে দুই কাঠা জমি এনিকে রেজিস্ট্রি করে দিতে সম্মত হয়। সোমবার জমি দেওয়ার কথা বলে এনিকে খায়রুলদের বাড়িতে নিয়ে নির্যাতন করা হয়।

 

স্বামীর পরিবারের নির্যাতনে গৃহবধূ এনি জ্ঞান হারিয়ে ফেললে মারা গেছেন ভেবে নির্যাতনকারীরা বাড়িতে তালা দিয়ে পালিয়ে যায়। যাওয়ার সময় পানি ঢেলে রক্তের দাগ মুছে দেওয়ার চেষ্টা করে। প্রতিবেশীদের মাধ্যমে খবর পেয়ে এনির বাবা-মা উঠানে রশি দিয়ে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় এনিকে উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।

 

জয়দেবপুর থানার ওসি খন্দকার রেজাউল হাসান রেজা জানান, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ দেওয়া হলে মামলা নেওয়া হবে এবং আসামিদের গ্রেপ্তার করা হবে।

 

 

রাইজিংবিডি/গাজীপুর/২৯ আগস্ট ২০১৬/হাসমত আলী/মুশফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ