ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

মাগুরার ১৩১ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য

মো. আনোয়ার হোসেন শাহীন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:৩৫, ২৮ এপ্রিল ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
মাগুরার ১৩১ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য

মো. আনোয়ার হোসেন শাহীন, মাগুরা : মাগুরার চারটি উপজেলায় ১৩১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য।

এসব বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক না থাকায় শিক্ষা ব্যবস্থায় স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। এতে সুষ্ঠু শিক্ষার পরিবেশ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, জেলার চারটি উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৫০০টি। এর মধ্যে ১৩১টি বিদ্যালয়েরই প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য। বদলি ও অবসরজনিত কারণে এসব বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য হওয়ায় সহকারী শিক্ষকদের মধ্যে একজনকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। এতে পাঠদান কার্যক্রমও ব্যাহত হচ্ছে।

জেলার মাগুরা সদর উপজেলায় ৪০, শ্রীপুরে ২৭, শালিখায় ২৫ ও মহম্মদপুরে ৩৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই।

এসব বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পদ শূন্য থাকায় দীর্ঘদিন ধরে একজন সহকারী শিক্ষক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে স্কুলের শিক্ষা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম চালাচ্ছেন। এতে একজন সহকারী প্রশাসনিক কাজে ব্যস্ত থাকায় পাঠদানের জন্য শিক্ষক পাওয়া যাচ্ছে না।

অধিকাংশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকসহ চার থেকে পাঁচজন শিক্ষক রয়েছেন। এর মধ্যে কোনো বিদ্যালয়ে যদি প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য হয়, তাহলে শিক্ষক সংকট দেখা দেয়। তার ওপর আবার ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে প্রতি মাসের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক দিন উপজেলা ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস, ব্যাংকসহ বিভিন্ন অফিসে যাতায়াত করতে হয়। এতে পাঠদান ব্যাহত হয়।

সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তুহিনুল ইসলাম, পার্শ্ববর্তী ঘোড়ানাছ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নিয়াজ মোরশেদসহ বেশ কয়েকটি বিদ্যালয়ের শিক্ষক জানান, দীর্ঘদিন ধরে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য থাকায় শিক্ষার্থীদের পাঠদান ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি প্রশাসনিক কার্যক্রমেও জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে।

সদরের ঘোড়ানাছ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নিয়াজ মোরশেদ বলেন, ‘বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য থাকায় বর্তমানে আমাকেই প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। এখানে চারজন শিক্ষককে প্রায় তিন শতাধিক ছাত্রছাত্রীর ক্লাস নিতে হয়। উপজেলা শিক্ষা অফিসসহ বিভিন্ন কার্যালয়ে কাজ থাকায় মাঝেমধ্যেই আমার পক্ষে আর ক্লাস নেওয়া সম্ভব হয় না। সুষ্ঠুভাবে শিক্ষা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনার স্বার্থে বিদ্যালয়গুলোয় জরুরি ভিত্তিতে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া প্রয়োজন।’

সদর উপজেলার পারপলিতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক দ্বীপেন্দ্রনাথ বিশ্বাস বলেন, ‘২০০৯ সাল থেকে বিদ্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছি। দীর্ঘ আট বছরেও প্রধান শিক্ষক নিয়োগ না দেওয়ায় উপজেলা ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে যাতায়াত থেকে শুরু করে বিদ্যালয়ের বাইরের সব ধরনের কাজ আমাকেই করতে হয়। এতে পাঠদানসহ স্কুলের সার্বিক কার্যক্রমের স্বাভাবিক গতি বজায় রাখতে প্রধান শিক্ষকের পদ জরুরি ভিত্তিতে পূরণ করা প্রয়োজন।’

একাধিক সহকারী শিক্ষক নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক পদের শূন্যতা পূরণের জন্য সঠিকভাবে নীতিমালা মেনে সহকারীদের পদন্নোতি দিতে হবে। না হলে শুধু প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে এ সমস্যার সমাধান হবে না।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রুহুল আমীন বলেন, ‘প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদ পূরণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে যেসব শিক্ষক পদোন্নতি পেয়ে প্রধান শিক্ষক হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছেন, তাদের নামেরও একটি তালিকা এরই মধ্যে কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। দ্রুতই প্রধান শিক্ষকের শূন্য থাকা পদগুলো পূরণ করা সম্ভব হবে।’



রাইজিংবিডি/মাগুরা/২৮ এপ্রিল ২০১৭/মো. আনোয়ার হোসেন শাহীন/এসএন

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়